টাইব্রেকারে রোনালদো জয়ের পথ দেখাবেন, নিশ্চিত ছিলেন পর্তুগাল কোচ
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়ে কান্নায় মুষড়ে পড়লেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। অথচ ম্যাচের তখনও বাকি ১৫ মিনিট। ক্যারিয়ারজুড়ে অদম্য মানসিক দৃঢ়তার জন্য পরিচিত এই তারকাকে মাঠের ভেতরে এভাবে ভেঙে পড়তে দেখা ছিল রীতিমতো বিস্ময়ের। তবে শেষে তার মুখে চওড়া হাসি ফুটে উঠল গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তার স্মরণীয় নৈপুণ্যের কারণে। পর্তুগালের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পর রোনালদো পেলেন কোচ রবার্তো মার্তিনেজের কাছ থেকে প্রশংসাও।
ফ্রাঙ্কফুর্টে সোমবার রাতে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ষোলোতে স্লোভেনিয়াকে টাইব্রেকারে ৩-০ গোলে হারায় পর্তুগিজরা। তবে আগেই ম্যাচ জেতার একাধিক সুযোগ এসেছিল ২০১৬ সালের আসরের চ্যাম্পিয়নদের সামনে। কিন্তু ৩৯ বছর বয়সী অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড রোনালদো হতাশা জাগিয়ে সেগুলো হাতছাড়া করেন। স্পট-কিক থেকেও জাল খুঁজে নিতে ব্যর্থ হন তিনি। রোনালদোর জোরালো শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক। ফলে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর দেওয়া অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল গোলশূন্য।
টাইব্রেকারে স্লোভেনিয়ার প্রথম তিনটি শটই ঠেকিয়ে কস্তা নায়কে পরিণত হলেও খেলা চলাকালীন রোনালদোর ব্যর্থতা ও কান্না নিয়ে চলছে চর্চা। তবে ম্যাচের পর শিষ্যের প্রতি অগাধ আস্থার কথা জানান মার্তিনেজ। সেকারণেই টাইব্রেকারে পর্তুগালের প্রথম শটটি নেওয়ার জন্য দ্বিধাহীন চিত্তে রোনালদোকে পাঠিয়েছিলেন তিনি, 'প্রথমত, আমি মনে করি, সে আমাদের জন্য একটি চলমান উদাহরণ। সে একমাত্র খেলোয়াড় যে ছয়টি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলছে। সে এই দায়িত্ব নিতে পেরে খুশি এবং নিজের ওপর সেই আস্থা তার আছে। সে যে ধরনের মানুষ এবং যেভাবে দলের যত্ন নেয় সেজন্য আমি তাকে পরে ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমি নিশ্চিত ছিলাম, টাইব্রেকারে প্রথম শটটিই সে নেবে এবং আমাদেরকে জয়ের পথ দেখাবে।'
চলমান ইউরোতে চার ম্যাচ খেলে এখনও কোনো গোল করতে পারেননি রোনালদো। এটা নিয়ে বাইরে অনেক সমালোচনা চললেও দলের ভেতরে তার ফর্ম নিয়ে কোনো সংশয় নেই। পর্তুগিজ কোচ বলেন, 'আমরা সবাই আমাদের অধিনায়ককে নিয়ে খুব গর্বিত। গোটা ড্রেসিং রুম তাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিল। আমি মনে করি, সে আমাদের সবাইকে দারুণ একটি শিক্ষাও দিয়েছে। জীবন ও ফুটবলে আপনার কঠিন মুহূর্ত আসবে। কিন্তু সে যেভাবে সাড়া দিয়েছে সেটাই প্রমাণ করে যে, পর্তুগিজ ফুটবল নিয়ে কেন আমরা গর্বিত।'
কোনোমতো স্লোভেনিয়ার বাধা উতরে যাওয়া পর্তুগালের সামনে এখন রয়েছে কঠিন পরীক্ষা। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা মোকাবিলা করবে দুইবারের ইউরো চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে। বাংলাদেশ সময় আগামী শুক্রবার দিবাগত রাত একটায় হামবুর্গে শুরু হবে এই ম্যাচ।
Comments