Skip to main content
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩  //  শনিবার
E-paper English
T
আজকের সংবাদ
খেজুরের কাঁচা রস ছাড়াও যেভাবে আক্রান্ত হতে পারেন নিপাহ ভাইরাসে নয়াপল্টনে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শুরু ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে গণতন্ত্র মঞ্চের পদযাত্রা-গণসংযোগ বুড়িমারী স্থলবন্দর: আশ্বাসে কাজে ফিরলেন শ্রমিকরা প্রতি ৩ ক্যানসার রোগীর ২ জন মারা যান বিনা চিকিৎসায় ফেসবুক ফলোয়ারদের প্রতি যত্নশীল হোন ‘ছোঁ মেরে ছিনতাই করতেন তারা’ সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারী বৃদ্ধিতে শীর্ষ ৩ দেশের একটি বাংলাদেশ সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে সব কটেজ-তাঁবু সরানোর নির্দেশ খুলনায় সমাবেশে যাওয়ার পথে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে মারধরের অভিযোগ গুগল, মাইক্রোসফট, আমাজনসহ প্রযুক্তি খাতে কার কত কর্মী ছাঁটাই নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা জানুয়ারিতে ৫৯৩ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৮৫ মায়ের মুখের ভাষা  খুলনায় আ. লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে উৎকণ্ঠা
The Daily Star Bangla
সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • E-paper
  • English
আজকের সংবাদ
খেজুরের কাঁচা রস ছাড়াও যেভাবে আক্রান্ত হতে পারেন নিপাহ ভাইরাসে নয়াপল্টনে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শুরু ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে গণতন্ত্র মঞ্চের পদযাত্রা-গণসংযোগ বুড়িমারী স্থলবন্দর: আশ্বাসে কাজে ফিরলেন শ্রমিকরা প্রতি ৩ ক্যানসার রোগীর ২ জন মারা যান বিনা চিকিৎসায় ফেসবুক ফলোয়ারদের প্রতি যত্নশীল হোন ‘ছোঁ মেরে ছিনতাই করতেন তারা’ সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারী বৃদ্ধিতে শীর্ষ ৩ দেশের একটি বাংলাদেশ সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে সব কটেজ-তাঁবু সরানোর নির্দেশ খুলনায় সমাবেশে যাওয়ার পথে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে মারধরের অভিযোগ গুগল, মাইক্রোসফট, আমাজনসহ প্রযুক্তি খাতে কার কত কর্মী ছাঁটাই নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা জানুয়ারিতে ৫৯৩ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৮৫ মায়ের মুখের ভাষা  খুলনায় আ. লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে উৎকণ্ঠা
The Daily Star Bangla
শনিবার, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩ | সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • হোম
  • বাংলাদেশ
    • ঢাকা
    • সারাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • স্বাস্থ্য
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • স্টার্টআপ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • শিক্ষা
  • প্রযুক্তি
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • অটোমোবাইল
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা
English T
  • হোম
  • বাংলাদেশ
    • ঢাকা
    • সারাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • স্বাস্থ্য
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • স্টার্টআপ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • শিক্ষা
  • প্রযুক্তি
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • অটোমোবাইল
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা

  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
মতামত

এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কাজ কী হবে?

আমীন আল রশীদ
সোমবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২২ ০৮:৪৯ অপরাহ্ন

গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াতে গেলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের উপস্থিতিতে গণশুনানি গ্রহণ করে, যুক্তিতর্ক এবং বাস্তবতার আলোকে সিদ্ধান্ত দেবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে এতদিন এই নিয়মটিই চালু ছিল। কিন্তু কমিশনের পাশাপাশি এখন থেকে সরকারও (মন্ত্রণালয়) গ্যাস-বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করতে পারবে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২ জারি করেছেন—যেখানে বলা হয়েছে, 'বিশেষ পরিস্থিতিতে' জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম সরাসরি বাড়ানো কিংবা কমাতে পারবে সরকার। অর্থাৎ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে কোনো ধরনের শুনানির প্রয়োজন হবে না।

সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।

যেহেতু এ মুহূর্তে সংসদ অধিবেশন চলছে না, ফলে সরকার দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে অধ্যাদেশ জারি করল। নিয়ম অনুযায়ী, আগামী সংসদ অধিবেশনের প্রথম বৈঠকেই এই অধ্যাদেশটি বিল আকারে উত্থাপিত হবে এবং পাস হয়ে গেলে এটি আইনে পরিণত হবে। তবে অধ্যাদেশও যেহেতু আইন, ফলে সরকার বিলটি পাস হওয়ার আগেই এই অধ্যাদেশ বলে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারবে। সরকার নিশ্চয়ই গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য এই অধ্যাদেশ জারি করেনি। আবার সংসদ অধিবেশন শুরুর আগেই রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে অধ্যাদেশ জারি করানোয় সঙ্গত কারণেই মনে হতে পারে সরকার গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতে দ্রুত কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে চায়।

সঙ্গত কয়েকটি প্রশ্ন সামনে আসছে:

১. কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো যে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধনের জন্য অধ্যাদেশ জারি করতে হলো?

২. সরকার কি তড়িঘড়ি করে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াতে চায়?

৩. যদি রেগুলেটরি কমিশনে গণশুনানি ছাড়াই সরকার নিজের মতো করে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারে, তাহলে কমিশনের কাজ কী বা কমিশনের কোনো প্রয়োজন আছে কি?

৪. সরকার বলছে 'বিশেষ পরিস্থিতিতে' জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম সরাসরি বাড়ানো এবং অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এই আইন। প্রশ্ন হলো, এই 'বিশেষ পরিস্থিতি' কে ঠিক করবে? 'বিশেষ পরিস্থিতি'র মানদণ্ড কী? গ্যাস-বিদ্যুতের কোন অবস্থাকে 'বিশেষ পরিস্থিতি' বলা হবে? এ মুহূর্তে কি গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতে 'বিশেষ পরিস্থিতি' বিরাজ করছে?

৫. শুধু এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন নয়; দেশে আরও যেসব কমিশন আছে, এগুলো কতটা স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং সরকারের প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারছে?

সদ্য জারিকৃত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, 'এই আইনের (এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন) অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে, জনস্বার্থে, কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালী কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এর উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চালন, পরিবহন ও বিপণনের নিমিত্ত দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারবে।'

যেদিন এই অধ্যাদেশ জারি হলো, তার দুদিন পরেই বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, বেসরকারি খাত চাইলে তেল-গ্যাস আমদানি করতে পারে। গ্রাহকের দোড়গোড়ায় সাশ্রয়ী ও সহনীয় দামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পৌঁছে দেওয়াই মূল চ্যালেঞ্জ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। (সময় টিভি, ৩ ডিসেম্বর ২০২২)।

খেয়াল করলে দেখা যাবে, যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা জ্বালানির সঞ্চালন, পরিবহন ও বিপণন করতে পারবে। তার মানে বেসরকারি পর্যায়ে গ্যাস আমদানির জন্য সরকার চাইলে এই অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেই কোনো এক বা একাধিক কোম্পানিকে দায়িত্ব দিতে পারবে।

এ মুহূর্তে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম হয়তো বাড়ানো হবে না। কিন্তু বেসরকারি খাতে জ্বালানি আমদানির বিষয়টি ছেড়ে দেওয়ার জন্যই যে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, সেটি এই অধ্যাদেশ জারির দুদিন পরেই জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট।

প্রশ্ন হলো, দেশের সংকটকালে যদি বেসরকারি খাত এগিয়ে আসে তাতে ক্ষতি কী? ক্ষতি নেই। বরং এটিই সময়োপযোগী। সমস্যা অন্য জায়গায়। যেমন বিদ্যুৎ সংকটের দ্রুত সমাধানের জন্য যে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু করা হয়েছিল, এখন সেই কুইক রেন্টাল নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে। এই খাতে সরকারের বা রাষ্ট্রের কত টাকা অপচয় হলো, লুটপাট হলো এবং তার বিনিময়ে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া গেলো সেসব প্রশ্ন এখন উঠছে।

স্মরণ করা যেতে পারে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণের আগে দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির যে দশা ছিল, তা এক কথায় ভয়াবহ। বিএনপির বিরুদ্ধে যেসব ইস্যুতে আওয়ামী লীগ জনমত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল এই বিদ্যুৎ। যে কারণে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে এবং বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেয়। জেনারেটরের ওপর থেকে ট্যাক্স তুলে দেওয়া হয় এবং শিল্প কারখানার মালিকদেরও নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী বিদুৎ উৎপাদন করতে বলা হয়। শুধু তাই নয়, তারা চাইলে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে বলেও বিধান করা হয়।

