কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পেতে ইন্ট্রোভার্টরা জেনে নিন যোগাযোগের ৫ কৌশল

ছবি: সংগৃহীত

কর্মক্ষেত্রে সফল হতে হলে প্রয়োজন ফলপ্রসূ যোগাযোগ দক্ষতা। ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী লোকজন প্রায়ই অন্যদের সঙ্গে কথা বলা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে তেমন সাবলীল নন। তেমন হয়ে থাকলে চিন্তিত হওয়ার কিন্তু কারণ নেই, প্রয়োজন নেই জোর করে নিজেকে বহির্মুখী প্রমাণ করার। সব সফল মানুষের, বিশেষ করে অন্তর্মুখী মানুষের আছে স্পষ্টভাবে কোনো কিছু লিখে বোঝানোর ক্ষমতা।

কোথায় কাজ করছেন সেটা তেমন বড় ব্যাপার হবে না, যদি আপনি চিন্তাশীল ও কৌশলী হতে পারেন লেখার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে আরো উন্নতি করতে জেনে নিন হার্ভাড গ্রাজুয়েট ও নিউরোসায়েন্টিস্ট জুলিয়েট হানের এই পরামর্শগুলো-

১. আপনার ম্যাসেজের জন্য সঠিক ফরম্যাট বাছুন

কোনো পরিকল্পনা বা অনুরোধ নিয়ে যোগাযোগের আগে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য সবচেয়ে ভালো ফরম্যাটটি খুঁজে বের করুন। যেমন- জটিল বিভিন্ন ডাটা আছে এমন বিভিন্ন গবেষণাকর্ম শেয়ার করতে হলে পাওয়ারপয়েন্টে চার্ট ও ছবি উপস্থাপন সবচেয়ে ভালো আনুষ্ঠানিক উপায় হতে পারে। ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর ক্ষেত্রে বিস্তারিত লিখে পাঠিয়ে দিন ইমেইল।

কোনো বিষয়ের অগ্রগতি জানানোর জন্য কিংবা ফিডব্যাক সংগ্রহের জন্য সংক্ষিপ্ত মেইল বা ব্যক্তিকে দেখা করতে বলা যথেষ্ঠ।

২. জার্গন পরিহার করুন

জটিল কোনো বিষয়ে সহজ ও সাবলীল ভাষায় আলোচনা করাটাই ভালো। জার্গন পরিহার করুন। যতই সার্বজনীন মনে হোক, তা আলোচনায় প্রয়োজন নেই।

গ্রাফিকস ও অ্যানালজি ব্যবহার করতে পারেন। ধরুন, আপনি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আর্থিক পরিকল্পনা করছেন। বাচ্চাদের বইয়ে তো কত ছবি থাকে, ওদের এতে বুঝতে অনেক সুবিধা হয়। আপনিও সেরকম সহজ করে করে ফেলতে পারেন আপনার আর্থিক পরিকল্পনা।

তবে শ্রোতাদের আকৃষ্ট করার জন্য অতিরিক্ত ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দেবেন না। দরকার না হলে কোনো তথ্য উল্লেখের প্রয়োজন নেই।

৩. শ্রোতাদের বোঝার কাজটা সহজ করে দিন

যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তারা অনেকে সারাদিনই বিভিন্ন ইমেইল ও ডকুমেন্ট পড়তে থাকেন। তাই কোনোকিছু পাঠানোর আগে কেন যোগাযোগ করছেন সেটি মনে করিয়ে দিন। ইমেইল ফরমেট করে নিন, যাতে করে ফোন স্ক্রিনেও সহজেই পড়া যায়। ছোট ও আকর্ষণীয় বাক্যে মেইল লিখুন।

কাজগুলোর কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করবেন। যেমন- কোথায় কী লাগবে, কীভাবে করতে হবে, ডেডলাইন কবে হবে ইত্যাদি। যদি ম্যাসেজ এক পৃষ্ঠার বেশি হয়, সেক্ষেত্রে এটাকে আলাদা ডকুমেন্ট আকারে যুক্ত করবেন এবং ইমেইলে হাইলাইটস বা সারসংক্ষেপ উল্লেখ করে দেবেন।

সবাই সবসময় প্রেক্ষাপট নাও জানতে পারে। তাই একেবারে প্রাথমিক কিছু তথ্য সবাইকে জানিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। এতে সবাই একটা জায়গা থেকে শুরু করতে পারবে।

৪. আপনার কাজ সম্পর্কে জানান দিন

বিতর্কিত বা বিতর্ক সৃষ্টির আশঙ্কা আছে, এমন বিষয়ে অন্যদের আপনার চিন্তা ও কর্মের প্রক্রিয়াগুলো জানান। হতে পারে সেটি বাজেট তৈরি কিংবা কোম্পানির কোনো বিভাগের সংস্কার কার্যক্রম। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে ও মানুষ দেখবে আপনি বিভিন্ন দিক থেকে ব্যাপারটি দেখছেন ও ভাবছেন৷ বিভিন্ন বিষয়ের ভেতর কীভাবে সমন্বয় করছেন ও বড় সিদ্ধান্তগুলোর ক্ষেত্রে কীভাবে প্রেক্ষাপট সবাইকে বোঝাতে পারছেন সেটি বোঝা যাবে তখন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মূল্যায়ন বা ফিডব্যাক দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। কারো কোনো পরামর্শ থাকলে তা টুকে রাখুন।

৫. লিখুন মূল্যমান বিচার করে

সবকিছুর পর আপনি এটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন যে, আপনি কাজের জায়গায় দৃঢ় ও সক্ষম রয়েছেন৷ কোনো কিছু পাঠানোর আগে তাড়াহুড়ো করবেন না। টাইপো, ব্যাকরণিক ভুল ও সংখ্যানুক্রমিক ভুল চেক করে নেবেন।

লেখায় অপ্রয়োজনীয় ঠাট্টা ও রসিকতা করবেন না। এই বিষয়গুলো লেখায় ভালো করে ফুটে ওঠে না। বিশেষ করে যারা আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনে না তারা এসব বুঝবে না। শব্দসংখ্যা, বাক্যসংখ্যা এমনকি সম্পূর্ণ পরিকল্পনাটি যতটা পারবেন সংক্ষেপ করে প্রকাশ করুন। এরপর নিজেকেই প্রশ্ন করুন: 'আমার পরিকল্পনা বা থিসিস এরপরও ঠিকঠাক আছে কি?'

সিএনবিসি অবলম্বনে গ্রন্থনা করেছেন মাহমুদ নেওয়াজ জয়

Comments

The Daily Star  | English

Thousands of crores of taka of citizens wasted on unnecessary projects: commerce adviser

The adviser, however, added that liabilities of foreign-funded projects should still be repaid

37m ago