সাকিব ৫১, বাকি সবাই মিলে ৪৬
প্রথম সেশনেই বাংলাদেশের ইনিংস লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসাররা। দ্বিতীয় সেশনের আধঘণ্টা পেরুতে না পেরুতেই বাকি আনুষ্ঠানিকতাও সারা। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে কোনরকমে একশো পেরিয়েই থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস। অল্প পুঁজির মাঝেই এলোপাথাড়ি ব্যাট চালিয়ে ফিফটি পেয়ে যান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ক্যারবিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে নেমে খাবি খেয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। কেবল ৩২.৫ ওভার টিকে সফরকারীরা গুটিয়ে গেছে মাত্র ১০৩ রানে। এরমধ্যেই সর্বোচ্চ ৫১ রান করেছেন সাকিব। তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে ২৯ রান। দুই অঙ্কে যেতে পেরেছেন আর একজনই। লিটন দাস করেছেন ১২ রান। বাকিরা সবাই আউট হয়েছে এক অঙ্কে। ০ রানে আউট হয়েছেন ছয় ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দিতে ২১ রানে ২ উইকেট নেন কেমার রোচ। জেডন সিলস ও আলজেরি জোসেফ ৩৩ রান করে দিয়ে নেন সমান ৩টি করে উইকেট। মাত্র ১০ রান খরচায় ২ উইকেট নেন কাইল মায়ার্স।
টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে রোচের বলে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইক পেয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মাহমুদুল হাসান জয়। ছোট্ট ক্যারিয়ারে আরেকটি শূন্য যোগ হয় তার খাতায়। এক ওভার বিরাম দিয়ে তৃতীয় ওভারে আরেক পতন। এবারও হন্তারক রোচ। তার স্যুয়িং করে ভেতরে ঢোকা বল বুঝতেই পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। নিজের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করে ৫ বলে ০ রান করে হন বোল্ড।
এই সিরিজের আগে নাটকীয়ভাবে অধিনায়কত্ব থেকে বিদায় নেওয়া মুমিনুল হক এবারও ব্যর্থ। নেতৃত্বের ভার সরিয়েও ফিরতে পারেননি ছন্দে। সিডন সিলসের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন ৬ বলে ০ রান করে।
১৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর এক পাশে টিকে থাকা তামিম ইকবাল কিছুটা আশা দিচ্ছিলেন। লিটন দাসের সঙ্গে গড়েন প্রতিরোধ। কিছু ভালো শটের বাহার দেখা যায় তার ব্যাটে। পেরিয়ে যান টেস্টে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক। এরপরই শেষ তিনি। প্রথম ঘণ্টার পর আলজেরি জোসেফের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল ফ্লিক করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
তামিম ফেরেন ৪৩ বলে ২৯ রান করে। তাতে ভাঙ্গে ২৫ রানের জুটি। পরের ওভারে বিদায় লিটনেরও। ছন্দে থাকা এই ব্যাটার কাইল মেয়ার্সের মুভমেন্টে হন কাবু। কিছুটা এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন কিপারের গ্লাভসে। তিন বল পর কিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। তিনিও রানের খাতা খুলতে পারেননি। ৪৫ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে প্রথম সেশনের বাকি সময়টা পার করেন সাকিব। তবে পুরোটা সময়ই অস্থিরতায় ভুগতে দেখা যায় তাকে। রান আউটের হাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি আকাশে উড়িয়ে ফাঁকা জায়গায় পড়েও রক্ষা হয় তার। ঝুঁকির মধ্যেই মিরাজের সঙ্গে ইনিংস সেরা ৩২ রানের জুটি এসে যায় তার। লাঞ্চ পর্যন্ত উইকেট পতন আটকে রেখেছিলেন তারা।
লাঞ্চ থেকে ফিরেই কাটা মেহেদী হাসান মিরাজ। জেডন সিলসের লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ দেন জশুয়া ডি সিলভার গ্লাভসে। মোস্তাফিজুর রহমান টিকেছেন ৪ বল। সিলসিই তাকে ক্যাচ বানান ওই জশুয়ার গ্লাভসে।
টেল এন্ডার ক্রিজে আসতে দেখে দ্রুত রান আনা ছাড়া আর উপায় ছিল না তার হাতে। এলোপাথাড়ি মেরে নিজে পেরিয়ে যান ফিফটি, দল পেরিয়ে যায় শতরান। আলজেরি জোসেফের বল ছক্কায় উড়াতে ধরা দেন বাউন্ডারি লাইনে। সাকিব থামেন ৬৭ বলে ৫১ করে থামেন বাংলাদেশ কাপ্তান।ওই ওভারেই খালেদ আহমেদকে আরেকটি শূন্যের দেখা পাইয়ে বাংলাদেশের ইনিংস মুড়ে দেন জোসেফ।
Comments