আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

ঘটনাবহুল ম্যাচ স্মরণীয় করলেন সাকিব-শান্ত 

শেষে গিয়ে কিছুটা নাটকীয়তা হলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে বাংলাদেশ পেল দারুণ জয়।

দিল্লি থেকে

ঘটনাবহুল ম্যাচ স্মরণীয় করলেন সাকিব-শান্ত 

শেষে গিয়ে কিছুটা নাটকীয়তা হলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে বাংলাদেশ পেল দারুণ জয়।
ঘটনাবহুল ম্যাচ স্মরণীয় করলেন সাকিব-শান্ত
ছবি: এএফপি

অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে করা টাইমড আউটে ম্যাচের সব আলোচনা নিজের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট করতে নেমে সেই ম্যাথিউসের বলে তার ক্যাচ পড়ল। ৭ রানে জীবন পেয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক এরপর খেললেন আগ্রাসী মেজাজে। সেই ম্যাথিউসের বলেই তিনি আউট হয়েছে পরে। তবে ততক্ষণে  বড্ড দেরি করে ফেলেছে লঙ্কানরা।  আরেক দিকে চরম রান খরায় থাকা নাজমুল হোসেন শান্তও জ্বলে উঠছিলেন, কোণঠাসা অবস্থা থেকে দিলেন হুঙ্কার। শেষে গিয়ে কিছুটা নাটকীয়তা হলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে বাংলাদেশ পেল দারুণ জয়। 

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সোমবার রাতটা আনন্দে রাঙালো বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে পেল দ্বিতীয় জয়। 

লঙ্কানদের করা ২৭৯ রান টপকাতে অধিনায়ক সাকিবই নিলেন অগ্রনী ভূমিকা। ৬৫ বলে খেললেন ৮২ রানের ইনিংস। বাজে ছন্দ দূর করে শান্ত ১০১ বলে করলেন ৯০ রান। এই দুজনের ১৬৯ রানের জুটির পর টানা কয়েকটি উইকেট পড়লেও তরি ডুবেনি বাংলাদেশের। 

চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে  লফটেড শটে দুই চারে ইনিংস শুরু করে আরও একবার বাজে শটে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। দিলশান মাধুশঙ্কার বলে ৫ বলে ৯ রানে থেমে যান তিনি। 

লিটন দাস একটা পুল শট মারতে গিয়ে শুরুতেই পেশিতে টান পান। উঠে দাঁড়িয়ে পরে কাসুন রাজিতাকে দুই ছক্কায় উড়ান। স্ট্রেট একটা ছক্কা মারতে গিয়ে আরও একবার টান পড়ে। কিছুক্ষণ শশ্রুষা নেওয়ার পর বেশিক্ষণ টেকেননি। মাধুশঙ্কার দারুণ এক ইয়র্কারে এলবিডব্লিউতে কাবু লিটন ফেরেন ২৩ রান করে। 

সাকিব ক্রিজে আসতেই তুমুল আওয়াজ উঠে গ্যালারিতে। কিছু তার পক্ষে, বেশ কিছুই বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদেরও তাকে কিছু একটা বলতে দেখা যায়। সবচেয়ে উত্তেজনা তৈরি হয় যখন ম্যাথিউস বল করতে আসেন। ম্যাথিউসের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে একবার পরাস্ত হওয়ার পর ক্যাচ দিয়ে দেন শর্ট কাভারে। ৭ রানে থাকা সাকিবের ক্যাচ রাখতে পারেননি আসালাঙ্কা। 

জীবন পেয়ে বাজে ছন্দে থাকা সাকিব এরকম দেন হুঙ্কার। শান্তর সঙ্গে জমে যায় তার জুটি। দারুণ খেলে দুজনেই সমীকরণ করে দিতে থাকেন সহজ। মাঠে থাকা শিশিরও পক্ষে যায় বাংলাদেশের। বল গ্রিপ করতে ভুগতে থাকা লঙ্কান বোলারদের উপর চড়াও হন তারা। 

ক্রিজে দুই বাঁহাতি থাকার পরও অফ স্পিনারদের আক্রমণে আনতে পারছিলেন না লঙ্কান অধিনায়ক। কারণ বোলাররা বলই গ্রিপ করতে ভুগছিলেন। এমনকি পেসারদের বলও হাত ফসকে বের হচ্ছিল।  সুযোগটা কাজে লাগাতে একদম ভুল করেননি সাকিব-শান্ত। দুজনেই বেছে নেন আক্রমণের পথ। কোন বোলারকেই থিতু হতে দেননি। 

মাঝের ওভারে ভেজা বল বদলানো নিয়ে আবার লম্বা সময় বন্ধ থাকে খেলা। সিদ্ধান্ত নিয়ে অখুশি লঙ্কানরা শরীরী ভাষায় বারবার জানালো হতাশা। পরে আলগা বোলিংয়ে সেই হতাশা ক্রমে বাড়তে থাকে তাদের। জুটি একশো ছাড়িয়ে পার হয়ে যায় দেড়শো। জেতার চাহিদা নেমে আসে দুই অঙ্কের নিচে। 

ম্যাচ একদম পকেটে থাকা অবস্থায় গিয়ে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ম্যাথিউস তার নতুন স্পেলে এসে স্লোয়ার বলে কাবু করেন সাকিবকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক আউট হন ৬৬ বলে ৮২ করে। তৃতীয় উইকেট জুটি ভাঙে ১৪৯ বলে ১৬৯ রান তুলে। সাকিবকে আউট করে হাতে ঘড়ির ঈশারা দেন ম্যাথিউস।  

খানিক পর শান্তকেও ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড করে দেন ম্যাথিউস। পর পর দুই উইকেট ফেললেও জয় তখন একদম নাগালে বাংলাদেশের। নাটক অল্প-বিস্তর যেন তবু ছিলো। মাহমুদউল্লাহও কাজটা শেষ না করে থিকসেনার বলে হয়ে গেলেন বোল্ড। মিরাজও দিলেন ক্যাচ তুলে। তবে এতে কেবল খানিকটা উত্তাপ ছড়িয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

BNP's meet with interim govt: Roadmap for polls demanded

The party also places several demands to Yunus, including removal of 'one or two' members of interim govt, removal of 'partisan judges'

4h ago