চবি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের প্রতিবাদ, প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দাবি

ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানিয়েছে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক।

প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টায় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ এর উদ্যোগে একটি অনলাইন প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের হলে আক্রমণ, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা ও আক্রান্ত নারী শিক্ষার্থীদেরকে উল্টো সাজা প্রদানের প্রতিবাদে এবং অন্যায় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে এই সভার আয়োজন করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্ড কলেজের শিক্ষক ফাহমিদুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সভার শুরুতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের গ্রান্ড ভ্যালি স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আজফার হোসেন।

বহিষ্কারাদেশপ্রাপ্ত নারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুমাইয়া শিকদার ও রওজাতুল জান্নাত নিশা।

সংহতি বক্তব্য রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জি এইচ হাবীব, সায়মা আলম ও মোশরেকা অদিতি হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা নিত্রা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম রেজা নিউটন ও আল মামুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের ওলিউর সান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির বখতিয়ার আহমেদ, কর্নেল ইউনিভার্সিটির আহমেদ শামীম, ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্কের নাসরিন খন্দকার, ইউনিভার্সিটি অব জরিখ জিনাত হোসেন।

এছাড়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সংসদ সভাপতি মেঘমল্লার বসু, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি দিলীপ রায়, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মিতু সরকার, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আজাদ হোসেন সংহতি বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত থাকতে না পারলেও সংহতি বক্তব্য পাঠিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর রাকিবুল হাসান খান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সায়েমা খাতুন।

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে শেখ হাসিনা হলে বহিরাগত পুরুষ শিক্ষার্থীদের অবৈধ প্রবেশ, ভাঙচুর এবং নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানিমূলক গালিগালাজ ও অনুমতি না নিয়ে ভিডিও ধারণের ঘটনায় আবাসিক শিক্ষার্থীদের আত্মরক্ষার প্রচেষ্টাকে অপরাধ হিসেবে দাঁড় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের তারা মনগড়া অভিযোগে অভিযুক্ত করে বহিষ্কার করেছে। আমরা মনে করি, প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার প্রশাসনিক অক্ষমতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশকে দমন করতে এই অন্যায় পথ বেছে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ও প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা না করে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের এমন শাস্তি প্রদান কেবল অগ্রহণযোগ্যই নয়, নিন্দনীয়ও।

নারী শিক্ষার্থীদের হলে বহিরাগতদের হামলা ও যৌন হয়রানিমূলক আচরণের বিরুদ্ধে এখনো যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেবল চরমভাবে ব্যর্থই হননি, প্রক্টরাল বডির উপস্থিত শিক্ষকরা মেয়েদের ওপরই চড়াও হয়েছেন। এবং পরবর্তীতে প্রক্টর স্বয়ং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে নারী বিদ্বেষী ও যৌন অপবাদমূলক মন্তব্য করেন।

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক দুই দফা দাবি জানিয়েছে— নারী শিক্ষার্থীদের হলে অবৈধ প্রবেশ, ভাঙচুর এবং যৌন হয়রানিমূলক আচরণের ঘটনায় পুনরায় তদন্তের মাধ্যমে জড়িত বহিরাগত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

এছাড়া, শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত করা এবং বহিষ্কার করার জন্য প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা এবং প্রশাসনের ব্যর্থ ও নারী শিক্ষার্থী বিদ্বেষী শিক্ষকদেরকেও দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Reforms, justice must come before election: Nahid

He also said, "This generation promises a new democratic constitution for Bangladesh."

7h ago