ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা: প্রশ্ন বিক্রির প্রলোভনে তৎপর একটি চক্র

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের অ্যান্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। তবে পরীক্ষার আগের দিন ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে প্রশ্নপত্র সরবরাহের প্রলোভন দেখাচ্ছে একটি চক্র। 

এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, ইতোমধ্যে চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।
 
একইসঙ্গে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের কোনো প্রলোভন বা ফাঁদে না পড়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এবারের পরীক্ষা। দেশব্যাপী সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলবে এ পরীক্ষা। 

তবে পরীক্ষার আগেরদিন একটি চক্র টেলিগ্রামে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছে, যাকে ইতোমধ্যে স্ক্যামার হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট।

টেলিগ্রামের একটি আইডি থেকে প্রশ্ন দেওয়ার কথা জানাচ্ছেন আহমেদ নিলয় নামে এক ব্যক্তি। 

সেই নিলয়কে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে মেসেজ পাঠালে তিনি দ্য ডেইলি স্টারের এ প্রতিবেদককে ভয়েস মেসেজে বলেন, 'তুমি যদি প্রশ্ন নিতে চাও, তাহলে আগে ভর্তি পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড পাঠাও। আমি তোমাকে ডিটেইলস বলে দিচ্ছি।' 

এরপর একটি মেসেজ পাঠান তিনি। যেখানে কিছু শর্ত দিয়ে বলা হয়, 'মোট ৫০ হাজার টাকা প্রশ্নের দাম। আগাম ২০ হাজার টাকা, আর ৩০ হাজার টাকা পরীক্ষা দিয়ে আসার পরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ক্লিয়ার পিক দিতে হবে। ২০ হাজার টাকা+ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের ছবি আজকে বিকেল ৪টার মধ্য জমা দিয়ে গোপন গ্রুপে যুক্ত হতে হবে। এ শর্তে রাজি থাকলে জানাবে, মেসেঞ্জার অ্যাকাউন্টে যুক্ত করে নেব।'

এসব শর্তে রাজি থাকার কথা জানালে নিলয় এ প্রতিবেদককে আবার ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে বলেন, 'যদি প্রশ্ন নিতে চাও, তাহলে বিকেল ৪টার মধ্যে প্রবেশপত্র পাঠাও এবং অ্যাডভান্স ২০ হাজার টাকা পাঠাও। প্রশ্ন সন্ধ্যায় আমার হাতে আসবে।' 

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি আমরা অবগত। ইতোমধ্যে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তারা ভেরিফাই করে আমাদের জানিয়েছেন যে, এ চক্রটি স্ক্যামার। চক্রটি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ফাঁদে ফেলার পরিকল্পনা করছে। তারা টাকা নিয়ে পরে কোনো প্রশ্ন দেবে না।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশচন্দ্র বাছার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা জেনেছি চক্রটি ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ফাঁদে ফেলতে চায়। আমরা অভিভাবক এবং ভর্তিচ্ছুদের আহ্বান জানাব, তারা যেন এ ধরনের স্ক্যামের ফাঁদে না পড়েন।'

'অন্যান্য বছরের মতো সঠিকভাবে পরীক্ষা হবে। মেধার ভিত্তিতেই সবাইকে চান্স পেতে হবে। অন্য কোনো উপায়ে ভর্তির ন্যূনতম সুযোগ নেই', যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

7h ago