ক্রিকেটারদের ফেরীতে আটলান্টিক পারি দেওয়ার কারণ জানাল বিসিবি
সেন্ট লুসিয়া থেকে মার্টিনিক হয়ে ডমিনিকা। যাত্রা পথে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। ক্রুজ শিপে আটলান্টিক মহাসাগরে উত্তাল ঢেউয়ের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। চাইলেই কি বিকল্প ব্যবস্থা করা যেত না? এ নিয়ে অনেক প্রশ্ন ক্রিকেট ভক্তদের মনে। শেষপর্যন্ত কেন ফেরীতে পারি দিল ক্রিকেটাররা তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
ডমিনিকায় প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নামার আগের দিন সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার সমুদ্র ভ্রমণ করে বাংলাদেশ। যাত্রাপথে 'সি সিকনেস' পেয়ে বসে শরিফুল ইসলাম ও নুরুল হাসান সোহান সহ কয়েকজন ক্রিকেটারের। তবে সে ধকল কাটিয়ে সুস্থ হয়েই মাঠে নামে টাইগাররা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে সমুদ্রযাত্রার কারণ জানতে চাইলে সুজন বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিষয়টা যেভাবে এসেছে আসলে ওরকম ছিল না। আমাদের সাথে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড যোগাযোগ করে আমরা কিন্তু সাথে সাথেই আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছিলাম। আমাদের দলের এই ধরনের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেই। এটা আমরা জানিয়েছিলাম। পরবর্তীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড জানায়- বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে, বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিমান চলাচল সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে, খুব ছোট ছোট বিমান এখানে যাতায়াত করে।'
'একইসাথে আমাদের জানাল তারা ফেরী সার্ভিসে ব্যবস্থা করছে যা ছোট ক্রুজ শিপের মত। এটা নিয়মিত চলাচল করে এবং বাংলাদেশ দল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল, আইসিসির অফিসিয়াল, টিভি ক্রু ও ধারাভাষ্যকাররা একইসাথে যাবেন। এই বিষয় নিশ্চিত করার পর আমাদেরও আলোচনা থামিয়ে দিতে হয়। কারণ দুই দল একইসঙ্গে ট্রাভেল করছে। তখন বিষয়টা মেনে নিতে হয়। যখন আমাদের দল কোনো দেশে যাবে, যাবতীয় সব দায়িত্ব ঐ বোর্ডেরই। যেমন কোনো বিদেশি দল আসলে আমাদের ওপর নির্ভর করতে হয়, যোগ করেন প্রধান নির্বাহী।
ডমিনিকায় আরও একদিন আগেই যাওয়ার কথা ছিল বলে জানান সুজন, 'ফেরী যাত্রাও আবহাওয়ার অবস্থা দেখে একদিন পিছিয়েছে। এ ধরনের ভ্রমণে কিছু মোশন সিকনেস হয়। এটার ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে, কী কী গাইডলাইন মানতে হবে আগে বলা হয়েছে। এটা যে একদম অস্বাভাবিক কিছু তা কিন্তু না। সমুদ্রে নড়াচড়ার সময় এসব সমস্যা হয়। শুধু বাংলাদেশের দলের খেলোয়াড়রাই অসুস্থ হয়েছেন তা না। বাজে আবহাওয়ার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দেরও একইরকম অবস্থা হয়েছে। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের এই অভিজ্ঞতা নেই তাই তাদের প্রতিক্রিয়া বেশি ছিল, এটাই স্বাভাবিক।'
তবে বিষয়টিকে এতো গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করেন এই বিসিবি কর্মকর্তা, 'এটা পুরোপুরি স্বাগতিক বোর্ডের বিষয়। বিষয়টা এত সিরিয়াসলি না দেখে... বোর্ডের সাথে বোর্ডের একটা যোগাযোগ থাকে। এটাকেই গুরুত্ব দেই। অবশ্যই আমাদের দেশ হলে ভিন্ন ব্যাপার হত। আমরা সফরকারী দলকে আগে প্রাধান্য দিতাম। ওদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের ভেন্যুগুলো এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে। ওদেরও কিছু লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ থাকে।'
'করোনা পরিস্থিতির পর এই পরিস্থিতি ওদের জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং হয়েছে। এসব কারণেই হয়ত এমন হচ্ছে। আমরা অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলব এবং আমাদের কনসার্ন জানাব, যেন ভবিষ্যতে এমন না হয়। আরেকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে- ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সাথে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বজায় রেখেই আমাদের ফিউচার ট্যুর প্ল্যান বা এ দলের প্ল্যান করে থাকি। এক্ষেত্রে বোর্ড টু বোর্ড সুসম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটা বিষয় হল আর সাথে সাথে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম, এ বিষয়টা ঠিক হবে না বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, যোগ করেন সুজন।
Comments