দুর্দান্ত তাসকিনে সিরিজ জয়ের সুবাস
প্রথম ম্যাচে যে ভেন্যুতে দারুণ জয়ে রাঙিয়েছিল বাংলাদেশ। সেঞ্চুরিয়নের সেই মঞ্চেই মিলছে সিরিজ জেতার আভাস। তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অল্প রানে আটকে দিয়েছে তামিম ইকবালের দল। ব্যাটসম্যানরা এবার বাকি কাজ সারতে পারলে স্মরণীয় এক অর্জন ধরা দেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে।
সুপার স্পোর্টস পার্কে বুধবার আগে ব্যাটিং বেছে ভালো শুরুর পরও তাসকিনের তোপে মাত্র ১৫৪ রানে অলআউট হয়ে গেছে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার এটিই সর্বনিম্ন পুঁজি। এদিন প্রোটিয়াদের বিধ্বস্ত করে দিতে ৩৫ রানে ৫ উইকেট নেন তাসকিন। ওয়ানডেতে তাসকিনের এটি দ্বিতীয় ৫ উইকেট। এর আগে ২০১৪ সালে অভিষেকেই ভারতের বিপক্ষে ২৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকা এত কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার কোন রকম আভাসই ছিল না শুরুতে। দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক আর ইয়ানেমান মালান শুরুটা এনেছিলেন ভালো। রান আসছিল সাবলীল গতিতে। গতিটা আরেকটু চড়া করতে গিয়ে প্রথম ভুল করেন ডি কক। লঙ অফ দেখেও মেহেদী হাসান মিরাজকে ওভার দ্য টপ খেলতে গিয়েছিলেন। ধরা দেন মাহমুদউল্লাহর হাতে।
তিনে নেমে কাইল ভেরেইনা থিতু হওয়ার দিকে ছিলেন। আরেক প্রান্তে একদম সাবলীল খেলতে থাকা মালানের সঙ্গে তার জুটি ছিল সম্ভাব্য ছবি। কিন্তু এই ব্যাটার ভুল করেন তাসকিনের বলে। তাসিকনকে পুল করে বাউন্ডারি মারার পর অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল আয়েশি ঢঙে টেনে আনেন স্টাম্পে।
দারুণ ছন্দে থাকা তাসকিন খানিক পর বড় শিকার ধরেন। থিতু থাকা মালান তার বাড়তি বাউন্সের বল খেলতে পারেননি। লাফিয়ে ক্যাচ গ্লাভসে জমান মুশফিকুর রহিম।
ইনিংস মেরামত করতে পারেননি টেম্বা বাভুমা। সাকিবের আর্ম বল বুঝতে না পেরে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে নিতে পারেননি। এলবিডব্লিউতে শেষ হয় তার দৌড়। শরিফুলের আচমকা লাফানো বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন বিপদজনক রাসি ফন ডার ডাসেন।
৮৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়া প্রোটিয়াদের বাঁচাতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। ২৯ বলে তার ২০ রানের ইনিংস শেষ হয়েছে ওই তাসকিনের বলে। ডেভিড মিলার ছিলেন একমাত্র চিন্তার কারণ। তাসকিনের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। দুই বল পর কাগিসো রাবাদাকেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে পঞ্চম শিকার ধরেন তাসকিন।
বিনা উইকেটে ৪৬ থেকে ৮ উইকেটে ১২৬ রানে পরিণত হয় স্বাগতিকদের ইনিংস। কেশব মহারাজ পরে কিছু রান করে দলকে দেড়শো ছাড়িয়ে নেন। তিনি রান আউট হলে ১৩ ওভার আগেই শেষ হয় তাদের ইনিংস। উইকেটে কিছু বল আচমকা লাফাচ্ছে, কিন্তু এসব বিচারে নিয়েও ১৫৫ রানের লক্ষ্য একদম নাগালের মধ্যে। ব্যাটসম্যানরা বড় কোন ভুল না করলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের মাটিতে সিরিজ হারানোর স্বাদ নিতে পারবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩৭ ওভারে ১৫৪ (মালান ৩৯, ডি কক ১২, ভেরেইনা ৯, বাভুমা ২, ডাসেন ৪, মিলার ১৬ , প্রিটোরিয়াস ২০, মহারাজ ২৮ , রাবাদা ৪, এনগিদি ০, শামসি ৩* ; শরিফুল ১/৩৭ , মোস্তাফিজ ০/২৩ , মিরাজ ১/২৭, তাসকিন ৫/৩৫, সাকিব ২/২৪ )
Comments