আর্জেন্টিনা বনাম নেদারল্যান্ডস: প্রেডিকশন, একাদশ ও অন্যান্য রেকর্ড

লিওনেল মেসির হাতে সোনালী ট্রফি দেখতে আর মাত্র তিন ম্যাচের অপেক্ষা ভক্তদের। তবে তার জন্য আগে নেদারল্যান্ডস বাধা টপকাতে হবে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের। প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে অঘটনের হারের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। অন্যদিকে টুর্নামেন্টে এখনও অপরাজিত নেদারল্যান্ডস রয়েছে দারুণ ছন্দে।

ম্যাচের ফলাফল জানা যাবে ম্যাচ শেষেই, তবে তার আগে কাগজে কলমে দুদলের সামর্থ্য ও সাম্প্রতিক ফর্মের আলোকে ভবিষ্যৎবাণী নিয়ে হাজির আমরা। পাশাপাশি দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ, ফর্মেশনও তুলে ধরা হলো ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য-

কখন?

শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টা

কোথায়?

লুসাইল স্টেডিয়াম, দোহা

টিম নিউজ

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েছিলেন মাঝমাঠের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রদ্রিগো দি পল। ডাচদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে এখনও পুরোপুরি সেরে উঠেননি তিনি। ফলে দুশ্চিন্তা ভর করেছে স্কালোনির মাথার ওপর। তবে ঝুঁকি নিয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে খেলিয়েও দিতে পারেন আর্জেন্টাইন কোচ। বদলী স্ট্রাইকার লাউতারো মার্তিনেজেরও রয়েছে চোট সমস্যা। যদিও চলতি আসরে এখন পর্যন্ত নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি ইন্টার মিলান তারকা। মিডফিল্ডার আলেহান্দ্রো গোমেজও নন পুরোপুরি ফিট। তবে তেমন মারাত্মক নয় তাদের চোট। এছাড়া চোট কাটিয়ে অনুশীলনে ফিরলেও খেলার মতো ফিট কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে আনহেল দি মারিয়াকে নিয়েও।

এদিক থেকে ডাচ কোচ লুইস ফন হাল পুরোপুরি নিশ্চিন্ত। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে তাকে ভাবতে হচ্ছে না খেলোয়াড়দের চোট নিয়ে।    

নজরে থাকবেন যারা

বিশ্বকাপের প্রতি ম্যাচেই নিজের পায়ের জাদু দেখিয়েছেন মেসি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আরও একবার ছন্দময় ড্রিবলিং উপহার দেবেন, এমনটাই থাকবে ভক্তদের প্রত্যাশা। সঙ্গে রক্ষণচেরা সব পাসে ডাচ রক্ষণে ত্রাস ছড়াতে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে লা পুল্গাকেই। আরেক তারকা আনহেল দি মারিয়া জ্বলে উঠলে ষোলোকলা পূর্ণ হবে আর্জেন্টাইনদের। মাঝমাঠে তরুণ তুর্কি এঞ্জো ফার্নান্দেজের সমর্থনেরও প্রয়োজন পরবে আলবিসেলেস্তেদের। 

তিন গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা কডি গাকপোকে এই ম্যাচেও নিতে হবে দলকে এগিয়ে নেওয়ার গুরুদায়িত্ব। বার্সেলোনা তারকা মেমফিস ডিপাইকেও রাখতে হবে প্রতিভার ছাপ। মাঝমাঠে আরেক বার্সা তারকা ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ংকেও ভূমিকা রাখতে হবে আক্রমণ শানানোয়। দলের মতো রক্ষণের নেতৃত্বও দিতে হবে ডাচদের সবচেয়ে বড় তারকা ভার্জিল ভ্যান ডাইককে।

সম্ভাব্য লাইন আপ

আর্জেন্টিনা: (৪-৩-১-২) এমিলিয়ানো মার্তিনেজ (গোলরক্ষক), নাহুয়েল মলিনা, মার্কোস আকুনা, নিকোলাস ওতামেন্দি, ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, লিওনার্দো পারেদেস, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্তার, এঞ্জো ফার্নান্দেজ, লিওনেল মেসি, হুলিয়ান আলভারেজ ও আনহেল দি মারিয়া।

