Skip to main content
ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩  //  বৃহস্পতিবার
E-paper English
T
আজকের সংবাদ
ষড়যন্ত্র করে আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে: হিরো আলম ৭ মাস পর স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনছে বাংলাদেশ জানুয়ারিতে ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ১.৯৫ বিলিয়ন ডলার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় যুবক গ্রেপ্তার অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে: প্রধানমন্ত্রী ডুলহাজারা সাফারি পার্কে সিংহ রাসেলের মৃত্যু স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফের খোঁজ পেতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাইলেন স্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জিয়াউর রহমান জয়ী ভোটার যায়নি, পুলিশ মাইকিং করে ভোটারদের ডেকেছে: মির্জা আব্বাস গিলের বিস্ফোরক সেঞ্চুরির পর বিধ্বস্ত নিউজিল্যান্ড চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আব্দুল ওদুদ জয়ী বগুড়া-৬ উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু জয়ী পানির নিচে গ্যারেজ! জাপানি মেয়েকে নিয়ে আত্মগোপনে বাবা, উদ্ধার করে পাঠানো হলো ভিকটিম সেন্টারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে জয়ী সাত্তার
The Daily Star Bangla
সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • E-paper
  • English
আজকের সংবাদ
ষড়যন্ত্র করে আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে: হিরো আলম ৭ মাস পর স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনছে বাংলাদেশ জানুয়ারিতে ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ১.৯৫ বিলিয়ন ডলার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় যুবক গ্রেপ্তার অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে: প্রধানমন্ত্রী ডুলহাজারা সাফারি পার্কে সিংহ রাসেলের মৃত্যু স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফের খোঁজ পেতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাইলেন স্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জিয়াউর রহমান জয়ী ভোটার যায়নি, পুলিশ মাইকিং করে ভোটারদের ডেকেছে: মির্জা আব্বাস গিলের বিস্ফোরক সেঞ্চুরির পর বিধ্বস্ত নিউজিল্যান্ড চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আব্দুল ওদুদ জয়ী বগুড়া-৬ উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু জয়ী পানির নিচে গ্যারেজ! জাপানি মেয়েকে নিয়ে আত্মগোপনে বাবা, উদ্ধার করে পাঠানো হলো ভিকটিম সেন্টারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে জয়ী সাত্তার
The Daily Star Bangla
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩ | সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • হোম
  • সংবাদ
    • বাংলাদেশ
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • করোনাভাইরাস
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • সংগঠন সংবাদ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • তারুণ্য
    • শিক্ষা
    • ক্যারিয়ার
    • তারুণ্যের জয়
  • প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • স্টার্টআপ
    • অটোমোবাইল
  • পরিবেশ
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • প্রাকৃতিক সম্পদ
    • দূষণ
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা
English T
  • হোম
  • সংবাদ
    • বাংলাদেশ
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • করোনাভাইরাস
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • সংগঠন সংবাদ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • তারুণ্য
    • শিক্ষা
    • ক্যারিয়ার
    • তারুণ্যের জয়
  • প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • স্টার্টআপ
    • অটোমোবাইল
  • পরিবেশ
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • প্রাকৃতিক সম্পদ
    • দূষণ
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা

  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
মতামত

আমাদের সন্তানদের জীবনের লক্ষ্য অপরাধ জগতের ‘বড় ভাই’ হওয়া

শাহানা হুদা রঞ্জনা
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২২ ০১:০০ অপরাহ্ন

আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়ে ফেলছি খুব দ্রুত। গল্পে যেমন পড়েছি হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার পেছনে শহরের সব শিশু-কিশোর দলবেঁধে ছুটে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি আমাদের সন্তানরা অপরাধ জগতের পেছনে ছুটে যাচ্ছে।

অনেকে হয়তো বুঝতে পেরে সন্তানকে ফিরিয়ে আনার সুযোগ পাচ্ছি, আবার অনেকের সন্তান চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে। 'গডফাদার' নামের বাঁশিওয়ালার পেছনে চলতে চলতে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ছে অনেকেই। দেশে এই অবস্থা চলতে থাকলে একদিন এমন হবে যে মা-বাবারা ঝাপসা চোখে, ভাঙা দেহ নিয়ে শূন্য অট্টালিকায় বসে থাকবেন, আর তাদের সন্তান হারিয়ে যাবে অপরাধ জগতে।

সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।

মা-বাবার কাছে সন্তান রাজপুত্র-রাজকন্যা। অপরাধ জগতের ডাকিনী-যোগিনীরা এসে সেই আদরের রাজপুত্র-রাজকন্যাদের ধরে নিয়ে যায়। এইভাবেই একদিন তারা অপরাধী হয়ে ওঠে অথবা অপরাধের শিকার হয়। যেমনটি হয়েছে নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীর কিছু কিশোর।