যদিও বেসরকারি খাতের কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারকে নানা ধরনের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় এর খরচ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়মুক্তি দেওয়ার বিধানের কারণে। ২০১০ সালে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষবিধান) আইনকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হয় এবং এই আইনের অধীনে গৃহীত কোনো কাজের বৈধতা সম্পর্কে আদালতের কাছে প্রশ্ন করা বা মামলা করা যাবে না বলেও উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ যারা বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবেন, তাদেরকে আগে থেকেই দায়মুক্তি দেওয়া হয় এই বিশেষ আইনে।

সুতরাং, বেসরকারি খাতে জ্বালানি আমদানির বিষয়টি ছেড়ে দিলো কোন কোন কোম্পানি এর সুবিধা ভোগ করবে; জ্বালানি আমদানির বিষয়টি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিলে জ্বালানির দাম কী পরিমাণ বাড়বে এবং তার ফলে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন খরচ কী পরিমাণ বাড়বে—সে প্রশ্নও আছে। কারণ বেসরকারি খাত লোকসান করার জন্য জ্বালানি আমদানি করবে না। বরং যারা এই খাতে বিনিয়োগ করে তারা বেশ প্রভাবশালী এবং তাদের লক্ষ্য থাকে বিপুল মুনাফা।

এখন প্রশ্ন হলো, যে কারণে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ চালুর জন্য বিশেষ বিধান আইন করা হয়েছিল, সেই একই কারণে কি এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনেরও সংশোধন করা হলো? সরকার কি মনে করছে যে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে গণশুনানির মধ্য দিয়ে এ ধরনের স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না? যদি তাই হয়, তাহলে এই কমিশনের কাজ কী হবে? ভবিষ্যতে গ্যাস-বিদ্যুতের অন্যান্য ইস্যুতেও সরকার যদি 'বিশেষ পরিস্থিতি'র দোহাই দিয়ে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেয়—গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দেয়—সেটি কে ঠেকাবে?

মন্ত্রিপরিষদ সচিব অবশ্য 'বিশেষ পরিস্থিতি'র একটি ব্যাখা দিয়ে বলেছেন, 'অনেক সময় দাম কমে গেল, কিন্তু বিইআরসি ৯০ দিন ধরে দাম কমাবে। কিন্তু এখন এই আইনের ফলে সরকার একটা নোটিফিকেশন দিয়ে দাম কমাতে পারবে।' তার কথায় বোঝা যাচ্ছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধীরগতি কমাতে বা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে এই আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। ভালো কথা। কিন্তু সরকার যে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য এই আইন সংশোধন করেছে বা ভবিষ্যতে এই আইনের বলে সরকার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমাবে, সেটি কতজন মানুষ বিশ্বাস করেন? আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও যেখানে দেশের বাজারে দাম কমে না—সেখানে সরকার এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের শুনানির দীর্ঘসূত্রতা এড়ানোর জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমিয়ে দেবে, সেটি ভাবার কোনো কারণ আছে? বরং এই আইনের সংশোধনী আনা হয়েছে গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত এবং কোনো ধরনের জবাবদিহি ছাড়া গ্রহণের জন্য। সেই সিদ্ধান্ত কতখানি দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে হবে—সেটিই মূল প্রশ্ন।

কমিশনগুলো একটা চেক এন্ড ব্যালান্সের কাজ করে। যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন। সরকারি লোকেরা দুর্নীতি করলেও দুদক তাদের ধরতে পারে। যেমন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সরকারের কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলে তারা সেটির তদন্ত করতে পারে এবং সুপারিশ করতে পারে। যেমন জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন। দেশের নদীগুলো বিপন্ন হলে তারা যেকোনো সময় যেকোনো এলাকার নদী পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারকে সুপারিশ করতে পারে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। অর্থাৎ মানবাধিকার কমিশন বা নদীরক্ষা কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। অ্যাকশন নিতে পারে না। তাদের ক্ষমতা ও এখতিয়ার কেবল সুপারিশ করা।

বাংলাদেশে আরও যেসব কমিশন আছে যেমন নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি), পরিকল্পনা কমিশন, ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, আইন কমিশন, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন, টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন, তথ্য কমিশন ইত্যাদি। ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিতে ব্যাংকিং কমিশন গঠনের প্রস্তাব থাকলেও সেটি এখনও আলোর মুখ দেখেনি। কিন্তু তারপরও যেসব কমিশন তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী—এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন তাদের অন্যতম।

