প্রতিরোধ গড়ে প্রোটিয়াদের খানিকটা এগিয়ে রাখলেন বাভুমা
প্রথম সেশনে উইকেটবিহীন থাকার পর দ্বিতীয় সেশনে তিন উইকেট তুলে খেলায় ফিরেছিল বাংলাদেশ। শেষ সেশনে পড়ল আরও এক উইকেট। তবে প্রতিরোধ গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে খানিকটা এগিয়ে রাখলেন টেম্বা বাভুমা।
বৃহস্পতিবার ডারবানে আলোক স্বল্পতায় ১৩.১ ওভার আগেই শেষ হয়েছে দিনের খেলা। ৭৬.৫ ওভার ব্যাট করে তাতে ৪ উইকেটে ২৩৩ রান তুলেছে স্বাগতিকরা।
দুই ওপেনারের দারুণ শুরুর পর বিপদে পড়া দলকে উদ্ধার করে টানছেন বাভুমা। ১১৯ বলে ৫৩ করে অপরাজিত আছেন তিনি। ৬৪ বলে ২৭ করে তার সঙ্গী কাইল ভেরেইনা। এর আগে অধিনায়ক ডিন এলগার করে যান ৬৭ রান, সেরেল এরউইয়ার ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান।
বাংলাদেশের হয়ে দিনের সেরা পারফর্মার নিঃসন্দেহে মেহেদী হাসান মিরাজ। এক উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি দুর্দান্ত এক রান আউটে আলো কেড়েছেন তিনি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন সৈয়দ খালেদ আহমদ ও ইবাদত হোসেনও।
টস হেরে এদিন ব্যাট করতে নেমে প্রোটিয়ারা আনে সাবলীল শুরু। প্রথম সেশনে বিনা উইকেটে আসে ৯৫ রান। দ্বিতীয় সেশনে ৭০ রান যোগ করতে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। শেষ সেশনে অনেকগুলো ওভার কম হওয়ার পরও আরও ৬৮ রান যোগ করে ১ উইকেট হারিয়ে।
দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশের একমাত্র সাফল্য অভিষিক্ত রায়ান রিকেলটনকে ফেরানো। থিতু হওয়া এই বাঁহাতি ইবাদতের শর্ট বলে পুল করে ক্যাচ উঠান লং অনে। এরপর বাভুমার সঙ্গে মিলে ভেরেইনা আর বিপদে পড়তে দেননি স্বাগতিকদের।
পঞ্চম উইকেটে দুজনের জুটিতে এসে গেছে ৫৩ রান। চিন্তা বাড়ছে বাংলাদেশের। দিনের শুরুতেই মুমিনুল হকের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেন এলগার-এরউইয়া। বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিংয়ে তরতরিয়ে রান বাড়াতে থাকেন তারা।
তিন পেসারের কাছ থেকেই বেরোয় বেশ কিছু আলগা বল। সেসবের সুযোগ হাতছাড়া করেননি এলগাররা। হতাশার সেশনে একদম শেষ দিকে সুযোগ হাতছাড়াও করে বাংলাদেশ। মিরাজের বলে এরউইয়ার ক্যাচ ছেড়ে দেন কিপার লিটন দাস।
যদিও ৩২ রানে জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি। লাঞ্চের পর ফিরে আর ৯ রান যোগ করেই মিরাজের বলে থেমেছে তার দৌড়। এর আগে ১১৩ রানে দলকে প্রথম ব্রেক থ্রো পাইয়ে দেন খালেদ।
তার বাড়তি লাফানো বলে গ্লাভস লাগিয়ে কিপার লিটনের হাতে জমা পড়েন এলগার। দ্রুত ২ উইকেট পড়ার পর কিগান পিটারসেনকে নিয়ে ইনিংস মেরামতে ছিলেন বাভুমা। এই দুজনের জুটি বিপদজনক হতে গিয়ে রিভিউ না দিয়ে একবার আক্ষেপে পুড়ে বাংলাদেশ।
ইনিংসের ৪২তম ওভারে তাসকিনের নতুন স্পেলে ড্রাইভের চেষ্টায় পরাস্ত হয়েছিলেন পিটারসেন। ক্যাচ নিয়েছিলেন লিটন। জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি, নিজেদের মধ্যে আলাপের পর রিভিউ আর নেয়নি বাংলাদেশ। রিপ্লেতে দেখা যায় রিভিউ নিলে ১৮ রানেই থামতে হত পিটারসেনকে।
অবশ্য এরপর আর ১ রান যোগ করা হয়েছে তার। ৪৬তম ওভারে বাংলাদেশের আক্ষেপ কমান মিরাজ। তাসকিনের দিকে পয়েন্টের দিকে এক রান নিতে গিয়েছিলেন বাভুমা। সাড়া দেন পিটারসেন। মিরাজ ঝাঁপিয়ে বল ধরে বসে থাকা অবস্থাতেই ভারসাম্য রেখে চোখ ধাঁধানো সরাসরি থ্রোতে ভেঙ্গে দেন স্টাম্প। হতবাক হয়ে ফিরে যান পিটারসেন।
তখনই খেলায় ফিরে আসে বাংলাদেশ। রিকেলটনকে আউট করে পরে দাপটও স্পষ্ট করছিল। কিন্তু পঞ্চম উইকেটে ভেরেইনাকে নিয়ে প্রোটিয়াদের ভরসা যোগান দিচ্ছেন বাভুমা। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন দুদলের জন্যই হবে মহা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাগতিকদের পুঁজি নাগালে রাখতে শুরুতেই উইকেট চাই বাংলাদেশের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(প্রথম দিন শেষে)
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ৭৬.৫ ওভারে ২৩৩/৪ (এলগার ৬৭, এরউইয়া ৪১, পিটারসেন ১৯, বাভুমা ৫৩*, রিকলটন ১৯, ভেরেইনা ২৭*; তাসকিন ০/৫৮-০, ইবাদত ১/৫৮, খালেদ ১/৪৯, মিরাজ ১/৫৭, মুমিনুল ০/৮)
Comments