এক কিশোরের পায়ের সামনে থুতু ফেলার জেরে সবার সামনে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ১০/১২ জন কিশোর। তারা স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, বয়স ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।

শুধু কি কুপিয়ে হত্যা? উল্লাস করে, একজনের হাত-পা বেঁধে রেখে মাথায় ও শরীরে ডিম ভেঙে শাস্তি দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে কিশোররা। পুলিশের কাছে আটক হওয়ার পরেও দেখেছি কিশোর অপরাধী টেলিভিশন ক্যামেরায় ছিনতাই ও হত্যার বর্ণনা দিয়েছে অনুশোচনা-অনুকম্পাহীন নির্বিকারভাবে।

এ ছাড়া, মাদক সেবনের জেরে ২ পক্ষের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ২ কিশোর গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে। প্রেমের কারণে খুন, মাদকের ভাগ নিয়ে খুন হচ্ছেই। সম্প্রতি কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক তার বাড়িতে নির্মমভাবে খুন হন ভাতিজার হাতে। ভাতিজা নওরোজ মাদক ও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে এবং ফুপুর শাসনের জের হিসেবে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে রোকসানাকে হত্যা করে।

ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্নভাবে ঘটলেও চরম শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। শিশু থেকে তরুণদের এই আচরণ একধরণের অসহিষ্ণু সমাজের কথা বলছে। মানুষের এই অসহিষ্ণু হয়ে ওঠার পেছনে অনেক ক্ষোভ রয়েছে বলে মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন।

শিশু-কিশোর ও যুবকদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। শিশু অপরাধ বিষয়ক গবেষকরা মনে করেন, অপরাধে জড়িয়ে পড়া শিশুদের সামাজিক বন্ধন খুব দুর্বল থাকে। এই সামাজিক বন্ধনহীনতা একধরণের সমস্যা তৈরি করে। তাদের অনেকেই মা-বাবা ও পরিবারের ভালোবাসা, যত্ন ও মনোযোগ না পেয়ে অনাদরে অবহেলায় বড় হয়। আদর্শিক জায়গা থেকে তাদের সামনে কোনো 'রোল মডেল' থাকে না।

শিশু যদি ভালবাসাহীন, ঝগড়াঝাটিপূর্ণ ও সন্দেহ-কোন্দলের মধ্যে বড় হয়, তাহলে সে মায়াহীন মানুষ হবে। তাদের আপনজনের প্রতি তাদের কোনো টান থাকে না। পরিবারের মানুষের সঙ্গে যেসব শিশুর মানসিক নৈকট্য বা শারীরিক স্পর্শের কোনো যোগ থাকে না, তাদেরই বড় হয়ে অসুস্থ মানসিকতার মানুষ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে।

জীবনের কোনো এক সংকটে এই শিশু-কিশোররাই ঘৃণা ও দূরত্বকেই বেছে নিতে পারে নিজের আবেগজনিত কষ্ট থেকে বাঁচতে এবং হয়ে উঠবে সহিংস। তারা এই সহিংসতার প্রকাশ ঘটাতে পারে নিজের প্রতি, বাবা-মা কিংবা সমাজের প্রতি।

শিশু-কিশোররা খারাপ পথে যেতে পারে দারিদ্রের কারণে। এটি একটি কারণ। তবে, কিশোর অপরাধীদের অধিকাংশের বয়সই ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান যেমন আছে, তেমনি আছে নিম্নবিত্ত ঘরের এবং নিরক্ষর কিশোর-তরুণও। আর এরাই মূলত নেতৃত্বে আছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষিত, সচ্ছল ও ধনী পরিবারের বেপরোয়া বা বখাটে সন্তানরা চালিত হচ্ছে সমাজের বঞ্চিত পরিবার থেকে সৃষ্ট মাস্তানদের দ্বারা।

কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত কিশোরদের অনেকেই বলেছে, তাদের জীবনের লক্ষ্য 'বড় ভাই' হওয়া। রাজনৈতিক দলে থাকা বড় ভাইদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি কিশোরদের প্রলুব্ধ করে।

এই বাস্তবতারই প্রতিধ্বনি শুনেছি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলামের ভাষ্যে। তিনি বলেছেন, 'কিশোররা দেখতে পাচ্ছে, অপরাধীরা হিরো। তারা দেখতে পাচ্ছে, বড়রা নানা অপরাধ করে ক্ষমতাবান হচ্ছে। ফলে তারাও সেই পথে যায়, তারাও গ্যাং গঠন করে নিজেকে ক্ষমতাবান করতে চায়, হিরো হতে চায়।'

