নতুন বছরে মাতৃভাষায় বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত পাহাড়ের শিশুরা

বান্দরবানে ডনবস্কো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরন অনুষ্ঠানে মারমা ভাষার বই দেখাচ্ছে দুই শিশু। ছবি: মংসিং হাই মারমা/স্টার

বছরের প্রথম দিনে সারা দেশে  প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়। এই রেওয়াজ অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলাতেও বিভিন্ন স্কুলে আজ নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি পার্বত্য এলাকায় চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর শিশুরা প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তাদের মাতৃভাষার বই পেয়েছে। বছরের প্রথম দিনে স্কুলে উৎসবমুখর পরিবেশে নতুন বই পেয়ে ভীষণ আনন্দিত শিশুরা।

২০১৭ সাল থেকে শিশুদের নিজস্ব মাতৃভাষার বই বিতরণ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

আজ সকালে বান্দরবান ডনবস্কো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরন উৎসব অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম। বই বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সীমা দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার বিদ্যালয়ে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রাক প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেনী পর্যন্ত তিন শ্রেণিতে নিজেদের মাতৃভাষায় লেখা ৯৪ জন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হয়েছে।

অভিভাবক য়ইং সানু মারমা ও মার্গরেট ত্রিপুরা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমাদের ভাষার বই দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু এই বই পড়ানোর পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। সরকারের উচিত আমাদের ভাষার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।

বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে ৭উপজেলায় ৪৩৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকে ৬৪০০টি, প্রথম শ্রেণিতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তিনটি করে ৭৯২০টি, দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে  তিনটি করে ৭৫২১টি, তৃতীয় শ্রেণিতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি করে ২৪১০টি এবং চাকমা ভাষার ১৫১১টি, মারমা ভাষার ১৭৫৪৫টি ও ত্রিপুরা ভাষার ৫১৯৫টি বই বিতরণ করা হয়েছে।

বান্দরবানের প্রবীন শিক্ষক ও ভাষা গবেষক ক্যশৈ প্রু খোকা জানান, এখন চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্য সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদেরকেও মাতৃভাষায় শিক্ষা দেওয়া উচিত।

ক্যশৈ প্রু খোকা জানান, তিনি ২০১৯ সালে বান্দরবানে প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে মারমা ভাষার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে পরে প্রশিক্ষণ বন্ধ হয়ে যায়।

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

3h ago