'আমাকে চিমটি কাটুন, মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি'
কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগে মরক্কোকে আর যাই হোক ফেভারিটের কাতারে রাখেননি কেউই। তবে অঘটনের এই আসরে চমকে দিয়েছে আফ্রিকান দলটি। গ্রুপ পর্বে সেরা হয়ে নকআউটে ওঠা ওয়ালিদ রেগরাগির শিষ্যরা স্পেনের পর ছিটকে দিয়েছে আরেক শিরোপাপ্রত্যাশী পর্তুগালকে। তাদের এমন সাফল্যের অন্যতম নায়ক গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। তার বিশ্বাসই হচ্ছে না যে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছেন তারা! ইতিহাস গড়া এই যাত্রা তার কাছে মনে হচ্ছে স্বপ্নের মতো।
শনিবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালে তারকাখচিত পর্তুগালকে ১-০ ব্যবধানে হারায় মরক্কো। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোদের কাঁদিয়ে প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা। ম্যাচের ৪২তম মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন ইউসেফ এন নেসিরি। গোটা একটি অর্ধ পেয়েও সেই গোল শোধ করতে পারেনি পর্তুগিজরা। দারুণ সেভে জোয়াও ফেলিক্স ও রোনালদোর চেষ্টা রুখে মরক্কানদের জয়ে বড় অবদান রাখেন বোনো।
এর আগে গত মঙ্গলবার স্পেনের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচেও গোলবারের সামনে দারুণ নৈপুণ্য দেখান বোনো। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত সময়ে বারবারই দলকে রক্ষা করেন গোল হজমের হাত থেকে। স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ার এই তারকা টাইব্রেকারেও ফিরিয়ে দেন স্প্যানিশদের পেনাল্টি কিক।
পর্তুগালের বিপক্ষে ম্যাচশেষে ৩১ বছর বয়সী গোলরক্ষক সংবাদকর্মীদের বলেন, সেমিতে পৌঁছে তাদেরকে নিয়ে সারা বিশ্বের মানসিকতা বদলে দিতে পেরেছেন তারা, 'আমরাও আপনাদের মতো একই অবস্থায় আছি। আমাকে চিমটি কাটুন, মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু যেমনটা আমাদের কোচ বলেছেন, "আমরা এখানে এসেছি (মরক্কোকে নিয়ে সবার) মানসিকতা বদলে দিতে।" যে হীনমন্যতায় আমরা ভুগতাম, সেটা থেকে মুক্তি দরকার ছিল।'
পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই দল উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন বলেও মনে করেন বোনো, 'একজন মরক্কান খেলোয়াড় বিশ্বের যে কাউকে মোকাবিলা করতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমরা মানসিকতা বদলে দিয়েছি এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এখন জানবে যে একটি মরক্কান দল অলৌকিক ঘটনা ঘটাতে সক্ষম।'
বাঁধভাঙা এই আনন্দের অনুভূতি প্রকাশের জন্য অবশ্য উপযুক্ত ভাষা খুঁজে হয়রান হচ্ছেন তিনি, 'এই মুহূর্ত ভাষায় প্রকাশ করা খুবই কঠিন। আমাদের গোটা দল এবং সমর্থন দিয়ে যাওয়া ভক্তরা, এরাই আমার সবকিছু।'
আগামী ১৫ ডিসেম্বর ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বিশ্বকাপের শিরোপাধারী ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে মরক্কো। কিলিয়ান এমবাপে, অলিভিয়ের জিরুদের তুখোড় আক্রমণ রুখতে সেদিন আরও একবার বোনোর দিকেই চেয়ে থাকবেন অ্যাটলাস সিংহদের ভক্তরা।
Comments