প্রথম সেশনে বাংলাদেশের দাপট

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় দিনের শুরুটা দুর্দান্তভাবেই করেছে বাংলাদেশ। জুটি ভেঙে শুরুতেই জোড়া ধাক্কা দেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জ্বলে ওঠেন ইবাদত হোসেনও। তাতে প্রথম সেশনেই চার উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। বেরিয়ে গেছে তাদের লেজ।

শুক্রবার ডারবান টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। নতুন দুই ব্যাটার সাইমন হার্মার ৮ ও লিজাড উইলিয়ামস ৬ রানে উইকেটে আছেন।

মূলত খালেদের তোপে দারুণ সূচনা পায় বাংলাদেশ। অথচ একাদশে থাকারই কথা ছিল না তার। শরিফুল ইসলামের ইনজুরিতে জায়গা মিলে যায় তার। সেই খালেদই দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা এনে দেন। নতুন বল হাতে নিয়ে দিলেন জোড়া ধাক্কা।

এরপর প্রোটিয়াদের লড়াইটা চালিয়ে যান টেম্বা বাভুমা। মাথাব্যাথার কারণ হয়ে ওঠা এ ব্যাটারকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। আরেক সেট ব্যাটার কেশভ মহারাজকে ফেরান ইবাদত। তাতে নিজেদের লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে টাইগাররা। আগের দিন তাদের ৩২০ রানের মধ্যে আটকে রাখার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিলেন টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

দিনের শুরুতে খালেদকে অবশ্য সাবলীলভাবেই খেলছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার বাভুমা ও কাইল ভেরেইনা। নতুন বল নেওয়ার পরও খেলেছেন দারুণ। খালেদের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান। পঞ্চম বলে আরও একটি। তাতে লম্বা হচ্ছিল পঞ্চম উইকেট জুটিও।

তবে পরের ওভারে ফিরে এ জুটি ভাঙেন খালেদ। কাইল ভেরেইনাকে ফেলেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। তার গুড লেংথে রাখা রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে গিয়েছিলেন ভেরেইনা। ভেতরে ঢোকা বল তার রক্ষণ ফাঁকি দিয়ে লাগে প্যাডে। সঙ্গেসঙ্গেই আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। যদিও ভেরেইনা রিভিউ নিয়েছিলেন। তবে লাভ হয়নি। উল্টো একটি রিভিউ হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮১ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ২৮ রান করেন ভেরেইনা। ভাঙে ৬৫ রানের জুটি।

পরের বলে ফের আঘাত হানেন খালেদ। সদ্যই মাঠে নামা ভিয়ান মুল্ডারকে গ্যালিতে ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। তবে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। অফ স্টাম্পের বাইরে রাখা বলটি চাইলে ছেড়ে দিতে পারতেন মুল্ডার। তবে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন। বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় গ্যালিতে।

টানা দুই বলে উইকেট তুলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন খালেদ। কিন্তু হ্যাটট্রিক বলটি খুব ভালো করতে পারেননি তিনি। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে রাখায় সহজেই ছেড়ে দেন নতুন ব্যাটার কেশভ মহারাজ।

পরের ওভারে প্রোটিয়াদের আরও চাপে ফেলতে পারতো টাইগাররা। ভাগ্যটা সঙ্গে ছিল না তাসকিন আহমেদের। তার বলে প্রায় এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েছিলেন সেট ব্যাটার বাভুমা। ভেতরে ঢোকা বল ব্যাট ফাঁকি দিয়ে লাগে পেছনের পায়ে। আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। বল লেগ স্টাম্পের বাইরের অংশে লাগায় আম্পায়ার্স কলে এ যাত্রা বেচে যান প্রোটিয়াদের সীমিত ওভারের অধিনায়ক।

এরপর আরও বেশি সতর্ক হয়ে যান বাভুমা। দেখে শুনেই এগিয়ে যেতে থাকেন। মহারাজও তাকে দারুণ সঙ্গ দেন। তবে বাভুমার প্রতিরোধ ভাঙতে পারতো দলীয় ২৬৭ রানে। ইবাদত হোসেনের অফ স্টাম্পের বাইরে রাখা বল বাভুমার ব্যাট ছুঁয়ে গিয়েছিল স্লিপে। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে ক্যাচ তালুবন্দি করার চেষ্টা করলেও সফল হননি ইয়াসির আলি রাব্বি। ৭৭ রানে জীবন পান বাভুমা।

জীবন পেয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন বাভুমা। খেলছিলেনও দারুণ। কিন্তু হঠাৎই মিরাজের ঘূর্ণিতে ধরা খান এ ব্যাটার। অবশ্য বলটি বেশ নিচুও হয়েছিল। পেছনে সরে শেষ মুহূর্তে ডিফেন্স করার চেষ্টা চালান। তবে আগেই বল আঘাত হানে স্টাম্পে। সরাসরি বোল্ড হয়ে মাত্র ৭ রানের জন্য মিস করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১৯০ বলে করেন ৯৩ রান। ১২টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ভাঙে ৫৩ রানের জুটি।

মিরাজের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে আরেক সেট ব্যাটার মহারাজকে পরের ওভারের প্রথম বলেই ফেরান ইবাদত হোসেন। তার ফুল লেংথ বলে ব্যাট চালাতে একটু দেরি করে ফেলেন মহারাজ। বল আঘাত হানে স্টাম্পে। ৪০ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ১৯ রান করেন মহারাজ।

নিজের তৃতীয় উইকেটটা প্রায় পেয়েছিলেন ইবাদত। তার লিজাড উইলিয়ামসের বিপক্ষে তার এলবিডাব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নেন উইলিয়ামস। সেখানে প্রথম দফায় সব ছিল ইবাদতের পক্ষে। তবে পরে ফের যাচাই করে দেখা যায় বল পড়েছিল আউটসাইড লেগে। ফলে বেঁচে যান উইলিয়ামস।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Discrimination Students Movement

Students to launch political party by next February

Anti-Discrimination Student Movement and Jatiya Nagorik Committee will jointly lead the process

10h ago