অধ্যাদেশ জারি করে এই কমিশনের ক্ষমতা যেভাবে কমানো হলো, তাতে দেশের গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের সমাধানে এটি কতখানি ভূমিকা রাখবে, তার চেয়ে বড় প্রশ্ন, এমনিতেই যেখানে কমিশনগুলো খুব বেশি শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পায় না বা অনেক কমিশনের সুপারিশ করা ছাড়া যেখানে কোনো ক্ষমতা নেই; সেখানে যে কমিশনগুলো তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী তাদেরও ক্ষমতা কমানোর ফলে অন্য কমিশনগুলোর ওপরে একধরেনর মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি হবে কি না?

গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে এটা যেমন ঠিক, তেমনি সবকিছু মন্ত্রণালয় বা প্রশাসননির্ভর করে ফেলার বিপদ সম্পর্কেও সজাগ থাকা জরুরি। কেননা যখন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের শক্তি খর্ব নিয়ে কথা হচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে নির্বাচন কমিশনের মতো একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে মন্ত্রণালয় পাত্তা দিচ্ছে না বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর বলছে, নির্বাচনি আইনের (আরপিও) বেশ কিছু সংশোধন চেয়ে নির্বাচন কমিশন গত আগস্ট মাসে একটি খসড়া বিলের ওপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠালেও এ বিষয়ে কোনো সাড়া নেই মন্ত্রণালয়ের। শুধু তাই নয়, এই বিলের অগ্রগতি জানতে নির্বাচন কমিশন দুইবার চিঠি দিলেও তার কোনো জবাব নেই। এ অবস্থায় কমিশন আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার সহযোগিতা না করলে জনমনে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সংশয় জাগবে।

সুতরাং এনার্জি রেগুলেটরি আইন সংশোধনের ফলে গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতে মন্ত্রণালয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য ও কর্তৃত্ব স্থাপিত হবে কি না; কমিশন নখদন্তহীন বাঘে পরিণত হবে কি না; গ্যাস-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নেওয়া সকল সিদ্ধান্ত দেশ ও সাধারণ মানুষের স্বার্থের অনুকূলে থাকবে কি না—সেগুলোই মূল প্রশ্ন। যদিও সরকার বলছে, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো-কমানোর ব্যাপারে কমিশনের ক্ষমতা বহাল থাকবে। বরং বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার এই ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করবে।

অস্বীকার করা যাবে না, একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে জ্বালানি সংকট, অন্যদিকে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে উৎপাদন কমে যাওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করা এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ। সুতরাং সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে অনেক সিদ্ধান্ত দ্রুত দিতে হবে, এটা যেমন ঠিক, তেমনি বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের মূল্য সমন্বয়ের নামে জনগণের ওপর নতুন করে বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হবে না; বেসরকারি খাতকে জ্বালানি আমদানির সুযোগ দিয়ে কোনো বিশেষ কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে না; 'বিশেষ পরিস্থিতির' দোহাই দিয়ে বিশেষ কাউকে অর্থ লুটপাটের সুযোগ করে দেবে না এবং বছর কয়েক পরে কুইক রেন্টালের মতো এই বিশেষ সুবিধাটিও বিতর্কের জন্ম দেবে না—এটিই প্রত্যাশা।

আমীন আল রশীদ: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর, নেক্সাস টেলিভিশন

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Related topic
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন / বিইআরসি / তেল-গ্যাস সংকট
Apple Google
Click to comment

Comments

Comments Policy

Related News

২ মাস আগে | বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পিডিবির রিভিউ আপিল

২ মাস আগে | বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত কাল

২ মাস আগে | ভারত

রাশিয়ার তেল বাংলাদেশে সরবরাহের উপায় খুঁজছে ভারত

৩ সপ্তাহ আগে | বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুতের খুচরা দাম ৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

শামসুল আলম
২ মাস আগে | বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

‘এ সিদ্ধান্ত জ্বালানি খাতের অন্ধকার জগতকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য’

The Daily Star  | English
1h ago|Crime & Justice

300 mobile phones being mugged daily in Dhaka: DB

On an average, around 300 mobile phones are being mugged in Dhaka and adjoining areas.

22m ago|Politics

Two factions of BNP clash at Ctg rally

The Daily Star
Follow Us
  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
© 2023 thedailystar.net | Powered by: RSI LAB
Copyright: Any unauthorized use or reproduction of The Daily Star content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.