পড়াশোনার পাশাপাশি নেটওয়ার্কিং কেন গুরুত্বপূর্ণ

নেটওয়ার্কিং
ছবি: সংগৃহীত

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শেষে অনেক শিক্ষার্থীরই প্রশ্ন থাকে, ইন্টার্নশিপ কোন প্রতিষ্ঠানে করব? যদিও অনেকেরই নির্দিষ্ট পছন্দ থাকে, কিন্তু সেখানে আবেদনের প্রক্রিয়া বা যোগাযোগ কীভাবে করবে, এ নিয়ে সংকোচ দেখেছি। এর কারণ হলো, অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামকে শুধু শ্রেণিকক্ষকেন্দ্রিক মনে করেন।

তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীর অন্যতম কাজ হলো বিভিন্ন বিষয়ের অভিজ্ঞ যারা আছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ কিংবা নেটওয়ার্কিং গড়ে তোলা। যেই বিভাগেই পড়াশোনা করা হোক না কেন, সেই বিভাগের অ্যালামনাই, নির্দিষ্ট বিষয়ের এক্সপার্ট বা অভিজ্ঞ যারা আছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটা প্রয়োজনীয়। এতে নিজের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে যেমন সচেতন হওয়া যায়, একই সঙ্গে ইন্টার্নশিপসহ খণ্ডকালীন কিছু কাজেরও সুযোগ হয়ে যায়।

দেশ-বিদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই এই নেটওয়ার্কিংকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেটওয়ার্কিং, করপোরেট কমিউনিকেশনের মতো বিভিন্ন কোর্সও পরিচালনা করা হয়। সেইসঙ্গে বিভাগগুলো কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় বছরজুড়ে নানান ওয়ার্কশপ, কনফারেন্স আয়োজন করে থাকে। ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকিতে প্রায়ই দেখতাম ক্যারিয়ার ফেয়ারের আয়োজন করা হচ্ছে বেশ বড়সড় আকারে। বিভিন্ন করপোরেট হাউজ থেকে প্রতিনিধিরা আসতেন এবং সরাসরি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিতেন। এমনকি বিভিন্ন কনফারেন্স, ওয়ার্কশপের জন্য শিক্ষার্থীদের আলাদা প্রশিক্ষণ দেওয়া, কোর্সের কিছু নম্বরও দিয়ে দেওয়া হতো, যাতে তারা অ্যালামনাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন এক্সপার্টদের সঙ্গে নানান আলোচনায় অংশ নিতে পারেন।

নিজে গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগের একইসঙ্গে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী হওয়ায় দেখেছি, এ বিষয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ কিংবা নেটওয়ার্ক যাকে বলছি, তার বিকল্প আসলে নেই। যোগাযোগ ও প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে একজন শিক্ষার্থীর আসলে জানা থাকা প্রয়োজন, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো একজন কর্মীর থেকে কী দায়িত্বগুলো চায়। এই বিভাগে একইসঙ্গে গণযোগাযোগ, মিডিয়া, সাংবাদিকতার পাশাপাশি গবেষণাকেন্দ্রিক বিষয় রাখা হয়। তাই শুরুতেই শিক্ষার্থীকে এই একেকটি বিষয় এবং এগুলোর বিভিন্ন করপোরেট দিক নিয়ে ধারণা থাকা প্রয়োজন। এমনকি বেশ কিছু শিক্ষার্থী থাকে, যারা যোগাযোগের বিভিন্ন গুরুত্ব, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্র, এই বিষয়ে জানে বেশ কম। তাই একেবারে ফাইনাল সেমিস্টারে ইন্টার্নশিপের সময় কোর্স শিক্ষককেও আনুষঙ্গিক বেশ কিছু ঝামেলায় পড়তে হয়।

শুধু সাংবাদিকতা কিংবা এনজিওর কর্মক্ষেত্রেই নয়, একই বিষয়টি যারা শিক্ষকতায় আসতে আগ্রহী তাদের জন্যও প্রযোজ্য। কারণ শিক্ষক নিয়োগের সময় একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। কারো গবেষণা আর্টিকেল, সাংবাদিকতায় অভিজ্ঞতা, কোনো শিক্ষকের সঙ্গে যদি গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে থাকে, সব কিছু মিলিয়েই একজন ক্যান্ডিডেটের পোর্টফোলিও তৈরি হয়। তাই যারা শিক্ষকতা এবং গবেষণা পেশায় আগ্রহী, তারা আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের সময়টা থেকেই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।

 

Comments

The Daily Star  | English

Reforms, justice must come before election: Nahid

He also said, "This generation promises a new democratic constitution for Bangladesh."

7h ago