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন বলে, কিশোরদের অপরাধে জড়ানোর প্রবণতা কমেনি, বরং প্রকোপ ও পরিধি বেড়েছে, তখন ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। স্থানীয় রাজনৈতিক গডফাদার ও জনপ্রতিনিধিরাই কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে সক্রিয় বলে অভিযোগ আছে। তাই পুলিশ একটি গ্যাং ধরলে আরেকটি গ্যাং গজিয়ে ওঠে। আর এই গডফাদাররা তাদের নানা অপরাধ কর্মে কিশোর গ্যাংকে ব্যবহার করে।

ঢাকাসহ সারাদেশে এ পর্যন্ত যেসব কিশোর গ্যাং আলোচনায় এসেছে, তাদের অধিকাংশের নেপথ্যে রয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। রাজনৈতিক গডফাদাররা শক্তি দেখাতে, মাদক চোরাকারবারে এবং ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেই কিশোর গ্যাং তৈরি ও ব্যবহার করেন।

কিশোর গ্যাং নিয়ে কাজ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এর পেছনে ইন্টারনেট সংস্কৃতির প্রভাব থাকলেও মূল কারণ হলো স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। তারাই নিজেদের স্বার্থে নতুন নতুন কিশোর গ্যাং তৈরি করেন।

শিশু-কিশোররা হত্যা ও ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধের সঙ্গে খুব বেশি হারে যুক্ত হচ্ছে। মূলত অভাব ও প্রাচুর্য, শাসনহীনতা, অভিভাবকের উদাসীনতা, মূল্যবোধের সংকট এবং পরিবারে অপরাধী বা অপরাধের উপস্থিতি শিশুকে বিপদের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বন্ধুবান্ধবরাই শিশু-কিশোরদের অপরাধ জগতের দিকে টেনে নিলেও 'বড় ভাই' হয়ে শক্তি দেখানোর প্রবণতা শিশুকে অপরাধী করে তুলছে।

এ ক্ষেত্রে, শিশু-কিশোরকে রক্ষা করার দায়িত্ব পরিবারের। অথচ বাবা-মা তাদের ব্যস্ততা ও অসচেতনতার কারণে ব্যক্তিগতভাবে সময় দিতে পারেন না। এই সময় দিতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকতে অনেক সময় তারা সন্তানের হাতে তুলে দিচ্ছেন অপরিমিত অর্থ, প্রাচুর্য ও ব্যাপক স্বাধীনতা। এই প্রশ্রয় সন্তানকে করে তোলে বেপরোয়া, দুর্বিনীত ও অপরাধী।

বখে যাওয়া শিশু-কিশোররা যেমন সহজে মন্দ পথে পা বাড়ায়, তেমনি অপরাধীরাও খুব সহজে তাদের ব্যবহার করার সুযোগ পায়। অধিকাংশ অভিভাবক সন্তানকে 'সময় দেওয়ার পরিবর্তে সুবিধা দিতে' বেশি উৎসাহী থাকেন। তারা মনে করেন, এতে তাদের দায়িত্ব পালন হয়ে যাচ্ছে।

এর ফলে এখন শুধু দারিদ্রের কারণে নয়, অন্যান্য অনেক কারণেই সমাজের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানও অপরাধ জগতের সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে। দরিদ্র পরিবারের অভিভাবকরা নিজেরাই এতটা হতাশা, বিপদ ও জীবনযুদ্ধে জড়িয়ে থাকেন যে সন্তানের নৈতিকতা নিয়ে ভাবার সময় বা সুযোগ কোনোটাই তাদের থাকে না।

শিশু-কিশোররা যখন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি কিছু পেয়ে যায়, যখন তাদের কাজের বা আচরণের জন্য কোথাও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। যখন তারা দেখে তাদের অভিভাবক অসৎ, অন্যায় করেও শক্তির জোরে টিকে থাকা যায়, তখন তারা খুব সহজেই এমন বিপজ্জনক পথে পা বাড়ায়। একটি শিশু এত সহজ সরল থাকে যে তাকে যেভাবে খুশি সেভাবে ব্যবহার করার সুযোগ থাকে। আর এই সুযোগটাই অপরাধীরা কাজে লাগায়।

