বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান

ছবি: পলাশ খান/স্টার

এইচএসসির ফল পুনঃনিরীক্ষণের দাবিতে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

শিক্ষার্থীরা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে ফল বাতিলের দাবি জানানোর পর রোববার তিনি এ ঘোষণা দেন।

অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শিক্ষার্থীরা 'অটোপাসের' দাবি জানিয়েছে, এটি বোর্ডের এখতিয়ারের বাইরের ব্যাপার।

'ফলাফল মূল্যায়ন ও প্রকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আমরা অনুসরণ করেছি। তারপরও আমি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি। আগামীকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেবো। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি', বলেন তিনি।

এর আগে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবোর্ডের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে বোর্ডপ্রাঙ্গণে ঢোকে।

বোর্ড কর্মকর্তাদের অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা সেখানকার আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, ভেতরে থাকা টেবিল ও চেয়ার ভাঙচুর করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি হয়।

বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, অফিসে ঢোকার সময় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় তারা তাদের দাবি আদায়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন।

রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চেয়ারম্যানসহ প্রায় ২৫-৩০ জন বোর্ড কর্মকর্তা ভবনে অবরুদ্ধ ছিলেন এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল।

গত ১৫ অক্টোবর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। চলতি শিক্ষার্থীরা কেবল অর্ধেক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। বাকি বিষয়ের ফলাফল তাদের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেটের ফলের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়েছিল।

ঢাকা বোর্ডে যাওয়ার আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। তারা ফলাফলকে 'বৈষম্যমূলক' হিসেবে উল্লেখ করে তা পুনরায় মূল্যায়নের আহ্বান জানায়।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিষয় ম্যাপিংয়ে ত্রুটি এবং উত্তরপত্রের অনুপযুক্ত মূল্যায়নের ফলে অন্যায় গ্রেডিং হয়েছে এবং তাদের ফলাফল পুনরায় মূল্যায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবে।

অন্যান্য শিক্ষাবোর্ডেও একই ধরনের প্রতিবাদের খবর পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা সকাল ১১টার দিকে জড়ো হয়ে ফলাফলে বৈষম্যের অভিযোগ এনে স্লোগান দেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

যশোরে কয়েকশ শিক্ষার্থী যশোর শিক্ষা বোর্ড 'ভুয়া ফলাফল' দিয়েছে অভিযোগ তুলে দাবি করেছে, সহজ ইংরেজি পরীক্ষা দিয়েও অনেকে ফেল করেছে।

তবে যশোর বোর্ড বলেছে, শিক্ষার্থীদের এই দাবি 'ভিত্তিহীন'।

কুমিল্লা ও ময়মনসিংহেও শিক্ষার্থীরা ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানালেও কোনো সমাধান না হওয়ায় সন্ধ্যা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকে।

গত ৩০ জুন শুরু হওয়া এবারের এইচএসসি পরীক্ষা জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে স্থগিত হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরীক্ষা পুনরায় নির্ধারণ করেন এবং পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ নিয়ে ১৫ অক্টোবর ফল প্রকাশ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
India visa restrictions for Bangladeshi patients

A wake-up call for Bangladesh to reform its healthcare

India’s visa restrictions on Bangladeshi nationals, while initially perceived as a barrier, could serve as a wake-up call for Bangladesh to strengthen its healthcare system and regain the confidence of its patients.

12h ago