'ফুটবল সংস্কৃতি বলতে এখানে কিছু নেই'

১৪ বছর পর বাংলাদেশে ফিরে এসে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের দায়িত্ব নিয়েছেন আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি। এর আগে বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রধান কোচ হিসেবে স্বল্পমেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার অধীনে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা ২০০৫ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্সআপ হয়। ৫৯ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন বাংলাদেশের ফুটবল এবং এখানকার সামাজিক-সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তার মতামত তুলে ধরেছেন। দ্য ডেইলি স্টারের সাব্বির হোসেনের সঙ্গে ক্রুসিয়ানির বিশেষ সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো নিচে:

দ্য ডেইলি স্টার: এখানকার ফুটবলের চিত্র কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে?

আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি: ২০০৫ সালে যখন আমি প্রথম এখানে আসি, তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ভূ-রাজনৈতিক ইতিহাস ছাড়া এদেশ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। এখানকার ফুটবল সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। সাইফকে কোচিং করানোর জন্য এখানে ফিরে আমি পুরো বদলে যাওয়া ঢাকা দেখতে পেয়েছি। অনেক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি দেখতে পেয়েছি, বিশেষ করে, অবকাঠামোতে।

স্টার: বাংলাদেশে বিরাজমান ফুটবল সংস্কৃতি নিয়ে আপনার ধারণা কী?

ক্রুসিয়ানি: সত্যি বলতে কী, ফুটবল সংস্কৃতি বলতে এখানে কিছু নেই। কোনো বিষয় একটি দেশ বা সমাজের সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত মানে হলো একটি বৃহত্তর স্কেলে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমটির অনুশীলন ও বিকাশ। অংশগ্রহণকারীরা অল্প বয়স থেকে এবং ওই অঞ্চলের প্রতিটি কোণ থেকে জড়িত থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আমি এখানে সেরকম কিছু ঘটতে দেখছি না। ফুটবলের জন্য প্রচুর আবেগ ও উত্তেজনা রয়েছে। তবে এখানে ভক্তদের আবেগ শুধু আন্তর্জাতিক ফুটবলের জন্য, ঘরোয়া পর্যায়ের জন্য নয়।

স্টার: ফুটবল অঙ্গনের বাইরে এখানকার সাংস্কৃতিক দিকগুলো আপনি কীভাবে অনুভব করেছেন?

ক্রুসিয়ানি: আমি আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তেমন খবর রাখি না। কিন্তু আমি জানি, এখানে সঙ্গীতশিল্পী, লেখক, কবি, চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের নিয়ে একটি মহান সাংস্কৃতিক পরিবেশ রয়েছে। কিন্তু ফুটবলই আমাকে বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত রাখে এবং এটা আমাকে এখানকার অন্যান্য ক্ষেত্র এবং কার্যক্রম নিয়ে আরও জ্ঞান অর্জন ও সেগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছে।

স্টার: এখানকার কোনো স্মরণীয় স্মৃতি আপনি ভাগাভাগি করতে চান?

ক্রুসিয়ানি: আমি সব সময় বাংলাদেশে কাটানো সময়ের সেরা স্মৃতিগুলো যত্ন করে রাখি। এখানে থাকাটা আমি অনেক উপভোগ করছি। সর্বোপরি, মানুষেরা সব সময় আমাকে উদারতা ও বন্ধুত্ব প্রদর্শন করেছে। এখানকার মানুষই আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান।

স্টার: আপনি কি নানা পদের খাবারের স্বাদ নেওয়ার এবং আকর্ষণীয় জায়গাগুলো ঘুরে দেখার সুযোগ পেয়েছেন?

ক্রুসিয়ানি: আমি স্থানীয় সমস্ত খাবার পছন্দ করি এবং সেগুলো পুরোপুরি উপভোগ করি। এমনকি মসলাযুক্ত খাবারও পছন্দ করি। যদিও এখন আমি সেসব খাই না। কারণ, আমাকে নিজের শরীরের যত্ন নিতে হয়। এছাড়া, আমি সাধারণত টেলিভিশনে স্থানীয় সঙ্গীত শুনি এবং খেয়াল করি, সেগুলোর তালে তালে দুলছি। গোপালগঞ্জে কয়েক দিন আগে আমি খুব আবেগঘন একটি মুহূর্ত কাটিয়েছি। সাবেক খেলোয়াড় ও বাফুফের (বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন) বর্তমান কর্মকর্তা ইলিয়াস আমাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৈতৃক বাড়ি দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং তার সম্পর্কে সবকিছু বর্ণনা করেছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Barishal University VC, pro-VC, treasurer removed

RU Prof Mohammad Toufiq Alam appointed interim VC

1h ago