মেসি সমর্থকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রেখেছেন: দিবালা
সৌদি আরবের বিপক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত এক হার। গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দলের কাছে হেরে স্বাভাবিকভাবেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা। শঙ্কা ছিল আসর থেকে ছিটকে যাওয়ার। তখন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি সমর্থকদের বলেছিলেন, তাদের উপর আস্থা রাখতে, তারা হতাশ করবেন না। শেষ পর্যন্ত সেই কথার মর্যাদা রাখতে পেরেছেন মেসি। ফাইনাল শেষে সেটাই মনে করিয়ে দিলেন তার সতীর্থ পাওলো দিবালা।
রোববার রাতে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে ফ্রান্সকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ ব্যবধানে অমীমাংসিত থাকায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। সেখানে দুই দলই একটি করে গোল পেলে শেষ পর্যন্ত ৩-৩ ব্যবধানে সমতায় শেষ হয় দুই পরাশক্তির দ্বৈরথ। এরপর টাইব্রেকারে ফরাসিদের হতাশ করে শিরোপায় চুমু খায় লাতিন দলটি।
রোমাঞ্চকর ফাইনাল শেষে সমর্থকদের কাছে করা মেসির প্রতিজ্ঞার কথা মনে করিয়ে দিয়ে দিবালা গণমধ্যমকে বলেন, 'আমরা তাদের (সমর্থকদের) চারপাশে (লুটিয়ে) পড়ে থাকতে দেব না। লিও আমাদের বলেছিল, "আমরা তাদের (সমর্থক) বলেছি যে আমরা তাদের হতাশ করব না।" আর আমরা তাদের হতাশ করিনিও। এখন আমরা সেখানে (আর্জেন্টিনা) তাদের সঙ্গে একযোগে উদযাপন করতে যাচ্ছি।'
আপাত দৃষ্টিতে এবারের বিশ্বকাপে তেমন বড় কোনো অবদান নেই দিবালার। খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র দুটি ম্যাচে। তাও সেই দুই ম্যাচে খেলতে পেরেছেন মাত্র ১০/১২ মিনিট। কিন্তু ফাইনালে মহাগুরুত্বপূর্ণ এক দায়িত্ব তার কাঁধে তুলে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। আর সেই দায়িত্বটা দারুণভাবেই পালন করেন এই রোমা তারকা।
টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার হয়ে দ্বিতীয় পেনাল্টি নিতে গিয়েছিলেন দিবালা। ঠিক আগেই ফ্রান্সের কিংসলে কোমানের পেনাল্টি ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। দিবালার মতোই বদলি নেমেছিলেন কোমান। তবে দিবালা মিস করলে লিড পেত না আর্জেন্টিনা। তখন হয়তো এত চাপেও পড়ত না ফরাসিরা, হয়তো আহেলিয়া চুয়ামেনিও মারতেন না বাইরে।
সব যদি-কিন্তুর সমীকরণ ঘুরিয়ে দেওয়া সেই শট নেওয়ার আগে দিবালা ভেবেছিলেন নিজের পরিচিত মুখগুলোকে। কার্দোবা, মধ্য আর্জেন্টিনার একটি ছোট্ট শহর, যেখান থেকে উঠে এসেছেন তিনি। রাজধানী বুয়েন্স এইরেস থেকে ৭০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের সেই শহরের কথাই মনে করছিলেন এই ফরোয়ার্ড, ভাবছিলেন নিজ শহরের মানুষদের কথা।
২৯ বছর বয়সী দিবালা যোগ করেন, 'আমি কর্দোবার কথা ভাবছিলাম, কর্দোবার মানুষের কথা, সব কিছুর কথা... বেশ ঠান্ডা ছিল, এটা সহজ ছিল না। কিন্তু মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হয়েছে। ফ্রান্স মিস করে, এরপর আমার পালা। (তবে) লক্ষ্যভেদ করতে পেরেছি, এটা অবিশ্বাস্য। এমন অনুভূতি হয়তো আর কখনো আসবে না। আমরা দারুণ খুশি, জনগণের নিঃস্বার্থ সমর্থন ছিল।'
ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামেও একটি পোস্ট করেন দিবালা। সেখানে লিখেন, 'বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া প্রতিটি শিশুর স্বপ্ন। চলো আর্জেন্টিনা, এগিয়ে যাই!'
Comments