ফ্ল্যাট ও মন্থর উইকেটেও ৫ উইকেট চান সিরিজসেরা তাসকিন
দক্ষিণ আফ্রিকার বাউন্সি ও পেসবান্ধব উইকেটে দারুণ সফলতা পেলেন বাংলাদেশের তাসকিন আহমেদ। নজরকাড়া নৈপুণ্য দেখিয়ে তিনি জিতলেন ওয়ানডে সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। একসময় জাতীয় দল ছিটকে গেলেও হাল ছেড়ে না দিয়ে প্রত্যাবর্তনের অনবদ্য নজির স্থাপন করা এই ডানহাতি পেসার জানালেন নিজের আগামীর লক্ষ্য।
বুধবার সেঞ্চুরিয়ানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারানোর মধুর স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজ তারা ঘরে তুলেছে ২-১ ব্যবধানে। সুপারস্পোর্ট পার্কে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টাইগাররা ৯ উইকেটে বিধ্বস্ত করেছে প্রোটিয়াদের। অবিস্মরণীয় এই জয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তাসকিন। ৯ ওভারে ৩৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করে তিনি গুঁড়িয়ে দেন স্বাগতিকদের। পরে অধিনায়ক তামিম ইকবালের অপরাজিত ফিফটিতে অনায়াসে লক্ষ্যে পৌঁছায় সফরকারীরা।
ম্যাচের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উচ্ছ্বসিত তাসকিন গোপন করেননি নিজের আনন্দ, 'আমি খুবই খুশি। সেই সঙ্গে আমি খুবই গর্বিত। প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা সিরিজ জিতলাম। আমার জন্যও একটি বিশাল অর্জন। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো আমি ম্যান অব দ্য সিরিজ হলাম। খুবই গর্বিত আর খুশি।'
সিরিজে ৩ ম্যাচে ১৪ গড়ে ৮ উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন। সবগুলোই সেঞ্চুরিয়ানে। এবার তার লক্ষ্য হলো যেসব উইকেট থেকে পেসাররা তেমন সহায়তা পান না, সেখানেও ৫ উইকেট শিকার করা, 'এটা ছিল দারুণ (সেঞ্চুরিয়ানে বোলিংয়ের অভিজ্ঞতা)। ফ্ল্যাট ও মন্থর উইকেটে কীভাবে ৫ উইকেট নিতে হয়, সেটাও আমাকে শিখতে হবে। এটাই আমার সামনের লক্ষ্য।'
২০১৮ সালের পর তাসকিন চলে গিয়েছিলেন একেবারে আড়ালে। চোট, বাজে ফর্মসহ নানা কারণে পড়ে যায় তিন বছরের লম্বা বিরতি। গত বছর থেকে আবার বাংলাদেশের জার্সিতে তিন সংস্করণেই নিয়মিত হয়ে উঠেছেন তিনি। একের পর এক উপহার দিচ্ছেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। দুঃসময় পেছনে ফেলা নিয়ে তাসকিন জানান, 'গত দুই বছর ধরে আমি একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। আজও আমি একই প্রক্রিয়া ও মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। আজ আমি ভালোভাবে আমার পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পেরেছি। ভবিষ্যতেও আমি ভালো করার চেষ্টা করব।'
অধিনায়ক তামিমের কাছ থেকে প্রেরণা পাওয়ার কথাও শোনান তিনি, 'প্রতি ম্যাচেই আমার অধিনায়ক আমাকে সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আমাকে একটি সহজ ও স্পষ্ট ভূমিকা পালন করতে বলছেন। আর সেটা হলো আক্রমণাত্মক থেকে উইকেট তুলে নেওয়া। আর আমি সেটাই অনুসরণ করার চেষ্টা করছি।'
ঘরের মাঠে সাধারণত স্পিনবান্ধব উইকেটে খেলে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পছন্দের পিচ ও কন্ডিশন পেয়েছেন তাসকিন। সেসব তিনি কাজেও লাগিয়েছেন আপন দক্ষতা ও সামর্থ্য দিয়ে। তাসকিন বলেন, সিরিজজুড়ে বোলিং উপভোগ করেছেন তিনি, 'আমি অনেক উপভোগ করেছি। যখন আমরা সিরিজ খেলতে এখানে আসি, তখন থেকেই আমি লেন্থ নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছিলাম। একেবারে সহজ ও মৌলিক প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করেছি।'
Comments