নেদারল্যান্ডস: (৩-৪-১-২) আন্ড্রিস নোপার্ট (গোলরক্ষক), জুরিয়েন টিম্বার, ভার্জিল ভ্যান ডাইক, নাথান আকে, ডিলে ব্লিন্ড, ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ং, মার্টেন ডি রুন, ডেনজেল ডামফ্রিস, ডেভি ক্লাসেন, কডি গাকপো ও মেমফিস ডিপাই।

প্রেডিকশন

আর্জেন্টিনা দলে বড় তারকারা থাকলেও জয় পেতে দল হিসেবে জ্বলে ওঠার বিকল্প নেই আলবিসেলেস্তেদের। মেসির ওপর বাড়তি চাপ না তৈরি করে তাকে সমর্থন যোগাতে পারলেই সেরাটা বেরিয়ে আসবে লা পুল্গার ভেতর থেকে। শুরুতে গোল হজম করা চলবে না আর্জেন্টিনার, চাপের মুখে তারা কতোটা কার্যকর তা দেখা গেছে সৌদি ম্যাচেই। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসকে বলের দখলে হতে হবে মনোযোগী। স্কালোনির শিষ্যদের চাপে রাখতে গড়তে হবে কার্যকর আক্রমণও। তবে দুই দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিবেচনায় ম্যাচ হতে পারে জমজমাট।

সম্ভাব্য স্কোর:

আর্জেন্টিনা ২-১ নেদারল্যান্ডস

ম্যাচ ফ্যাক্টস

১. নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সর্বশেষ নয় ম্যাচে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। অবশ্য দুইবার পেনাল্টিতে তাদের হারানোর কীর্তি আছে লাতিনদের। সবশেষ ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপেও ডাচদের টাইব্রেকারে হারিয়েছিল মেসির দল।

২. কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটি বিশ্বকাপের এই দুই দলের ষষ্ঠ মোকাবিলা। ১৯৭৪ সালে প্রথম লড়াই ৪-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছিল ডাচরা। ২০০৬ ও ২০১৪ সালে শেষ দুইবারের দেখায় নব্বই মিনিটের পরও খেলা ছিল গোলশূণ্য।

৩. ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েই ফুটবলের সর্বোচ্চ মর্যাদার আসরে নিজেদের প্রথম শিরোপার দেখা পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। 

৪. বিশ্বকাপে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার ১০ গোলই কোন আর্জেন্টাইনের সর্বোচ্চ গোল। ফুটবলের মহাযজ্ঞে এখন পর্যন্ত ২৩ ম্যাচে নয় গোল করা মেসির সামনে হাতছানি এই রেকর্ড নিজের নামে করার।

৫. আর্জেন্টিনার অর্জনের খাতায় দুটি বিশ্বকাপ থাকলেও তিনবার শিরোপার খুব কাছে গিয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে নেদারল্যান্ডসের। ১৯৭৪, ১৯৭৮ ও ২০১০ সালে ফাইনাল হেরেছে তারা।

৬. গত বছর ইউরো থেকে ছিটকে যাওয়ার পর থেকে ১৯ ম্যাচ ধরে অপরাজিত নেদারল্যান্ডস। অন্যদিকে ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে আসা আর্জেন্টিনার দুরন্ত যাত্রা প্রথম ম্যাচেই থামিয়ে দিয়েছিল সৌদি আরব।

৭. বিশ্বকাপে পেনাল্টি শুটআউটের রেকর্ড কথা বলছে না ডাচদের পক্ষে। তিনবার টাইব্রেকার পর্যন্ত গিয়ে দুইবারই পরাস্ত হতে হয়েছে তাদের। ১৯৯৮ সালে ব্রাজিল ও ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনা ছিটকে দেয় তাদের। একমাত্র সাফল্য কোস্টারিকার বিপক্ষে, যেই ম্যাচটি মাঠে গড়িয়েছিল ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে।

Comments

The Daily Star  | English

Diesel to flow thru 250km Ctg-Dhaka pipeline mid-Dec

Bangladesh is set to reach a milestone in fuel transport with the commissioning of the 250-kilometre Chattogram-Dhaka diesel pipeline in the middle of December.

11h ago