জেনে নিন আইফোন চার্জের সঠিক নিয়ম

ছবি: সংগৃহীত

অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করে টাকা জমিয়ে কেনা কিংবা বহু আবদারে উপহার পাওয়া শখের আইফোন বিগড়ে গেলে কার না মাথা বিগড়াবে? আর এই বিগড়ে যাওয়া পর্বের অন্যতম অংশ হচ্ছে ব্যাটারিতে সমস্যা দেখা দেওয়া। আসলে বক্স থেকে বের করার পর আইফোনের ব্যাটারি ভালোই থাকে। কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পর এতে নানা ঝামেলা দেখা দিতে পারে। মূল কারণটা হচ্ছে সঠিক নিয়মে ফোনে চার্জ দিতে না পারা।

চলুন আইফোন চার্জ দেওয়ার কিছু নিয়ম-নীতি জেনে নেওয়া যাক। এতে ব্যাটারি ও ফোন ২টাই দীর্ঘদিন ভালো থাকবে।

সঠিক চার্জার বাছাই

আইফোনের জন্য কোন চার্জার ভালো, তারযুক্ত নাকি তারবিহীন? ২টারই যেহেতু আলাদা সুবিধা আছে, এমন দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়াটা স্বাভাবিক। তারযুক্ত চার্জার দিয়ে চার্জ দিলে অনেক তাড়াতাড়ি চার্জ দেওয়া যাবে, এ কথা সত্য। তবে সবদিক বিবেচনা করলে তারবিহীন বা ওয়্যারলেস চার্জারের সুবিধাটা বেশি। আজকাল এ চার্জারের গতিও আগের চেয়ে বেড়েছে। তাই আইফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও মধুর করতে তারবিহীন চার্জারই ভালো পছন্দ। শোবার ঘরে বা অফিসের টেবিলে শোপিসের মতো রেখে দেওয়া যাবে এ চার্জার, কোনো ধরনের তার পেঁচিয়ে যাবার ঝক্কি নেই। আকৃতিগত সুবিধার জন্য ফোন ছাড়া অন্যান্য অ্যাপল ডিভাইস যেমন এয়ারপড বা স্মার্ট ওয়াচ চার্জে দেওয়ার জন্যও এ চার্জার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এত ভালো দিকের মধ্যে মন্দটা হলো, ওয়্যারলেস চার্জারে অনেক বেশি তাপ নির্গত হয়। এই দিকটা সাবধানতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

চার্জারের বিষয়ে আরেকটা কথা মনে রাখা জরুরি। খুব বিপদে না পড়লে আইফোনের ক্ষেত্রে ফোনের সঙ্গে পাওয়া চার্জার ব্যবহার করাই শ্রেয়। অন্য কোনো ফোনের চার্জার ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে দরকার পড়লে আইপ্যাডের চার্জার ব্যবহার করা যায়। যদি তা খাপে খাপে মেলে তাহলে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত গতিতে চার্জ হবে।

ফোন যেন গরম না হয়

এই ঝুঁকিটা বেশিরভাগ সময় ওয়্যারলেস চার্জার বা ফাস্ট চার্জিংয়ের ক্ষেত্রে হয়। এমনিতে আইফোনের ফাস্ট চার্জিংয়ে ভয় নেই, যদি তাতে ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা থেকে থাকে। আইফোন ৮ থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রতিটি সংস্করণেই এই সুবিধা রয়েছে। তবে ফাস্ট চার্জিংয়ের সময় খেয়াল রাখতে হবে, কোনোভাবেই যাতে ফোনের তাপমাত্রা বেড়ে না যায়। সেজন্য সুরক্ষাকারী কাভারটা চার্জ দেওয়ার সময় খুলে রাখা ভালো। এতে করে বাড়তি তাপ আটকা পড়বে না।

রাতভর চার্জিং নয়

স্মার্টফোন আমাদের জীবনে নিয়মিত হবার পর থেকে আরেকটা অভ্যাসও যেন অলিখিত নিয়মের মধ্যে পড়ে গেছে। আর তা হচ্ছে রাতে ঘুমানোর আগে ফোন চার্জে দেওয়া, যাতে সকালে উঠে ফুল চার্জ পাওয়া যায়। অভ্যাসটা আপাতদৃষ্টিতে যত বুদ্ধিমানের মতো মনে হোক না কেন, আদতে বেশ বোকার মতো কাজ। অন্তত এখনকার সময়ে তো বটেই। আগে ফোনগুলো চার্জ নিতে অনেক বেশি সময় লাগত বলে এই বুদ্ধি কার্যকর ছিল। কিন্তু এখনকার ফোনগুলো পুরোপুরি চার্জ হতে খুব একটা সময়ের প্রয়োজন হয় না। তাই রাতের প্রথমভাগেই ফোন চার্জ হয়ে যাওয়ার পরও প্লাগ করা অবস্থায় সারারাত থাকে।

আইফোনে ব্যবহার করা হয় লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। অ্যাপল কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, তাদের ফোন 'চার্জ হয় দ্রুত, টেকে দীর্ঘক্ষণ'। তাই প্রতিদিন শূন্য থেকে একশোর যাত্রাটা আইফোনের ব্যাটারির জন্য মুশকিল। অন্য সব ফোনের মতো আইফোনের ব্যাটারিও ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ চার্জ দেওয়া থাকলে চলে, শতভাগ হওয়াটা জরুরি নয়। প্রতিদিন চার্জ শূন্যতে পৌঁছলে ব্যাটারি ক্ষয় হওয়া থামানো যাবে না। বরং মাসে একবার এমনটা করা হলে ব্যাটারি ঠিকঠাক থাকবে।

অব্যবহৃত ফোনের ক্ষেত্রে

এমন যদি হয় যে বেশ কিছুদিনের জন্য ভ্রমণে যাচ্ছেন বা ফোন থেকে বিরতি নিতে চাচ্ছেন, সেক্ষেত্রে ড্রয়ারবন্দী করে রাখার আগে ফোনের ব্যাটারির চার্জ ৫০ শতাংশের আশেপাশে আছে কি না দেখে নিন। ফোন নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকলে অনেক ধীরে ধীরে চার্জ ক্ষয় হবে। সে হিসেবে ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগবে চার্জ শেষ হতে।

সাবধানতার সঙ্গে চার্জিংয়ের মাধ্যমে ব্যাটারির সুস্থতা নিশ্চিত করে আপনার আইফোন ব্যবহার সুখকর হোক।

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

9h ago