শেষবেলায় বাংলাদেশকে উল্লাসে মাতালেন তাইজুল

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সরাসরি থ্রোয়ে ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দোকে আউট করলেন তাইজুল ইসলাম। এরপর বাঁহাতি স্পিনে নাইটওয়াচম্যান লাসিথ এম্বুলদেনিয়াকেও সাজঘরে পাঠালেন। ফিল্ডিং-বোলিংয়ে তার নৈপুণ্যে শেষবেলায় উল্লাসের উপলক্ষ পেল বাংলাদেশ। পিছিয়ে থেকে ফের ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ল শ্রীলঙ্কা।

বুধবার চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে লঙ্কানরা পিছিয়ে আছে ২৯ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ১৭.১ ওভারে ২ উইকেটে ৩৯ রান। দিনের শেষ বলে এম্বুলদেনিয়া বিদায় নেওয়ায় ক্রিজে অপরাজিত আছেন কেবল দলের অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। তার রান ৪৫ বলে ১৮। এর আগে ১৭০.১ ওভারে ৪৬৫ রানে অলআউট হয়ে ৬৮ রানের লিড পেয়েছিল বাংলাদেশ।

নাটকীয় কিছু না হলে শেষদিনে এই ম্যাচের ফল আসা কঠিন। ইনিংস হার এড়াতে মাত্র ২৯ রান লাগে শ্রীলঙ্কার। হাতে ৮ উইকেট থাকায় সেটা সহজেই পেরিয়ে যাওয়ার কথা তাদের। এরপর জিততে হলে সফরকারীদের দ্রুত গুটিয়ে দিতে হবে মুমিনুল হকের দলকে। যাতে নিজেরা লক্ষ্য তাড়ার জন্য যথেষ্ট সময় পেতে পারে। তবে টাইগারদের জন্য আশার খবর হলো, স্পিন ধরতে শুরু করেছে উইকেটে।

সপ্তম ওভারে করুনারত্নেকে আউট করার সুযোগ এসেছিল। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। তবে অফ স্পিনার নাঈম হাসান তা লুফে নেওয়ার আগে বল স্পর্শ করেছিল মাটি। আম্পায়ার সফট সিগন্যাল আউট দিলেও টিভি রিপ্লে দেখে তৃতীয় আম্পায়ার করুনারত্নেকে থাকার নির্দেশনা দেন। তখন তিনি ছিলেন ১২ রানে।

দ্বাদশ ওভারে প্রথম সাফল্য আসে বাংলাদেশের। ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান নন-স্ট্রাইকে থাকা ওশাদা। তিনি ক্রিজে ফেরার আগেই মিড উইকেট থেকে সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দেন তাইজুল। ওশাদার সংগ্রহ ৩৬ বলে ১৯ রান।

তাইজুলের করা ১৬তম ওভারে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান এম্বুলদেনিয়া। মাঠের আম্পায়ার তার বিপক্ষে ক্যাচ আউটের আবেদনে সাড়া দিলেও আলট্রা-এজে দেখা যায়, বল স্পর্শ করেনি ব্যাট। তবে পরের ওভারে ফিরেই বাজিমাত করেন তাইজুল। পা এগিয়ে খেলতে গিয়ে তার টার্নে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হন বাঁহাতি এম্বুলদেনিয়া। তিনি ২ রান করেন ২২ বলে।

এর আগে ৬ উইকেটে ৪৩৬ রান নিয়ে চা বিরতির পর নেমেই সেঞ্চুরিয়ান মুশফিককে হারায় বাংলাদেশ। মন্থর সেঞ্চুরিতে এক প্রান্ত আগলে পড়ে থাকা মুশফিক ধৈর্য হারান লাসিথ এম্বুলদেনিয়ার বলে। বাঁহাতি স্পিনারকে সুইপ করতে গিয়েছিলেন তিনি। লেগ স্টাম্পে পিচ করা বল টার্ন করে ভেঙে দেয় তার স্টাম্প। ২৮২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১০৫ রান করেন তিনি।

এরপর দ্রুতই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল টাইগাররা। নাঈম অবশ্য দিচ্ছিলেন দৃঢ়তার আভাস। থিতুও হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ৫৩ বল খেলে থামেন তিনিও। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে ৯ রান করা নাঈম ক্যাচ দেন ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে।

শরিফুল ইসলামকে নিয়ে পরে ৩২ বল টিকে আরও ১৫ রান যোগ করেন তাইজুল। পেসার আসিথা ফার্নান্দো একের পর এক বাউন্সার টার্গেট করছিলেন তাদের। সেই পরিকল্পনাতেই আসে সফলতা। আসিথার বাউন্সার পুল করতে গিয়ে পুরো ব্যাটে নিতে পারেননি তাইজুল। টপ এজ হয়ে ক্যাচ যায় ফাইন লেগে। ৪৫ বলে ২০ রানের ইনিংস ফেরেন তাইজুল।

স্বাগতিকদের ইনিংস অবশ্য থেমে যায় অদ্ভুতভাবে। কাসুন রাজিথার বল ঘুরিয়ে মারতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি শরিফুল। হাত ঘুরে যাওয়ায় উল্টো ব্যথায় কাতর হয়ে মাটিতে বসে পড়েন তিনি। দেখে মনে হয়েছে, তারও হাতের পেশিতে টান পড়েছে। এরপরই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান বাংলাদেশের শেষ দুই ব্যাটার। অফিসিয়াল স্কোরার জানান, শরিফুল রিটায়ার্ড আউট।

লঙ্কানদের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল কনকাশন বদলি নামা পেসার রাজিথা। ২৪.১ ওভার বল করে ৬০ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Multinational executives urge govt to ensure licensing, tax consistency

Yunus asked the executives to maintain transparency in businesses

52m ago