রাহুল-কোহলির ফিফটিতে বাংলাদেশ পেল বড় রানের লক্ষ্য

তাসকিন আহমেদ শুরুতে দেখালেন ঝলক। হাসান মাহমুদ তুলে নিলেন উইকেট। লম্বা সময় পর্যন্ত ভারতের রানের চাকা নিয়ন্ত্রণে রাখল বাংলাদেশ। কিন্তু শরিফুল ইসলামের একটি খরুচে ওভারের পর পাল্টে গেল চিত্র। এলোমেলো হয়ে পড়ল বাংলাদেশের বোলিং। কেএল রাহুল আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পেলেন হাফসেঞ্চুরি। একপ্রান্ত আগলে বিরাট কোহলিও পেলেন ফিফটি। মাঝে ক্যামিও ইনিংস খেললেন সুরিয়াকুমার যাদব। তাতে ফুলেফেঁপে উঠল ভারতের সংগ্রহ।
বুধবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে বড় পুঁজি পেয়েছে ভারত। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৪ রান তুলেছে তারা। এই লক্ষ্য পেরিয়ে জেতা বাংলাদেশের জন্য ভীষণ কঠিন চ্যালেঞ্জ।
ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬৪ রান করেন ছন্দে থাকা কোহলি। ৪৪ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৮ চার ও ১ ছক্কা। রাহুল ৩২ বলে ৫০ রান করেন ৩ চার ও ৪ ছক্কায়। সুরিয়াকুমার ৪ চারে ৩০ করেন ১৬ বল মোকাবিলায়।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে সফল ছিলেন তরুণ পেসার হাসান। কিন্তু ৪৭ রান দিয়ে ফেলেন তিনি। ২ উইকেট নিতে টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দেন ৩৩ রান। উইকেট না পেলেও তারকা পেসার তাসকিন ৪ ওভারে দেন মাত্র ১৫ রান। তবে ভীষণ খরুচে ছিলেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। তিনি দেন ৫৭ রান। উইকেটহীন মোস্তাফিজুর রহমানের ৪ ওভারে ভারত নেয় ৩১ রান।
তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে রোহিত শর্মার ক্যাচ হাতে জমাতে ব্যর্থ হন হাসান। পরের ওভারে তার হাতেই বল তুলে দেন সাকিব। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান তিনি দেন দারুণভাবে। দ্বিতীয় বলেই সাজঘরের পথ দেখান রোহিতকে। তাসকিনের বিপরীতে বেশ কয়েকটি ডট দিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিলেন ভারতের দলনেতা। এরপর পান জীবন। দ্বিতীয় সুযোগ কাজে লাগিয়ে খোলস ভাঙার চেষ্টা দেখা যায় তার মধ্যে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে থামে তার ইনিংস।
ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে জায়গা করে মারতে চেয়েছিলেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত। কিন্তু তরুণ ফাস্ট বোলার হাসানের শর্ট বল বেশি উঁচুতে ভাসাতে পারেননি। আপারকাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ইয়াসির আলি রাব্বির তালুবন্দি হন তিনি। ৮ বলে রোহিতের রান ২। দলীয় ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।
রোহিত সাজঘরে ফেরার পর জুটি বাঁধেন রাহুল ও কোহলি। দুজনে মিলে রানের চাকা সচল করেন। নিয়মিত বাউন্ডারি আদায় করে নেন তারা।
টপ এজ হয়ে শর্ট ফাইন লেগে মোস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দেন রাহুল। কোহলির সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৭ বলে ৬৭ রান যোগ করেন তিনি। বিশ্বকাপে আগের তিন ম্যাচেই বিবর্ণ ছিলেন তিনি। এদিন রাখেন সামর্থ্যের ছাপ। দশম ওভারে তিনি যখন সাকিবের বলে আউট হন, ততক্ষণে শুরুর ধাক্কা সামলে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় ভারত।
নবম ওভারে শরিফুলের ওপর তোপ দাগেন রাহুল। হাঁকান ২ ছক্কা ও ১ চার। সব মিলিয়ে ওই ওভারে আসে ২৪ রান। সেসময় থেকে আলগা হতে থাকে বাংলাদেশের বোলারদের চাপ।
সুরিয়াকুমার ক্রিজে গিয়েই মারতে শুরু করেছিলেন। ১৩তম ওভারে তার আগ্রাসনের শিকার হন তরুণ পেসার হাসান। ৩ চারসহ ওই ওভার থেকে ভারত আনে ১৪ রান। পরের ওভারেই অবশ্য বোল্ড হয়ে সুরিয়াকুমার মাঠ ছাড়েন। বাঁহাতি স্পিনার সাকিবের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ১৬ বলে ৪ চারে ৩০ রান করে আউট হন সুরিয়াকুমার। ভাঙে কোহলির সঙ্গে তার ২৫ বলে ৩৮ রানের জুটি।
হার্দিক পান্ডিয়া ও আকসার প্যাটেলকে দ্রুত ফেরান হাসান। মাঝে দিনেশ কার্তিক হন রানআউট। তবে কোহলি খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন আপন ছন্দে। ৩৭ বলে ফিফটি পূরণ করেন তিনি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটিতে আসে ১১ বলে ২৭ রান। ফলে বাংলাদেশকে বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় ভারত।
Comments