বরিশালের বেশিরভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার

শহীদ মিনার
শহীদ মিনার, বরিশালে শহীদ মিনার, স্কুলে শহীদ মিনার নেই,

দেশের সব শহীদ মিনারে চলছে মহান শোক দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের শেষ সময়ের প্রস্তুতি। ২১ ফেব্রুয়ারির সকালে ফুলে ফুলে সেজে উঠবে শহীদ মিনারের বেদি। প্রভাতফেরিতে অংশ নেবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। তবে বরিশাল জেলার বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীই আছে মনোকষ্টে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশাল জেলার মাত্র ১০ ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। এর মধ্যে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় ২০৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিতেও নেই শহীদ মিনার।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বরিশাল জেলায় ১৫৯২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে ১৫৩টি স্কুলে শহীদ মিনার আছে।

জেলার উপজেলাগুলোর মধ্যে- আগৈলঝাড়াতে ৯৭টি প্রাথমি বিদ্যালয়ের ২টিতে, উজিরপুরে ১৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০টিতে, গৌরনদীতে ১৩১টির মধ্যে ১২টিতে, সদর উপজেলায় ২০৩টির মধ্যে ১৩টিতে, বাকেরগঞ্জে ২৮০টির মধ্যে ১৬টিতে, বানারীপাড়ায় ১২৬টির মধ্যে ৫টিতে, বাবুগঞ্জে ১৩৪টির মধ্যে ৩০টিতে, মুলাদীতে ১৪০টির মধ্যে ১৯টিতে এবং হিজলায় ৯২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৮টিতে শহীদ মিনার আছে।

বরিশাল জেলা বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে ১৯৭০ সালে স্থাপিত নাগেরকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এই স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে না।

এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নেওয়াজ মল্লিক জানান, স্কুলে বর্তমানে ১৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শহীদ মিনার না থাকায় শহীদ দিবসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারছেন না। স্কুলের পক্ষ থেকে এখানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য বারবার কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও কাজ হয়নি।

এই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সারা জানান, শহীদ মিনার না থাকায় কেউ স্কুলে এসে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে না।

বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আক্তারুজ্জামান বলেন, 'এখানে নতুন এসেছি। শহীদ মিনারের সংখ্যা না দেখে বলতে পারব না। তবে আমার জানা মতে শহীদ মিনারের জন্য সরকারি পর্যায়ে বাজেট আসে। স্থানীয় পর্যায়েও কেউ যদি শহীদ মিনার নির্মাণ করতে চায় তাহলে করতে পারে।

বরিশালের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ দাশগুপ্ত আশীষ কুমার বলেন বলেন, '১৯৫২ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে শহীদ মিনারের প্রয়োজন। বর্তমান প্রজন্মকে ২১ ফেব্রুয়ারি কেন পালন করা হয় সে সব বিষয়ে জানতে হবে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেখানে শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরি।'

বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রুম্পা শিকদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা উচিত। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়ে এটি করতে হবে। শহীদ মিনার নির্মাণ করতে যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Umama Fatema calls her SAD experience a ‘tragic chapter’

Former spokesperson accuses leadership of corruption and control from Hare Road

1h ago