গোয়েন্দা পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত কিশোর গ্যাং সদস্যদের আটকের পর তাদের কাছ থেকেই জানা গেছে, কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, স্থানীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা তাদের ব্যবহার করেন। নির্মাণ কাজে চাঁদাবাজি, বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তোলার কাজে তাদের ব্যবহার করা হয়। এই নেতারাই কিশোরদের অস্ত্র দেন। কিশোর গ্যাং সদস্যরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে নিজেরাও স্বাধীনভাবেও অপরাধ করে। ফলে দেখা যায়, একটি অপরাধে ৩০-৪০ জন কিশোর জড়িয়ে পড়ে। এটা তাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজকাল অভিভাবক সন্তানের হাতে খুব সহজেই বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ডিভাইস তুলে দিচ্ছেন। শিশু-কিশোররাও যেকোনোভাবে তা সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। কারণ, এগুলোর মাধ্যমে তারা টিকটক, পাবজি, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লাইকির মতো অ্যাপ ব্যবহার করে। এসব অ্যাপকে কেন্দ্র করেও নতুন করে গ্যাং গড়ে তোলে।

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত কিশোরদের ভাষ্য, ভিডিও গেমস খেলতে খেলতে তাদের মধ্যে অস্ত্র চালানো শেখার ইচ্ছা জেগেছে। এরপরই জঙ্গিগোষ্ঠীর খপ্পরে পড়ে তারা ঘর ছাড়ে।

কিশোররা কেন এত বেশি হারে অপরাধে জড়াচ্ছে, তা নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা নেই এবং একে প্রতিহত করার নীতিমালা নেই। শুধু ঢাকা শহরেই ৭০-৭৫টি কিশোর গ্যাংয়ের কথা বলা হচ্ছে। এদের আলাদা নাম ও পরিচিতি আছে। আর সারা দেশে এই গ্যাংয়ের সংখ্যা ৫ শতাধিক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ গবেষক তৌহিদুল হক সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যখন দেখে, তাদেরকে ব্যবহারকারীরা গণ্যমান্য, পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে ওঠাবসা করেন, তখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের বয়স কম হওয়ায় পরিণতির কথা চিন্তা না করে যেকোনো ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এটা এখন  আমাদের একটি বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে।

কেন কিশোররা আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়াচ্ছে? রাষ্ট্রব্যবস্থা, সমাজ কিংবা পরিবার কী করছে কিশোরদের জন্য? শিশুদের অপরাধে জড়িয়ে পড়া বিষয়ে গবেষণা কি হচ্ছে? হলে সেই গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী কি শিক্ষা কার্যক্রমকে সাজানো হচ্ছে? শিশু একাডেমি ও শিল্পকলা একাডেমি, গার্লস গাইড ও বয় স্কাউট বা শিশু সংগঠনগুলো কোথায়? কিশোর উন্নয়নে অনেকগুলো পক্ষের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে, নয়তো কোনো লাভ হবে না।

সামাজিক বন্ধন অনেক জোরালো করতে হবে, আর এখানেই আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। সময় দিতে হবে সন্তানদের। শিশুর অপরাধী হওয়া এবং অপরাধী হওয়ার পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে ভাবতে হবে। শিশু নিজে নিজে অপরাধী হয় না, তাকে অপরাধী বানানো হয়।

শিশুরা গুরুতর অপরাধ করলে যেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়, এ জন্য শিশুদের বয়স ১৮ বছর থেকে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেখানে বলছে, কিশোর অপরাধের ঘুড়ির সুতা ধরে রেখেছে গডফাদাররা, সেখানে আইন সংশোধন করে বয়স কমানোর এই প্রস্তাব বুমেরাং হবে। সেইসঙ্গে সেটা হবে চরম নির্বুদ্ধিতা। এর ফলে কিশোর অপরাধ তো কমবেই না, উপরন্তু বাল্যবিয়ে ও শিশুশ্রম বহুগুণ বেড়ে যাবে।

শাহানা হুদা রঞ্জনা, সিনিয়র কোঅর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Related topic
কিশোর গ্যাং
Apple Google
Click to comment

Comments

Comments Policy

Related News

৫ মাস আগে | বাংলাদেশ

নরসিংদীতে অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জ
৪ মাস আগে | অপরাধ ও বিচার

নারায়ণগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের ১৪ সদস্য গ্রেপ্তার

৩ মাস আগে | অপরাধ ও বিচার

সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে কলেজশিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

৭ মাস আগে | বাংলাদেশ

কিশোর গ্যাং-অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের বয়সসীমা কমানোর চিন্তা

৭ মাস আগে | অপরাধ ও বিচার

ক্ষমতাধরদের হাতিয়ার কিশোর গ্যাং

The Daily Star  | English
2h ago|Elections

By-polls swept by the blessed ones

Three Awami League candidates and two independents with AL blessings won the by-polls to five out of six constituencies held today.

2h ago|Views

Modi's patronisation of Adani and its cost for Bangladesh

The Daily Star
Follow Us
  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
© 2023 thedailystar.net | Powered by: RSI LAB
Copyright: Any unauthorized use or reproduction of The Daily Star content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.