শাদাব ঝলকে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে টিকে রইল পাকিস্তান

খেলার শুরুতেই পাকিস্তান পড়েছিল চরম সংকটে। প্রোটিয়া পেসে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল তাদের টপ অর্ডার। এরপর ইফতেখার আহমেদ আর শাদাব খান মিলে বদলে দেন গোটা ম্যাচের ছবি। বড় পুঁজি নিয়ে পরে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বল হাতেও জ্বলে উঠেন শাদাব। বৃষ্টি বিরতির পর কঠিন হয়ে পড়া লক্ষ্য আর মেলাতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।

বৃহস্পতিবার সিডনিতে ডার্ক ওয়ার্থ, লুইস ও স্টার্ন মেথডে (ডিএলএস) দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৩  রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। আগে ব্যাটিং বেছে ৪৩ রানে ৪ উকেট হারালেও ইফতেখারের ৩৫ বলে ৫১ আর শাদাবের ২২ বলে ৫২ রানে ১৮৫ রানের পুঁজি পেয়ে যায় বাবর আজমের দল। জবাবে প্রোটিয়ারা ৯ ওভারে  ৪ উইকেটে ৬৯ রান আনার পর নামে বৃষ্টি। ৫০ মিনিট পর খেলা শুরু হলে ১৪ ওভারে লক্ষ্য ঠিক হয় ১৪২ রানের। টেম্বা বাভুমার দল ৯ উইকেট হারিয়ে করতে পারে  ১০৮  রান।

দলের জয়ে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে নায়ক শাদাব। ব্যাট হাতে ঝড়ো ফিফটির পর ১৬ রানে ২ উইকেট নেন তিনি। ঝড় তুলা বাভুমা আর মার্কামকে আউট করে খেলার মোমেন্টাম এনে দেন পাকিস্তানের দিকে। এই জয়ে সেমিফাইনাল সমীকরণে এখনো টিকে রইল পাকিস্তানিরা। তবে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের সঙ্গে জেতার পাশাপাশি ভারতের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের জয় চাইতে হবে তাদের। 

১৮৬ রান তাড়ায় নেমে প্রথম ওভারেই বড় ধাক্কা খায় প্রোটিয়ারা। ছন্দে থাকা কুইন্টেন ডি কক শাহিন আফ্রিদির বলে ধরা দেন কিপারের গ্লাভসে।  রাইলি রুশো এক ছক্কায় ঝড়ের আভাস দিলেও নিভে যান তৃতীয় ওভারে।

কিন্তু দলকে ঠিকই উড়ন্ত শুরু পাওয়ে দেন বাভুমা। এইডেন মার্কামকে নিয়ে তুলেন ঝড়। তৃতীয় উইকেটে ২৭ বলে তারা যোগ করেন ৪৯ রান।

মাত্র ১৯ বলে ৪ বাউন্ডারি এক ছক্কায় ৩৬ করে শাদাবের লেগ স্পিনে কিপারের হাতে ক্যাচ দেন বাভুমা। ওই ওভারেই শাদাবের গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান মার্কাম। খানিক পর আসে বৃষ্টি। তখন ডিএলএস মেথডে ১৫ রান পিছিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। শাদাবের ওই ওভারটিই যেন ঠিক করে দেয় ম্যাচের গতিপথ।

প্রায় ৫০ মিনিট পর যখন আবার খেলা শুরু হয় তখন ৩০ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য ঠিক হয় ৭৩ রানের। বৃষ্টির পর নেমে শাদাবের ওভারে ছক্কা-চারে ১৪ রান আনেন ট্রিস্টিয়ান স্টাভস। শাহিনের পরের ওভারে দুই বাউন্ডারিতে ঝাঁজ দেখান হেনরিক ক্লাসেন। কিন্তু পঞ্চম বলে ছক্কার চেষ্টায় আকাশে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন তিনি।

এরপরই ছন্দ হারায় তাদের ইনিংস। ডেভিড মিলার না থাকার অভাব অনুভূত হয় প্রবলভাবে। ওয়েইন পারলেন নেমে ফিরেন দ্রুতই। স্টাভসও পরে  মেটাতে পারেননি দলের দাবি। মোহাম্মদ ওয়াসিম, হারিস রউফরা তীব্র ঝাঁজ দেখিয়ে জারি রাখেন চাপ। ম্যাচ জমাতে পারেনি প্রথম বিশ্ব শিরোপার স্বপ্নে ছুটতে থাকা প্রোটিয়ারা।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে ইনিংসের একদম চতুর্থ বলেই বিদায় মোহাম্মদ রিজওয়ানের। পারনেলের বলে এক বাউন্ডারি মেরেই বোল্ড হয়ে যান রিজওয়ান। তিনে নেমে এরপর ঝড় শুরু করেন মোহাম্মদ হারিস।

তার সৌজন্যে পাওয়ার প্লেতে উড়ন্ত শুরু পেয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। উড়তে থাকা হারিসকে থামান নরকিয়া। ১১  বলে ২ চার, ৩ ছক্কায় ২৮ করে নরকিয়ার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি।

পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর টিকে ছিলেন, যদিও দ্রুত রান আনতে পারছিলেন না। ১৫ বলে ৬ করা বাবরকে থামান এনগিদি।  চারে নামা শান মাসুদও ফেরেন নরকিয়ার বলে। ৭ম ওভারে ৪৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাকফুটে চলে যায় পাকিস্তান।

তাদের সেই ডুবন্ত পরিস্থিতি থেকে টেনে তুলেন ইফতেখার। প্রথমে মোহাম্মদ নাওয়াজকে নিয়ে আনেন ৫২ রানের জুটি। ২২ বলে ২৮ করা নাওয়াজকে এলবিডব্লউতে কাবু করেন চায়নাম্যান তাবরাইজ শামসি। তখনই শাদাবের দুর্দান্ত ঝড়ো ইনিংস। নেমেই  বদলে দেন ম্যাচের ছবি। তার মোড় ঘোরানো ব্যাটিং পাকিস্তানকে নিয়ে যায় বড় পুঁজির দিকে।

মাত্র ২০ বলে ফিফটি করা শাদাব ২২ বলে ৩ চার, ৪ ছক্কায় করেন ৫২। ৩৫ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ইফতেখার করেন ৫১ রান। এই দুজন মাঝের ওভারে মাত্র ৩৬ বলে যোগ করেন ৮২ রান। দেড়শো রানও এক সময় অনেক বড় দেখতে থাকা পাকিস্তান ছাড়িয়ে যায় একশো আশির ঠিকানাও। ম্যাচ জিতে সেমির নিভু নিভু আশাও টিকে থাকল তাদের।

Comments

The Daily Star  | English

Political clashes, mob attacks leave 25 dead in July 2025: MSF

The report, based on news from 18 media outlets and verified by rights activists, also noted an alarming rise in mob attacks, recording 51 incidents last month

26m ago