সাদামাটা লক্ষ্যে প্রোটিয়াদের উড়ন্ত সূচনা
জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সের এই মাঠে ৪৩৮ রান করেও পার পায়নি অস্ট্রেলিয়া। সেখানে বাংলাদেশের পুঁজি তার অর্ধেকেরও কম। সাদামাটা পুঁজি নিয়ে শুরুতে দুর্দান্ত কিছু করতে পারলেই লড়াইটা অন্তত করতে পারতো টাইগাররা। তবে লক্ষ্যটা আহামরি না হলেও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ইনিংসের সূচনা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১০ ওভারে ৭২ রান করেছে স্বাগতিকরা। জিততে হলে বাকি ৪০ ওভারে করতে হবে আরও ১২৩ রান। কুইন্টন ডি কক ৫১ ও ইয়ানেমান মালান ২০ রানে ব্যাট করছেন।
ওয়ান্ডারার্সের উইকেট অবশ্য বরাবরই ব্যাটিং বান্ধব। তবে পেসাররা কিছুটা সুবিধা পেয়ে থাকেন। বাড়তি বাউন্স আদায় করে নিতে পারেন তারা। ঠিক সেটাই করে প্রোটিয়া পেসাররা। তবে টাইগার পেসাররা পারেননি তার সিকিভাগও। ফলে লক্ষ্য তাড়ায় তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না স্বাগতিকদের।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে ডি ককের বিরুদ্ধে এলবিডাব্লিউর জোরালো আবেদন করেছিলেন তাসকিন আহমেদ। আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় রিভিউ নেন। তবে বল আউটসাইড লেগে পিচ করায় উল্টো নষ্ট হয় একটি রিভিউ। এছাড়া স্বাগতিকদের তেমন কোনো অস্বস্তিতে ফেলতে পারেননি টাইগার পেসাররা।
শুরুতে কিছুটা ধীর গতিতে ব্যাট চালালেও উইকেটে সেট হওয়ার পর স্বভাবসুলভ ঢঙ্গে অবতীর্ণ হন ডি কক। চার ছক্কার ফুলঝুরিতে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হন এ ওপেনার। প্রথম ছয় বলে এক রান করা এ ব্যাটার নিজের ফিফটি তুলে নেন মাত্র ২৬ বলে। তার আগ্রাসনে প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৭২ রান করে প্রোটিয়ারা। দলীয় ফিফটি আসে ৪৪ বলে। মালান অবশ্য দেখে শুনেই ব্যাট করছেন।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে কাগিসো রাবাডার তোপে পড়ে বাংলাদেশ। যদিও টাইগার শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দেন লুঙ্গি এনগিডি। ফেরান অধিনায়ক তামিম ইকবালকে। এক্সট্রা বাউন্সের ফাঁদে ফেলে কেশভ মহারাজের ক্যাচে পরিণত করেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে।
এরপরই শুরুর হয় রাবাডার তোপ। সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও ইয়াসির আলীকে ফেলে ভেঙে দেন টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপ। সাকিব ও ইয়াসির দুইজনই তার বাড়তি বাউন্সে পরাস্ত হয়ে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে আউট হন। লিটন আউট হন আপার কাট করতে গিয়ে।
শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা মুশফিকও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ওয়েন পারনেলের বলে পড়েছেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। এরপর অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন। ৬০ রানের জুটিও গড়েন তারা। এ জুটি ভাঙেন তাবরাইজ শামসি। ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন মাহমুদউল্লাহকে। লেগ স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
এরপর শুরু হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে আফিফের লড়াই। মনে করিয়ে দেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে অবিচ্ছিন্ন সেই জুটির কথা। সেদিনের মতো করতে না পারলেও দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে সপ্তম উইকেট জুটিতে গড়েন নতুন রেকর্ড। ৮৬ রান করেন এ দুই ব্যাটার। ভাঙেন ২০০২ সালে করা খালেদ মাহমুদ ও খালেদ মাসুদের ৩৭ রানের জুটি।
আফিফকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন রাবাডা। এরপর স্কোরবোর্ডে আর ১ রান যোগ হতে ফিরে যান মিরাজও। তাকে ফিরিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফাইফার তুলে নেন রাবাডা। তাতে সাদামাটা পুঁজি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় সফরকারীদের।
বাংলাদেশের পুঁজিটা সম্মানজনক হয় আফিফের ব্যাটেই। ৭২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। নিজের ইনিংসটি সাজান ৯টি চারের সাহায্যে। মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান। ৪৯ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া ২৫ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৩৯ রানের খরচায় একাই ৫টি উইকেট তুলে নেন রাবাডা।
Comments