চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ব্যাটিং-বোলিং ব্যর্থতার অস্বস্তি বাংলাদেশের

ছবি: বিসিবি

বেহাল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ দল গুটিয়ে গেল কোনোক্রমে দুইশ পেরিয়ে। এরপর বোলিংও বিবর্ণ হওয়ায় ১৫ ওভার বাকি থাকতে হার মেনে নিল তারা। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্স নাজমুল হোসেন শান্তর দলের জন্য হলো ভীষণ অস্বস্তির।

আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টাইগারদের স্বপ্ন বড়। দেশ ছাড়ার আগে গত বুধবার গণমাধ্যমকে অধিনায়ক শান্ত বলেছেন, 'আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে যাচ্ছি।' কিন্তু সোমবার পাকিস্তান শাহিনসের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্সে উল্টো চিত্র ফুটে উঠেছে। কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শাহিনসের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ দল। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৩৮.২ ওভারে মাত্র ২০২ রানে অলআউট হয়। অর্থাৎ তাদের ইনিংসের আরও ৭০ বল বাকি ছিল। জবাবে ৩৪.৫ ওভারে স্রেফ ৩ উইকেট খুইয়ে ২০৬ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে শাহিনস।

সাদামাটা লক্ষ্যে নামা শাহিনস স্কোরবোর্ডে ৬৯ রান তুলতে তাদের ৩ উইকেট ফেলে দেয় বাংলাদেশ। সপ্তম ওভারে ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান ২৩ রান করে শিকার হন পেসার নাহিদ রানার। তিনে নামা ওমাইর ইউসুফের সংগ্রহ ১ রান। দশম ওভারে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের বলে উইকেটরক্ষক জাকের আলী অনিকের তালুবন্দি হন তিনি। ১৭তম ওভারে আরেক ওপেনার আযান আওয়াইস থামেন ৩১ রানে। তিনি জাকেরকে ক্যাচ দেন পেসার তানজিম হাসান সাকিবের বলে।

এরপর বাংলাদেশের বোলাররা আর কোনো সাফল্যের দেখা পাননি। তাদেরকে হতাশায় পুড়িয়ে মোহাম্মদ হারিস ও মুবাসির খান তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। চারে নামা হারিস আহত অবসরে যাওয়ার আগে করেন ৭৬ রান। পাঁচে নামা মুবাসির অপরাজিত থাকেন ৬৩ রানে। আবদুল সামাদ ছয়ে নেমে করেন অপরাজিত ১ রান।

বাংলাদেশের পক্ষে একটি করে শিকার ধরেন নাহিদ (২ ওভারে ১১ রান), মিরাজ (৬ ওভারে ৩৯ রান) ও তানজিম (৪ ওভারে ১৫ রান)। তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান যথাক্রমে ২৭ ও ২০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। দুই পেসারই ৫ ওভার করে হাত ঘোরান। সবচেয়ে খরুচে ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। তিনি ৫.৫ ওভারে উইকেটবিহীন থাকেন ৫৬ রান দিয়ে। অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকার ২ ওভারে ১৭ রানে কোনো উইকেট পাননি।

এর আগে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী বাংলাদেশের প্রথম সাতজনের মধ্যে চারজন পান দুই অঙ্কের ছোঁয়া। তবে কেউই ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। এমন ব্যর্থতায় এক পর্যায়ে ১৩৭ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে ফেলে তারা। শেষমেশ কোনোমতে তাদের পুঁজি দুইশ ছাড়ায় লেজের দিকের ব্যাটারদের কল্যাণে।

চারে নেমে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন মিরাজ। ৫৩ বল মোকাবিলায় তিনটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান তিনি। ওপেনার সৌম্যর ব্যাট থেকে আসে ৩৮ বলে চারটি চারে ৩৫ রান। নয়ে নেমে তানজিম করেন ৩০ রান। ২৭ বল খেলে চারটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। মূলত শাহিনসের স্পিনারদের বিপক্ষে ধুঁকেছে টাইগাররা। লেগ স্পিনার উসামা মীর নেন ৪ উইকেট। এছাড়া, বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার সুফিয়ান মুকিম ও অফ স্পিনার মুবাসির পান একটি করে উইকেট।

বাংলাদেশ সবশেষ ওয়ানডে খেলেছে দুই মাস আগে। ক্যরিবিয়ান সফরে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছিল তারা। এরপর ক্রিকেটাররা ব্যস্ত ছিলেন ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগ বিপিএলে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নামার আগে তাই এই প্রস্তুতি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ টি-টোয়েন্টির ঢং থেকে বেরিয়ে আগামী দিনগুলোতে ওয়ানডে মেজাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে তাদের। কিন্তু সেই পরীক্ষায় বাংলাদেশের ব্যাটার-বোলাররা হলেন ব্যর্থ।

আগামী বুধবার পর্দা উঠবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসরের। পরদিন বৃহস্পতিবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই 'এ' গ্রুপের ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয়ে প্রতিযোগিতায় যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English

UK govt unveils 'tighter' immigration plans

People will have to live in the UK for 10 years before qualifying for settlement and citizenship

1h ago