মিরাকল ঘটিয়ে আপনি বিশ্বকাপ জিততে পারবেন না: মরক্কো কোচ
সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে মরক্কো। গ্রুপ ও পর্ব নকআউটে শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের হারিয়ে রীতিমতো ফুটবল বিশ্বকে চমকে দিয়েছে আফ্রিকান দলটি। শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে থেমেছে তাদের স্বপ্নযাত্রা। ম্যাচশেষে দলটির কোচ ওয়ালিদ রেগরাগি বললেন, শুধু মিরাকল বা অঘটনের মাধ্যমে সম্ভব নয় বিশ্বকাপ জয়।
বুধবার রাতে কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কোকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ফ্রান্স। আল বাইত স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এরপর আপ্রাণ চেষ্টা করেও গোল শোধ দিতে পারেনি রেগরাগির শিষ্যরা। দ্বিতীয়ার্ধে আরও একটি গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফরাসিরা। হাল না ছেড়ে আক্রমণের ধারা অব্যাহত রাখে অ্যাটলাসের সিংহরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সাফল্য ধরা দেয়নি তাদের হাতে।
গ্রুপ পর্বে এডেন হ্যাজার্ড-কেভিন ডি ব্রুইনাদের তারকাখচিত বেলজিয়ামকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল মরক্কো। নক আউট পর্বেও অব্যাহত থাকে তাদের সাফল্যযাত্রা। শেষ ষোলোর ম্যাচে টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে দেয় তারা, কোয়ার্টার ফাইনালে পরাস্ত করে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো-ব্রুনো ফার্নান্দেসদের পর্তুগালকে। এই ফলগুলোকে অঘটন বা চমক মানতে নারাজ মরক্কো কোচ। তবে ফাইনালে উঠতে আরও চেষ্টার বিকল্প দেখেন না তিনি।
পরিশ্রম আর সামর্থ্যের সমন্বয়ে কাতারের মাটিতে সেমি পর্যন্ত পৌঁছায় মরক্কো। কিন্তু তারা পেরে ওঠেনি ফ্রান্সের সঙ্গে। এবার না পারলেও ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে রেগরাগি আরও উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা জানান, 'আমার খেলোয়াড়রা সবকিছুই উজাড় করে দিয়েছে এবং যে পর্যন্ত তারা যেতে পারত সেই পর্যন্ত গিয়েছে। আমি খুব করে চেয়েছিলাম ইতিহাস নতুন করে লিখতে। কিন্তু মিরাকল ঘটিয়ে আপনি বিশ্বকাপ জিততে পারবেন না। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই আপনাকে এটা করতে হবে এবং সেটাই আমরা করব।'
ম্যাচটিতে খেলোয়াড়দের চোট ও ক্লান্তি বেশ ভুগিয়েছে মরক্কোকে। দলের অন্যতম প্রধান ডিফেন্ডার নাইফ অগার্দ খেলতে পারেননি চোটের কারণে। আরেক সেন্টার ব্যাক ও অধিনায়ক রোমেইন সাইস চোট নিয়ে মাঠে নামলেও শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠেননি। ফলে প্রথমার্ধের শুরুতেই মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
শারীরিকভাবে মরক্কো পিছিয়ে ছিল উল্লেখ করে রেগরাগি বলেন, 'সকল চোট ও ক্লান্তি সত্ত্বেও সফল হতে আমরা সম্ভাব্য সবকিছুই করেছি এবং সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছি। কিন্তু আমি মনে করি, শারীরিকভাবে আজ (বুধবার) রাতে পিছিয়ে ছিলাম আমরা। আমাদের অনেক খেলোয়াড় ৬০% অথবা ৭০% ফিট ছিল এবং কয়েক ম্যাচ ধরেই তারা এই অবস্থায় আছে।'
মরক্কোর ভক্তদের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে না পেরে ব্যথিত ৪৮ বছর বয়সী এই কোচ, 'মরক্কান মানুষদের জন্য আমরা ব্যথিত, আমরা তাদের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যা অর্জন করেছি, তাতে আমরা খুশি। আমরা অনুভব করছি, আমরা আরও দূরে যেতে পারতাম। কিন্তু এই ছোট ছোট বিষয়গুলো সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নদের সাহায্য করে, অবশ্যই যেটা আমরা এই রাতে দেখলাম।'
Comments