এশিয়া কাপ ২০২৩

পেসারদের নৈপুণ্যে ভারতকে ২৬৬ রানে অলআউট করল পাকিস্তান

ছবি: এএফপি

ইশান কিশান ও হার্দিক পান্ডিয়ার বড় জুটির আগে-পরে পাকিস্তানের পেসাররা দেখালেন নিজেদের সামর্থ্য। সেখানে নেতৃত্ব দিলেন বাঁহাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন দুই ডানহাতি পেসার হারিস রউফ ও নাসিম শাহ। তাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভারত অলআউট হলো ২৬৬ রানে।

শনিবার পাল্লেকেলেতে এশিয়া কাপের বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৭ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে গেছে ভারত। তবে ইশান ও হার্দিকের হাফসেঞ্চুরিতে পাকিস্তানকে পেয়েছে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য।

বৃষ্টির কারণে দুবার বন্ধ হওয়া ভারতের ইনিংসে পাঁচে নেমে ইশান খেলেন ৮২ রানের ইনিংস। ৮১ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৯ চার ও ২ ছক্কা। হার্দিক ছয়ে নেমে করেন ৯০ বলে ৮৭ রান। তার ব্যাট থেকে আসে ৭ চার ও ১ ছক্কা। এই দুজন ছাড়া ভারতের আর কোনো ব্যাটার ২০ রান পর্যন্তও যেতে পারেননি। প্রথম ৪ উইকেট তারা হারায় ৬৬ রানে। আর বাকি ৬ উইকেট খোয়ায় শেষ ৬২ রানে। ফলে এক পর্যায়ে তিনশ রানের সম্ভাবনা জাগালেও তা দূরের পথই থেকে যায় ভারতের।

ছবি: এএফপি

অসমান বাউন্স ও গতির উইকেটকে ভালোমতো কাজে লাগান পাকিস্তানের পেসাররা। শাহিন ১০ ওভারে ২ মেডেনসহ ৪ উইকেট নেন ৩৫ রানে। ৮.৫ ওভারে ৩ উইকেট পেতে নাসিমের খরচা ৩৬ রান। রউফও শিকার করেন ৩ উইকেট। তবে কিছুটা খরুচে ছিলেন তিনি। ৯ ওভারে দেন ৫৮ রান। তিন স্পিনারও ব্যবহার করেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। তবে শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজ ও আগা সালমানের কেউই উইকেট পাননি।  

বৃষ্টির কারণে ভারতের ইনিংসের ৪.২ ওভারের পর প্রথম দফায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। আধা ঘণ্টা পর আবার তা চালু হলে তোপ দাগেন শাহিন। ওই ওভারেরই শেষ বলে তিনি বোল্ড করে দেন রোহিত শর্মাকে। সামান্য ভেতরে ঢোকা ফুল লেংথের অসাধারণ ডেলিভারিতে স্টাম্প হারান ভারতীয় দলনেতা। ব্যাটে বল লাগানোর কোনো উপায়ই যেন খুঁজে পাননি তিনি! ২২ বলে ২ চারে তার রান ১১।

১৫ রানে প্রথম উইকেট হারানো ভারতের ইনিংসে শাহিন আবার ধাক্কা দেন সপ্তম ওভারে। এবারে তার শিকার হন বিরাট কোহলি, রোহিতের আউটের পর যার দিকে তাকিয়ে ছিল দলটি। পিচে পড়ার পর কিছুটা থেমে আসা বল স্টাম্পে টেনে আউট হন কোহলি। ৭ বলে ১ চারে ঠিক ৪ রানই আসে তার ব্যাট থেকে। এতে ২৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে পাকিস্তানের উল্লাস আরও জোরালো করেন রউফ। পাল্টা আক্রমণের আভাস দিচ্ছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। মারমুখী ব্যাটিংয়ে রান আনছিলেন দ্রুত। তাকে সাজঘরের পথ দেখান রউফ। শর্ট ডেলিভারি হাঁকাতে গিয়ে মিডউইকেটে দাঁড়ানো ফখর জামানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন শ্রেয়াস। ৯ বলে ২ চারে তিনি করেন ১৪ রান। এতে থামে শুবমান গিলের সঙ্গে তার জুটি গড়ার প্রচেষ্টা।

ওপেনিংয়ে নামা গিল ধুঁকছিলেন। কখনোই সাবলীল মনে হয়নি তাকে, যদিও অনেকটা সময় একপ্রান্ত আগলে ধরে রেখেছিলেন তিনি। তার স্বভাববিরুদ্ধ ধীরগতির ইনিংসের ইতি টানেন রউফ। কোহলির মতো তিনিও ইনসাইড এজে বোল্ড হন। ৩২ বলে ১ চারে মাত্র ১০ রান করেন গিল।

পঞ্চদশ ওভারের মধ্যে ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম চার ব্যাটারই সাজঘরে। এমন অবস্থায় প্রতিরোধ গড়ার বিকল্প ছিল না ভারতের। ইশান ও হার্দিক সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে সফলভাবে সম্পন্ন করেন। শুধু সেটাই নয়। চাপের মুখে থাকলেও ওভারপ্রতি রান তোলার গড় পাঁচের আশেপাশেই রাখেন দুজনে। পরে আক্রমণাত্মক হয়ে তা আরও বাড়িয়ে নেন। মূলত পাকিস্তানের পেসাররা বোলিং থেকে সরে যাওয়ার পর স্পিনারদের ওপর চড়াও হন তারা।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে ওঠে ১৪১ বলে ১৩৮ রান। আক্রমণে ফিরে এই জুটি ভাঙেন রউফ। বল যথেষ্ট শর্ট না হলেও পুল করার চেষ্টায় আকাশে তুলে দেন ইশান। মিড অনে সহজ ক্যাচ নেন বাবর। এরপর রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে জুটি গড়ার প্রয়াস দেখান হার্দিক। কিন্তু শাহিন ৪৪তম ওভারে আক্রমণে ফিরে ফের দাগেন তোপ।

প্রথম বলেই স্লোয়ারে পরাস্ত হন হার্দিক। শেষ বলে থামতে হয় জাদেজাকে। ২২ বলে ১ চারে ১৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। লেংথ ডেলিভারিতে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান গ্লাভসবন্দি হন তিনি। এই ব্রেক থ্রু কাজে লাগিয়ে নাসিম জ্বলে ওঠেন। তিনি একে একে সাজঘরে পাঠান শার্দুল ঠাকুর, কুলদিপ যাদব ও জাসপ্রিত বুমরাহকে। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়া বুমরাহ ৩ চারে ১৪ বলে করেন ১৬ রান।

Comments

The Daily Star  | English

Govt divides tax authority in IMF-backed reform

An ordinance published last night disbands NBR and creates two new divisions

1h ago