কোন জবাবই দিতে পারল না বাংলাদেশ

Anrich Nortje
১০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে দেন আনরিক নরকিয়া

রাইলি রুশোর বিস্ফোরক সেঞ্চুরি, কুইন্টেন ডি ককের ঝড়ো ফিফটিতে দুইশো ছাড়িয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। পাহাড় ডিঙানোর ভীষণ কঠিন চ্যালেঞ্জে নেমে প্রথম দুই ওভার ছাড়া বাংলাদেশ দেখাতে পারেনি কোন ঝাঁজ। আনরিক নরকিয়ার গতির পর কেশব মহারাজ, তাবরাইজ শামসিদের স্পিনেও কাবু হয়ে ডুবেছে সাকিব আল হাসানের দল।

বৃহস্পতিবার সিডনিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০৪  রানের বিশাল হেরেছে বাংলাদেশ। রুশোর-ডি কক তাণ্ডবে প্রোটিয়াদের ২০৫ রানের জবাবে ১০১ রানে থেমে যায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হিরো রুশো ৫৬ বলে করেন ১০৯ রান, ডি কক ৩৮ বলে করেন ৬৩। বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে দিতে ১০ রানে ৪ উইকেট পান গতিময় পেসার নরকিয়া।

বিপুল রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই উড়ন্ত শুরু চলে এসেছিল। কাগিসো রাবাদার বলে বাউন্ডারি মেরে সৌম্য সরকারকে স্ট্রাইক দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মুখোমুখি প্রথম দুই বলেই দারুণ দুই ফ্লিকে ছক্কা মেরে দেন সৌম্য। দুজনেই অবশ্য টিকতে পারেননি। 

তৃতীয় ওভারে আনরিক নরকিয়ার অফ স্টাম্পের বাইরের প্রথম বলটি ঘুরাতে গিয়ে ব্যাটের নিচের কানায় লেগে কিপারের হাতে ধরা দেন সৌম্য। ৬ বলে ১৫ রান করে থামেন এই ওপেনার। দুই বল পরই প্রায় দেড়শো কিলোমিটার গতির বলে স্টাম্প উড়ে যায় ৯ বলে ৯ করা শান্তর। 

চারে নেমে অধিনায়ক সাকিব দলের ভরসা হতে পারেননি। তাকেও ছাঁটেন নরকিয়া। তবে রিভিউ নিলে রক্ষা পেতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। নরকিয়ার বল সরে খেলতে গিয়ে পায়ে লাগান। আম্পায়ার রড টাকার কিছুটা ভেবে আঙুল তুলে দেন। সতীর্থ লিটনের সঙ্গে আলোচনা করে আর রিভিউ না নিয়ে বেরিয়ে যান ৪ বলে ১ রান করা সাকিব। পরে বল ট্রেকিং প্রযুক্তিতে দেখা যায় বল পিচড করেছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। 

আফিফ হোসেন নেমেও ফেরেন তড়িঘড়ি। ৫ বলে কেবল ১ রান করে রাবাদার বলে সহজ ক্যাচ দেন মিড অফে। ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে যায় বাংলাদেশ। 

ওয়েইন পারনেলকে ছক্কায় শুরু করা লিটন রাবাদার বলেও আরেকটি ছয়ের চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান। লিটনের সঙ্গে ২৩ বলে ১৯ রানের মন্থর এক জুটির পর ফিরে যান অফ স্পিনিং অপশন হিসেবে একাদশে আসা মিরাজ। তাবরাইজ শামসির রিস্ট স্পিনে উড়াতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৩ বলে ১১ করে। 

মোসাদ্দেক হোসেন টিকেছেন ৩ বল। কোন রান করার আগেই কেশব মহারাজের বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে হয়েছেন স্টাম্পিং। কিপার নুরুল হাসান সোহান বাজে কিপিংয়ের পর ব্যাট হাতেও ছিলেন ব্যর্থ। শামসির স্পিনে ৬ বলে ২ রান করে ফেরেন তিনি। 

বাকিদের ব্যর্থতায় শুধু রান করছিলেন লিটন। রান তাড়ায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ডানা মেলার অবশ্য সুযোগ পাচ্ছিলেন না। লিটন ফেরেন ১৪তম ওভারে। ৩১ বল খেলে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার আউট হন ৩৪ রান করে। বাকি দুই উইকেট তুলে নিতে বেশি সময় নেননি নরকিয়ারা। 

এর আগে প্রোটিয়া ইনিংস জুড়েই যেন ছিল চার-ছয়ের গল্প। প্রথম ওভারে টেম্বা বাভুমাকে তুলে নিয়ে ভালো শুরুর আভাস দিলেও ডি কক-রুশো মিলে ছারখার করে দেন টাইগার বোলিং। 

দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র ৮৫ বলে ১৬৮ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন তারা। এই দুজনের সামনে বাংলাদেশের কোন বোলারই দাঁড়াতে পারেননি। তাসকিন প্রথম ওভারে ২ রান দিয়ে এক উইকেট পেলেও পরের ওভার থেকেই ছিলেন খরুচে। তিনটি নো বলও করেন তিনি।  তিন ওভার থেকে তিনি দিয়ে দেন ৪৬ রান। সাকিব তার প্রথম ওভারেই দিয়ে ফেলেছিলেন ২১ রান। 

বাকি সবার খরুচে দিনে বরং ভাল বল করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার ৪ ওভার থেকে আসেনি ২৫ রানের বেশি। ১০ ওভারের পর দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ছিল ৯১ রান। ১৫ ওভার শেষে সেটা হয়ে যায় ১৭১ রান। শেষের ৫ ওভারে আবার ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩৪ রান দেয় বাংলাদেশ। 

কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। দুশো রানের উপর পুঁজি এনে ফেলায় বাংলাদেশ ইনিংস বিরতিতেই যেন পাচ্ছিল বড় হারের শঙ্কা। 
 

Comments

The Daily Star  | English

Chhatra Dal rally begins at Shahbagh

BNP’s Acting Chairman Tarique Rahman joined the rally virtually as the chief guest

2h ago