বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত শতাধিক

সংঘর্ষে বিএম কলেজের কয়েকটি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। ছবি: টিটু দাস/স্টার

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের শতাধিক আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে ৮২ জন বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি।

বুধবার রাত ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, নগরীর ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের বাসিন্দা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসনুভা চৌধুরী জোয়ার পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে প্রতিবেশী এক পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সোমবার রাতে বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী সমন্বয়ক পরিচয়ে সেই বিরোধ নিরসনে জোয়ার বাসায় গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সেসময় জোয়া সাহায্য চেয়ে ফেসবুকে লাইভ করেন। খবর পেয়ে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা এসে বিএম কলেজের সেই শিক্ষার্থীদের মারধর করেন।

এ ঘটনায় জোয়া গতকাল বরিশাল কোতোয়ালি থানায় অমি, মোস্তাফিজুর রহমানসহ চার যুবকের নামে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাতের ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে গতরাত ১০টার দিকে নগরীর বটতলা এলাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসে করে ঘটনাস্থলে যান। সেসময় বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা সেই বাসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। 

এসময় বাসের চালকসহ ১৫-২০ জন আহত হন বলে নিশ্চিত করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

পরে সহপাঠীদের মারধরের খবর পেয়ে বাস-ট্রাক বোঝাই করে ঘটনাস্থলে যান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে রাত ৪টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন, আবাসিক হল এবং শ্রেণিকক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এসময় কলেজের চারটি বাস ভাঙচুর করা হয়।  

এসময় বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যান বলে জানা গেছে। পরে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৮২ জনকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। তবে তাদের অবস্থা গুরুতর নয়।'

বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিনটি বাস, প্রশাসনিক ভবন, হোস্টেল ও কলেজের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর হয়েছে। কতজন ছাত্র আহত হয়েছেন, তা এখনো জানতে পারিনি।'

কলেজের কোনো গাড়িই হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বলেও জানান তিনি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেনাসদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন, আমরা তাদের সঙ্গে ছিলাম।'

বিষয়টি সমাধানে আজ সকালে বৈঠকে বসেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএম কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) প্রশাসনিক ও আর্থিক পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন ডেইলি স্টারকে জানান, বিএম কলেজে ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএম কলেজ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh, Pakistan, China launch trilateral cooperation mechanism

A working group will be formed to follow up on and implement the understandings reached during the meeting

1h ago