শান্ত-মিরাজের ব্যাটে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ
দলীয় ২৭ রানেই দুই ওপেনারের বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। এরপর দলের হাল ধরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দারুণ এক জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ তো সামলেছেনই, একই সঙ্গে দলকেই এগিয়ে নিচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে।
শনিবার ভারতের ধর্মশালায় আইসিসি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় নেমেছে বাংলাদেশ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, ১৯ ওভারে ২ উইকেটে ৯১ রান করেছে তারা। মেহেদী হাসান মিরাজ ৪৪ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ২৪ রানে ব্যাটিং করছেন। এর আগে ৩৭.২ ওভারে ১৫৬ রান তুলে গুটিয়ে যায় আফগানরা।
নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা সচল রাখেছেন মিরাজ। তবে কিছুটা ধীর গতিতে ব্যাট চালাছেন শান্ত। তবে এরমধ্যেই ৬৪ রানের জুটি গড়েছিলেন মিরাজ ও শান্ত। বয়সভিত্তিক দল থেকে একত্রে খেলা এই দুই ব্যাটার ৫৬ বলে পূর্ণ করেছিলেন জুটির ফিফটি।
তবে আফগানরা ফিল্ডিংয়ে আরও কিছুটা সূক্ষ্ম হলে বড় বিপদেই পড়তে পারতো বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ১৬ রানে পয়েন্টে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু সে ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি নজিবুল্লাহ জাদরান। ফলে বেঁচে যান মিরাজ। এরপর ব্যক্তিগত ২৩ রানেও থার্ডম্যান সীমানায় ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ক্যাচও ধরতে পারেননি মুজিব-উর-রহমান।
এদিন শুরুটা ভালো করলেও ফারুকির করা পঞ্চম ওভারে রানআউট হয়ে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। পয়েন্টে বল ঠেলেছিলেন লিটন। রান নিতে চেয়ে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে যান তানজিদ। লিটন আগ্রহী না হলে ফিরতে গিয়েও ফিরতে পারেননি। নজিবুল্লাহ জাদরানের দারুণ থ্রোতে স্টাম্প ভাঙলে ব্যক্তিগত ৫ রানে সাজঘরে ফেরেন তানজিদ।
এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটনও। ফারুকির বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ১৮ বলে ২টি চারের সাহায্যে ১৩ রান করেন তিনি। এরপর দলের হাল ধরেন শান্ত ও মিরাজ।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল আফগানিস্তান। ৪৭ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। পেসারদের স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলেছিলেন তারা। তবে স্পিনার আসার পরই নামে অস্বস্তি। টাইগারদের সাফল্যও আসে দ্রুত। নিজেদের দ্বিতীয় ওভারেই এই জুটি ভাঙেন সাকিব। অফ স্টাম্পের বাইরে রাখা বলে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইব্রাহিম। ২৫ বলে ১টি ছক্কা ও ৩টি চারে ২২ রান করেন তিনি।
ইব্রাহিমের বিদায়ের পর রহমত শাহকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন গুরবাজ। ৩৬ রানের জুটিও গড়েন তারা। এ জুটিও ভাঙেন সাকিব। তাকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে টাইমিংয়ে হেরফের করে সিলি মিড অফে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রহমত। ২৫ বলে ১৮ রান করেন তিনি। এরপর অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদিকে কিছুটা মন্থর গতিতে আগাতে থাকেন গুরবাজ। ৫৭ বলে ২৯ রানের এই জুটি গড়েন তারা। জুটি ভাঙেন মিরাজ। তাকে স্লগ করতে গিয়ে আকাশে তুলে তাওহিদ হৃদয়ের তালুবন্দি হন তিনি। তার ব্যাট থেকেও আসে ১৮ রান।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে টাইগারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন গুরবাজ। শেষ ১১ ইনিংসের যে দুটিতে ত্রিশ পার করেছিলেন সে দুইবারই সেঞ্চুরি আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই ভীতি ছড়াচ্ছিলেন এই ব্যাটার। এদিন আবার ওয়ানডে ক্রিকেটে এক হাজার রানও পূর্ণ করেন তিনি। যা দেশটির হয়ে দ্রুততম হাজার রানের রেকর্ড। তবে বড় ক্ষতি করার আগে তাকে ছাঁটাই করেন মোস্তাফিজুর রহমান। অবশ্য ডিপ কাভার থেকে ছুটে এসে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন তানজিদ। ৬২ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রান করেন গুরবাজ।
নাজিবুল্লাহ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। তাকে ছাঁটাই করে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন সাকিব। তার বলে ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান নাজিবুল্লাহ (৫)। নবিও দায়িত্ব নিতে পারেননি। তাসকিন আহমেদের অফ স্টাম্পের বাইরে রাখা বলে কাট করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প ভাঙে নবির (৬)। ফলে লেজ বেরিয়ে যায় আফগানদের। বড় চাপে পড়ে যায় আফগানরা।
এরপর আর প্রতিরোধ করতে পারেনি কোনো ব্যাটারই। আজমতুল্লাহ ওমরজাই কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন ৪টি বাউন্ডারি মেরে ২২ রান করেছিলেন তিনি। বড় ক্ষতি করার আগে তাকে বোল্ড করে দেন শরিফুল ইসলাম। ফলে দেড়শর কাছেই থাকে বাংলাদেশের লক্ষ্য।
Comments