পৃথিবীতে সাম্য ত্বরান্বিত করতে ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে ‘ভ্যাটিকান মানব সৌভ্রাত্র বিষয়ক ঘোষণা’

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৩০ জন নোবেল জয়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রোমের সেইন্ট পিটার্স স্কোয়ারে জনসমক্ষে ‘ভ্যাটিকান মানব সৌভ্রাত্র বিষয়ক ঘোষণাপত্রে’ সই করেন। ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অব স্টেট কার্ডিনাল পিয়েত্রো পারোলিন পোপের পক্ষে ঘোষণাপত্রটি গ্রহণ করেন। ১০ জুন ২০২৩। ছবি: সংগৃহীত

নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী ৩০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা একটি মানব সৌভ্রাত্র বিষয়ক ঘোষণা প্রস্তুত করতে সম্প্রতি সমবেত হয়েছিলেন ভ্যাটিকান সিটিতে।

পোপ ফ্রান্সিসের আমন্ত্রণে ভ্যাটিকান সিটিতে অনুষ্ঠিত মানব সৌভ্রাত্র বিষয়ক সভায় অংশগ্রহণ করতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ৯ জুন রোম যান।

ড. ইউনূস এই ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরিতে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন এবং ঘোষণাপত্র চূড়ান্তকরণের সময় তিনি এ সংক্রান্ত কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন।

গত ১০ জুন রোমের সেইন্ট পিটার্স স্কোয়ারে জনসমক্ষে এই মানব সৌভ্রাত্র বিষয়ক ঘোষণাপত্রটি যৌথভাবে পাঠ করেন ড. ইউনূস ও নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী নাদিয়া মুরাদ।

ঘোষণাপত্রটি তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করার কথা ছিল পোপ ফ্রান্সিসের। তবে, তিনি অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অব স্টেট কার্ডিনাল পিয়েত্রো পারোলিন পোপের পক্ষে ঘোষণাপত্রটি গ্রহণ করেন।

নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ীদের মধ্যে মারিয়া রেসা, কোস্টারিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট অস্কার আরিয়াস, কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সান্তোস, লেইমা বোয়ি, তাওয়াক্কুল কারমান, ডেনিস মুকওয়েজ ও শিরিন এবাদি এবং জাতিসংঘ উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা, নিউক্লিয়ার যুদ্ধ নিরোধে চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন, নিউক্লিয়ার অস্ত্র বিলোপে আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন, কৃষি আর্থিক সেবা করপোরেশন, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন নোবেল জয়ী সংস্থা এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন ও চূড়ান্তকরণে সম্পৃক্ত হন।

মানব সৌভ্রাত্রের এই ঘোষণায় ড. ইউনূসের 'তিন শূন্য'র পৃথিবী—শূন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও শূন্য বেকারত্ব—প্রতিষ্ঠার রূপকল্পটি বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে। ঘোষণাপত্রে রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যুদ্ধ ও সংঘাত নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্ন দেশে ড. ইউনূস প্রস্তাবিত শান্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় স্থাপনের ধারণাটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়।

ঘোষণাপত্রে প্রকৃতির সঙ্গে শান্তি স্থাপনে পরিবেশগত সৌভ্রাত্র গড়ে তোলা, সৃষ্টির প্রতি দায়িত্ব পালন এবং টেকসই জীবনপ্রণালী প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান হয়। বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয় সকল মানুষের সমানভাবে এগিয়ে যেতে অধিকতর সামাজিক সৌভ্রাত্র, সকলের জন্য মর্যাদা ও সমান অধিকার নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার প্রসার, মর্যাদাপূর্ণ কাজ ও সুবিচার, আতিথেয়তা, সংহতি ও সহযোগিতা, সকলের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করতে টেকসই কৃষি, একটি যথার্থ প্রতিবেশগত উত্তরণ এবং একটি সামাজিক সংহতি অর্থনীতির উপর। এই সৌভ্রাত্রের চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি মহত্তর সমাজ ব্যবস্থা, যা পৃথিবীতে স্বাধীনতা ও সাম্য ত্বরান্বিত করবে।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Govt issues ordinance amending Anti-Terrorism Act

Activities of certain entities, and activities supporting them can now be banned

1h ago