আর্জেন্টিনা বনাম অস্ট্রেলিয়া: প্রেডিকশন, একাদশ ও অন্যান্য রেকর্ড
লিওনেল মেসির সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপের শুরুতেই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল আর্জেন্টিনার। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি, মেক্সিকোর বিপক্ষে গোল করে যেন আলবিসেলেস্তেদের গোলের ক্ষুধা বাড়িয়ে দেন লা পুল্গা। এরপর পোল্যান্ডের বিপক্ষে অতিমানবীয় ফুটবল উপহার দেয় লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। বাঁচামরার ম্যাচে দাপটের সঙ্গে জিতে নকআউটের টিকিট কেটে নেয় তারা।
অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হলেও পরের দুই ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। তিউনিসিয়া ও ডেনমার্কের বিপক্ষে ন্যুনতম ব্যবধানের জয় তুলে ১৬ বছর পর ফের কাটে নকআউট পর্বের টিকিট। তবে আর্জেন্টিনার সামনে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হতে পারে সকারুদের।
ম্যাচের ফলাফল জানা যাবে ম্যাচ শেষেই, তবে তার আগে কাগজে কলমে দুদলের সামর্থ্য ও সাম্প্রতিক ফর্মের আলোকে ভবিষ্যৎবাণী নিয়ে হাজির আমরা। পাশাপাশি দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ, ফর্মেশনও তুলে ধরা হলো ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য-
কখন?
শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টা
কোথায়?
আহমদ বিন আলি স্টেডিয়াম, আল রাইয়ান
টিম নিউজ
উরুর সমস্যার কারণে পোল্যান্ডের বিপক্ষে সতর্কতা হিসেবে আর্জেন্টিনার আনহেল দি মারিয়াকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এ ম্যাচে তাকে পাওয়া নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। বেঞ্চে থেকেই শুরু করতে পারেন তিনি। আক্রমণভাগে লিওনেল মেসির সঙ্গে লাউতারো মার্টিনেজ এবং হুলিয়ান আলভারেজকেই বেছে নিতে পারেন কোচ লিওনেল স্কালোনি।
অন্যদিকে ডেনমার্ককে হারিয়ে দেওয়া দলটির উপর আস্থা রাখতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ গ্রাহাম আর্নল্ড। তবে ফ্রান্সের বিপক্ষে যে গোড়ালি চোটে ছিটকে পড়া ফুল-ব্যাক নাথানিয়েল অ্যাটকিনসনকে ফেরাতে পারেন এ ম্যাচে।
নজরে থাকবেন যারা
আক্রমণভাগে তুখোড় ফর্মে আছেন মেসি। অস্ট্রেলিয়া ডিভেন্ডারদের নাভিশ্বাস ওঠাতে পারেন তিনি। সঙ্গে আনহেল দি মারিয়া খেললে বাড়তে পারে প্রতিপক্ষের ভোগান্তি। এঞ্জো ফার্নান্দেজ, হুলিয়ান আলভারেজরা আবারও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল করবেন, সেই প্রত্যাশাই থাকবে ভক্তদের। রদ্রিগো দি পল ও গত ম্যাচের গোলদাতা অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্তারকেও নিজেদের কাজটা করতে হবে ঠিকমতো। রক্ষণে কোন ভুল করা চলবে না ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, নিকোলাস ওতামেন্দিদের।
স্কালোনির শিষ্যদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে নিজেদের সেরা ফুটবলটাই খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। আর্জেন্টিনাকে চমকে দিতে গোলের বিকল্প নেই, তাই মিচেল ডিউক-রিলে ম্যাকগ্রিকে নষ্ট করা চলবে না কোন সুযোগ। সঙ্গে ম্যাথিউ লেকি-ক্রেইগ গুডউইনদেরও ধরে রাখতে হবে গ্রুপ পর্বের ফর্ম। হ্যারি শুটারকে আরও একবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে রক্ষণে।
সম্ভাব্য লাইন আপ
আর্জেন্টিনা: (৪-৩-১-২) এমিলিয়ানো (গোলরক্ষক), মলিনা, তাগলিয়াফিকো, ওতামেন্দি, রোমেরো, দি পল, অ্যালিস্তার, ফার্নান্দেজ, মেসি, আলভারেজ, লাউতারো।
অস্ট্রেলিয়া: (৪-৪-২) রায়ান (গোলরক্ষক), বেহিস, সাউটার, ডিজেনেক, রোলস, মুয়, আরভিন, লেকি, গুডউইন, ডিউক, ম্যাকগ্রি
প্রেডিকশন
নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে জয়ের পাল্লা ভারি আর্জেন্টিনারই। অঘটনের বিশ্বকাপে আরও একটি অঘটন ঘটাতে সব চেষ্টাই করবে গ্রাহাম আর্নল্ডের শিষ্যরা, তবে তার জন্য খুবই বাজে একটি দিন কাটাতে হবে আলবিসেলেস্তে তারকাদের। তবে সব বিভাগেই অনেক পিছিয়ে থাকা সকারুদের তেমন কিছু করে দেখানোর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
সম্ভাব্য স্কোর:
আর্জেন্টিনা ২-০ অস্ট্রেলিয়া
অন্যান্য পরিসংখ্যান
১) বিশ্বকাপে এর আগে কখনোই মুখোমুখি হয়নি আর্জেন্টিনা ও অস্ট্রেলিয়া। তবে ১৯৮৮ সাল থেকে সবমিলিয়ে দলদুটি মোকাবেলা করেছে সাতবার। এরমধ্যে পাঁচটি জিতেছে আর্জেন্টিনা, একটি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া এবং অপরটি ড্র। দুই দলের প্রথম মোকাবেলাতেই জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া এবং সেই দলের সদস্য ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান কোচ আর্নল্ড।
২) শেষ ১০টি বিশ্বকাপে মধ্যে নয় বার বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে উঠেছে আর্জেন্টিনা।
৩) বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে ২৩ বার চেষ্টা করেও গোলহীন মেসি।
৪) বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো টানা দুটি জয়ে দুটি ক্লিনশিট রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। দলটি শেষবার ক্লিনশিট রেখেছিল ১৯৭৪ সালে।
৫) বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর ম্যাচে দুইবার হেরেছে আর্জেন্টিনা। ১৯৯৪ সালে রোমানিয়ার বিপক্ষে এবং ২০১৮ সালে ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে বিদায় নেয় দলটি।
৬) বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৯টি সুযোগ তৈরি করেছেন লিওনেল মেসি। তারচেয়ে বেশি সুযোগ এবার কেবল ফ্রান্সের আতোঁয়ান গ্রিজমান তৈরি করতে পেরেছেন। আগের তিন ম্যাচে ১১টি সুযোগ তৈরি করেন এ ফরাসি।
৭) প্রতিপক্ষের আক্রমণ এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ২৫ বার ভেস্তে দেন সেনেগালের কালিদু কোলিবালি। তার পরেই আছেন অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডার হ্যারি সাউটার। তার ক্লিয়ারেন্স ২০টি।
Comments