মুশফিকের প্রশংসায় কার্তিক
ধৈর্যের বড় পরীক্ষা দিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিকুর রহিম। একই গড়েছেন অনন্য এক কীর্তি। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক পার করেন তিনি। এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের এমন অর্জনে তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় মেতেছেন ভারতীয় ক্রিকেটার দিনেশ কার্তিক।
২০০৫ সালে যখন মুশফিক যুব দলের নিয়মিত সদস্য তখনই ডাক পান টেস্ট ক্রিকেটে। এরপর কেটে গেছে ১৭ বছর। বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০৫ রানের ইনিংসের পথে ক্রিকেটের রাজকীয় এ সংস্করণের পাঁচ হাজারি ক্লাবে যোগ দেন তিনি।
মুশফিকের এমন অর্জনে তার প্রশংসায় মেতে দ্য আইসিসি রিভিউতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কার্তিক বলেন, 'যে কোনো ব্যাটারের জন্যই টেস্টে পাঁচ হাজার রান করা একটি দুর্দান্ত অর্জন এবং সে যা অর্জন করেছে তা অসাধারণ।'
মুশফিকের খেলা তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য অনুসরণ করার মতো জানিয়ে বলেন, 'যখনই আপনি পতাকা বা মশালবাহী হন অথবা প্রথম কিছু করেন, আপনাকে সবসময় সম্মানের সাথে দেখা হয় এবং এটি অবশ্যই মুশফিকুর রহিমের ক্ষেত্রেও। বিশ্বের অনেক তরুণই তাকে অনুকরণ করার চেষ্টা করে এবং একজন খেলোয়াড় হিসাবে তাকে দেখা সত্যিই উপভোগ্য।'
নিজের অর্জনে মুশফিক গর্বিত হতে পারেন বলেই মনে করেন এ ভারতীয় ক্রিকেটার, 'সে খুব ধারাবাহিক। বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বাইরেও রান করেছে। সে দীর্ঘ সময় ধরে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তাই আমি মনে করি সে নিজেকে নিয়ে খুব গর্বিত হতে পারে।
মুশফিকের ফিটনেসেরও প্রশংসা করেন কার্তিক, 'আপনি যখন ১৭ বছর ধরে খেলেন, বিশেষ করে একজন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসাবে, এটা আপনার শরীরে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে। সে তার শরীরের ব্যাপার ভালো করেই জানে, অন্যথায় এতদিন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলাটা খুব কঠিন।'
বিশেষ করে বাংলাদেশের গরমে এভাবে চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন বলেই মনে হয় কার্তিক, 'বাংলাদেশের উত্তাপ অন্য কিছু। বাংলাদেশের সূর্য মাঝে মাঝে বেশ রূঢ় হয়ে ওঠে এবং সেই দীর্ঘ গরমের দিনে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে হতে যখন মাঝেমধ্যে সে সময় আপনি উইকেট পান না ... এটি সত্যিই, সত্যিই দীর্ঘ দিন হয়ে ওঠে। আমি নিশ্চিত সেও এমন কিছু দেখেছে এবং একজন কিপার হওয়ার পর এটি কেমন তা আমি জানি।'
বাংলাদেশের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা জানিয়ে মুশফিকের ফিটনেসের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার, 'আমার মনে আছে আমরা ২০০৭ সালে তাদের বিপক্ষে একটি টেস্ট খেলেছিলাম এবং আমার সারা শরীরে ক্র্যাম্প ছিল ... এটি আমাকে সম্পূর্ণরূপে শুষে নিয়েছিল, আমার শক্তি নষ্ট করেছিল এবং আমি আক্ষরিক অর্থেই হাসপাতালে ভর্তি হতে যাচ্ছিলাম। সুতরাং সম্পূর্ণ কৃতিত্ব মুশফিকের কারণ তিনি একটি অসাধারণ কাজ করেছেন এবং একজন উইকেটরক্ষকের জন্য এটা অনেক কঠিন কাজ।'
বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অধিনায়ক মুশফিকের বড় অবদান রয়েছে বলে মনে করেন তিনি, 'আপনি ম্যাচে যদি তার রেকর্ড দেখেন এবং অন্যান্য অধিনায়কদের সঙ্গে তুলনা করেন, আমি মনে করি না যে অন্য কারো চেয়ে আলাদা হবে, তবে বাংলাদেশের জন্য আমি মনে করি সে সত্যিই ভালো করেছে।'
'সে ৩৪টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং সাতটি জিতেছে এবং এটি এমন একটি দেশ যারা টেস্ট ক্রিকেটে কিছুটা পরে এসেছে এবং (শুরুতে) তাদের একটি টেস্ট ম্যাচ জেতা বড় একটি ব্যাপার ছিল৷ তারা টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতি করছে এবং অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকের মেয়াদে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। অনেক কৃতিত্ব তাকে দিতে হবে, যোগ করেন মুশফিক।
Comments