বাংলাদেশের বড় রপ্তানি বাজার হয়ে উঠছে লাতিন আমেরিকা

স্টার ফাইল ফটো

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যের বড় রপ্তানি বাজারে পরিণত হচ্ছে লাতিন আমেরিকা। সেখানের ২৫টির বেশি দেশের ৬৬ কোটি ভোক্তার বাজারে ৩৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের পোশাক ব্যবসায়ীরা ভালো করছেন।

ঢাকায় কয়েকটি দেশের দূতাবাস খোলা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং চিলি বাংলাদেশকে শুল্ক মুক্ত সুবিধা দেওয়ায় লাতিন আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানি ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে ৬২১.২৭ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে যা ছিল ৫১৫.৫০ মিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রপ্তানি আয় এসেছে ১০৭.৭৫ মিলিয়ন ডলার।

একইসঙ্গে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো বিশেষ করে- ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা তুলা, ভুট্টা, তৈলবীজ এবং চিনির প্রধান সরবরাহকারী হয়ে উঠছে।

এই অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতির দুই দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুবিধার্থে সম্প্রতি বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস স্থাপন করেছে।

লাতিন আমেরিকা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আনোয়ার শওকত আফসার বলেন, কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশ থেকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানি পরিমাণ খুবই কম ছিল।

তিনি বলেন, 'এখন যোগাযোগ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানির পরিমাণও দ্রুত বাড়ছে।'

তিনি জানান, গার্মেন্টস পণ্য ছাড়াও পাট ও পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিও বাড়ছে।

শাশা ডেনিমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ বলেন, 'লাতিন আমেরিকা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের জন্য একটি বড় বাজার। এর কারণ বাংলাদেশের পোশাক ব্যবসায়ীরা তাদের ফ্যাশন ও স্টাইলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য সরবরাহ করতে পারে।'

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পোশাক প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান শাশা ডেনিমস করোনার আগে গুয়াতেমালা ও কলম্বিয়ার মতো লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে ডেনিম কাপড় রপ্তানি করত।

উর্মি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, 'বাংলাদেশের জন্য লাতিন আমেরিকায় বড় সম্ভাবনা আছে।'

তিনি জানান, বাংলাদেশ ২০১৫ সাল থেকে চিলিতে শূন্য শুল্ক সুবিধা ভোগ করে আসছে। তাদের এই উদ্যোগ এ অঞ্চলে বাজার খুঁজতে বাংলাদেশকে অনেক সহায়তা করেছে। ব্রাজিল বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে গরুর মাংস রপ্তানি নিয়ে আলোচনা করছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২১০ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ব্রাজিল, জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়া ছিল শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ।

এর মধ্যে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, হন্ডুরাস ও ভিয়েতনাম ৩৮.৩৭ বিলিয়ন ডলারের বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানি করে শীর্ষ সরবরাহকারী ছিল।

একই বছরে এই অঞ্চলে ৬.২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি জুতা পণ্য রপ্তানি হয়েছে। প্রধান সরবরাহকারীরা দেশ ছিল চীন, ভিয়েতনাম, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের একজন ব্যবসায়ী জানান, চীন এই অঞ্চলের প্রধান রপ্তানিকারক দেশ। কিন্তু, উচ্চ উৎপাদন ব্যয়ের কারণে কিছু দেশে চীনের রপ্তানি কমছে। তাই সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার ধরার সুযোগ আছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, 'লাতিন আমেরিকায় বাংলাদেশের অনেক সম্ভাবনা আছে। কারণ, এই অঞ্চলের বেশিরভাগ বাজার উদীয়মান অর্থনীতির দেশ।'

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

10h ago