লিটন ঝলকের পর নাসুমের ভেল্কিতে কাবু আফগানিস্তান
শুরুতে উইকেট হারিয়ে নড়বড়ে বাংলাদেশকে দারুণ ব্যাটিংয়ে পথ দেখালেন লিটন দাস। তার ফিফটিতে দল পেল দেড়শো ছাড়ানো পুঁজি। তাতে ভর করে প্রথম ওভার থেকেই স্পিন ভেল্কিতে আফগানিস্তানের ভিত নড়িয়ে দিলেন নাসুম আহমেদ। তার একের পর এক শিকারে বিপর্যস্ত আফগানরা পরে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার প্রথম টি-টোয়েন্টি ছিল অনেকটা একপেশে। আফগানিস্তানকে ৬১ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের করা ১৫৫ রান টপকাতে গিয়ে মোহাম্মদ নবির দল থেমেছে মাত্র ৯৪ রানে।
ব্যাটিং-বোলিং দুই অর্ধে বাংলাদেশের নায়ক দুজন। ব্যাট হাতে ৪৪ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন লিটন। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নাসুম বিধ্বস্ত করে দেন সফরকারীদের।
১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারানোর সামনে ছিল আফগানিস্তান। নাসুমের বলে ক্যাচ উঠিয়ে অল্পের জন্য বাঁচেন হযরতুল্লাহ জাজাই। ওই ওভারেই পড়েছে উইকেট। স্ট্রাইক পেয়ে মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। দুই ক্যাচ দিয়েও টিকে যাওয়া জাজাই কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ।
তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই তার ইতি হয় নাসুমের হাতে। ওই ওভারে দারউইশ রাসুলিকেও তুলে নেন নাসুম। নাসুমের তৃতীয় ওভারে শিকার হন করিম জানাতও। পাওয়ার প্লেতে আফগানদের সংগ্রহ ছিল মাত্র ২০ রান, উইকেট চারটি। সবগুলোই উইকেট নাসুমের পকেটে।
চরম বিপর্যস্ত পরিস্থিতি থেকে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই ও অধিনায়ক নবি। তাদের ৩৭ রানের জুটি ভাঙ্গেন সাকিব আল হাসান। নবিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ তারকা সীমিত সংস্করণের ক্রিকেটে নেন ৪০০তম উইকেট। সাকিবের বলে ইনসাইড আউট উড়াতে গিয়ে কাভারে ধরা দেন নবি। তার পরের ওভারে নাজিবুল্লাহ জাদরান ক্যাচ দেন স্কয়ার লেগে। ৬৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তখন আর ছিল না আফগানদের। শেষ দিকেও তাদের কেউ মিরাকল ঘটাতে পারেননি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি বাংলাদেশের। অনেক প্রশ্নের মুখেও নাঈম শেখকে নামিয়ে সফলতা আনানো যায়নি। নড়বড়ে ব্যাট করে এই ওপেনার ফজল হক ফারুকির বলে এলবিডব্লিউ হন ৫ বলে ২ রান করে। অভিষিক্ত ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ইন্টেন্ট দেখিয়েছেন। ৩ চার মারলেও বেশ কয়েকটি বল কানেক্ট করতে পারেননি। রশিদ খান এসে তাকে ফেরালে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ।
৬ বলের বেশি টেকেননি সাকিবও। উইকেট পতনের মাঝে দলকে ভরসা দেন লিটন। থিতু হতে সময় নিতে হয় পরিস্থিতির দাবিতে। সুযোগ পেলেই মেলছিলেন ডানা। চাপের মাঝেও ফিফটি স্পর্শ করে ফেলেন ৩৪ বলেই। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটিতে ৩৩, আফিফ হোসেনের সঙ্গে জুটিতে আনেন ৪৬ রান। ইনিংসের তিন ওভারের বেশি থাকতেই থামতে হয় লিটনকে। শেষ দিকে জুতসই রান না এলেও দেড়শো পেরুতে সমস্যা হয়নি। যে পুঁজি পরে আফগানদের জন্য হয়ে যায় বেশ বড়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫১/৮ (মুনিম ১৭, নাঈম ২, লিটন ৬০, সাকিব ৫, মাহমুদউল্লাহ ১০, আফিফ ২৫, ইয়াসির ৮, মেহেদি , নাসুম ৩*; ফারুকি ২/২৭, মুজিব ০/২৪, রশিদ ১/১৫, নবি ০/১৯, কাইস ১/২১, ওমরজাই ২/৩১, করিম ০/৫)।
আফগানিস্তান: ১৭.৪ ওভারে ৯৪ (জাজাই ৬, গুরবাজ ০, রাসুলি ২, নাজিবউল্লাহ ২৭, করিম ৬, নবি ১৬, ওমরজাই ২০, রশিদ ১, কাইস ৮, মুজিব ৪, ফারুকি ০*; নাসুম ৪/১০, মেহেদি ০/১৭, মুস্তাফিজ ১/১৯, শরিফুল ৩/২৯, সাকিব ২/১৮)।
Comments