রোনালদোকে একাদশে না রাখায় 'কোনো অনুতাপ নেই' সান্তোসের
সুইজারল্যান্ডের পর মরক্কোর বিপক্ষেও শুরুর একাদশে জায়গা পাননি মহাতারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ফের তাকে বেঞ্চে রাখেন নামান পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। শিরোপাপ্রত্যাশী দলটির কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়ের পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। তবে নিজের অবস্থানে অটল থেকে জানিয়েছেন, কোনো অনুতাপ নেই তার।
শনিবার রাতে আল থুমামা স্টেডিয়ামে মরক্কোর কাছে ১-০ গোলে হেরেছে পর্তুগিজরা। ফলে তারকায় ঠাসা স্কোয়াড নিয়েও কাতার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে তাদের। জমজমাট লড়াইয়ে পার্থক্য গড়ে দেন ইউসেফ এন নেসিরি। তার প্রথমার্ধের লক্ষ্যভেদে পাওয়া লিড শেষ পর্যন্ত ধরে রেখে মরক্কানরা গড়েছে ইতিহাস। আফ্রিকার প্রথম দল হিসেবে তারা উঠেছে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে।
পিছিয়ে পড়ার পর গোল পেতে মরিয়া ছিল পর্তুগাল। তবে রোনালদোর পরিবর্তে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাওয়া তরুণ স্ট্রাইকার গনসালো রামোস করেন হতাশ। আগের ম্যাচে তার রেকর্ড গড়া হ্যাটট্রিকেই সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল সান্তোসের দল। বিরতির পর ম্যাচের ৫১তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন রোনালদো। কিন্তু এদিন আর দলের রক্ষাকর্তা হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। শেষদিকে একটি শট নিয়েছিলেন গোলমুখে। তবে মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো তা ঠেকিয়ে দেন। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে একাই দ্রুত মাঠ ছাড়েন রোনালদো। মাথা নিচু করে চোখ মুছতে মুছতে যখন তিনি বেরিয়ে যান, তখন মাঠে চলছিল মরক্কোর ফুটবলারদের উল্লাস।
বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৭ বছর। কাতারের মাটিতে নিজের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিলেন রোনালদো। অধরা শিরোপা জয়ের স্বপ্ন পূরণের অভিযানে তিনি পুরো আসরে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে চেনা ধার দেখাতে না পারায় সুইসদের বিপক্ষে শেষ ষোলোতে একাদশে জায়গা হারান। ধারণা করা হচ্ছে, মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচটিই বিশ্বকাপে তার শেষ।
হারের পর সংবাদ সম্মেলনে নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেন সান্তোস, 'না, আমি তা মনে করি না। (রোনালদোকে বেঞ্চে রাখায়) আমার কোনো অনুতাপ নেই, কোনো অনুতাপ নেই। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে যে দলটি সত্যিই ভালো খেলেছে, তাদেরকেই ব্যবহার করেছি। রোনালদো একজন সেরা খেলোয়াড়। সে তখনই মাঠে নেমেছে, যখন আমাদের মনে হয়েছে যে এটা দরকার ছিল। না, আমার কোনো অনুতাপ নেই।'
৬৮ বছর বয়সী সান্তোসের মতে, পর্তুগালের বিদায়ে রোনালদো আর তারই সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে, 'যদি আমরা দুজন ব্যক্তির কথা বলি যারা ম্যাচটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি হতাশ হয়েছে, তারা হলো সম্ভবত রোনালদো ও আমি। আমরা অবশ্যই হতাশ। এটা আমাদের ওপর প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু কোচ ও খেলোয়াড়দের জন্য এগুলো খেলার অংশ।'
২০১৪ সাল থেকে পর্তুগালের কোচের দায়িত্বে আছেন সান্তোস। তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছর। তবে গুঞ্জন উঠেছে, এবারের বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর তিনি পদত্যাগ করতে পারেন। এই বিষয়ে প্রশ্ন রাখা হলে তিনি বলেন, 'আমি ইতোমধ্যে এটা নিয়ে আমাদের (পর্তুগাল ফুটবল ফেডারেশনের) সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। সেই ২০১৪ সাল থেকেই আমার পদত্যাগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এটা এমন একটা শব্দ যা আমাদের (কোচদের) শব্দভাণ্ডারের অংশ নয়।'
Comments