মাহমুদউল্লাহর এক বাউন্ডারির সিরিজ

Mahmudullah
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

কেউ যদি বলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৩ গড়ে রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ! তাকে ভুল বলা যাবে না। কিন্তু এই পরিসংখ্যান নিশ্চিতভাবেই আড়াল করে দিচ্ছে বাস্তবতা। মূলত দুই ম্যাচে অপরাজিত থাকায় তার গড়টা হয়েছে এমন। কিন্তু সিরিজজুড়ে ভূমিকা অনুযায়ী এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স ছিল চরম হতাশার।

প্রথম ম্যাচে দলের ১৮ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর ছয় নম্বরে নেমেছিলেন তিনি। ১৭ বল খেলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে এক বাউন্ডারিতে করেন ৮ রান। পুরো সিরিজে তার বাউন্ডারি ওই একটিই। পরের ম্যাচে লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে চড়ে যখন দল তিনশো ছাড়িয়ে আরও বড় ঠিকানার খুঁজে তখন পাঁচে নামানো হয় তাকে।

হাতে অঢেল উইকেট থাকায় স্লগ ওভারে তখন ছিল কেবলই দ্রুত রান আনার চাহিদা। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ ৯ বল খেলে মারতে পারেননি কোন বাউন্ডারি। করতে পারেন কেবল ৬ রান। অপরাজিত থেকে যাওয়ায় অবশ্য তার গড় মোড় নেয় ইতিবাচক দিক।

শেষ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ আবারও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এক পরিস্থিতিতে নেমেছিলেন। ২৯তম ওভারে দলের ১২৫ রানে ৪ উইকেট পড়তে ক্রিজে আসেন তিনি। কিন্তু এসেই খেলতে থাকেন একের পর এক ডট বল। রশিদ খানদের খেলেছেন ভারি শরীরে। সড়গড় না থাকায় প্রান্ত বদলের কাজটা হচ্ছিল না, রানের চাকা হয়ে যায় মন্থর।  আরেক পাশে সেট ব্যাটার লিটনের উপর তাতে বেড়ে যায় চাপ। অহেতুক স্লগ করতে গিয়ে ৮৬ রানে কাটা পড়েন লিটন। ইনিংসের বাকি পুরোটাই ক্রিজে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। খেলেছেন ৫৩ বল। কিন্তু কোন বাউন্ডারি ছাড়া করেন ২৯ রান।

আফিফ হোসেন তাকে সঙ্গে দিতে পারেননি। কিন্তু তার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলামকে ডেকে এনে রান আউটের ফাঁদে ফেলে দেন তিনি। তার সঙ্গে বোঝা পড়ার ভুলে মোস্তাফিজুর রহমানও ফেরেন রান আউটে। মাহমুদউল্লাহ ২৯ করে অপরাজিত থেকে যাওয়ায় তার গড়টা হয়ে যায় বেশ ভালো। তবে ইনিংসটি মূলত খুব একটা কাজে লাগেনি।

দলে মাহমুদউল্লাহর ভূমিকা ছয় নম্বরে। বিপর্যয়ের মধ্যে নামলে ইনিংস মেরামত করে টেনে নেওয়া এবং শেষ দিকে গিয়ে ঝড় তোলা। কিন্তু সিরিজে ৭৯ বল খেলে ২০২ ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা থাকা মাহমুদউল্লাহ মেরেছেন কেবল ১ বাউন্ডারি।

সিরিজজুড়ে তার ফিল্ডিং ছিল ভীষণ হতশ্রী।  ছেড়েছেন সহজ দুই ক্যাচ, অনেকটা সময় পেলেও বলের কাছে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট রিফ্লেক্স দেখা যায়নি তার মাঝে। গ্রাউন্ড ফিল্ডিং ছিল খুবই দুর্বল। রেগুলেশন  ফিল্ডিং মিস করেছেন একাধিকবার। বলের কাছে যেতে কিছুটা ধুঁকতে হয়েছে তাকে।

অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশের অধিনায়কও। ওয়ানডে সিরিজের পর তার নেতৃত্বে  আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে গা ঝাড়া দিতে পারেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Comments

The Daily Star  | English

Confronting Dhaka’s battery-run rickshaw dilemma

One of the more recent manifestations of informal urban expansion is the proliferation of battery-run rickshaws.

6h ago