কাইয়া ও রাজার হাফসেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে জিম্বাবুয়ের পাল্টা জবাব
মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম ৬ রানের মধ্যে জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনারকে সাজঘরে ফেরানোর পর জুটি বাঁধলেন ইনোসেন্ট কাইয়া ও ওয়েসলি মাধেভেরে। তারা বিচ্ছিন্ন হলেন ভুল বোঝাবুঝিতে ঘটা রানআউটে। মাধেভেরে বিদায় নিলেও হাফসেঞ্চুরি তুলে নিলেন দারুণ খেলতে থাকা কাইয়া। সিকান্দার রাজাকে সঙ্গে নিয়ে আরেকটি ভালো জুটিতে বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে জীবন পাওয়া রাজাও পেলেন ফিফটির স্বাদ।
শুক্রবার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৩০৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় হারারেতে ব্যাট করছে জিম্বাবুয়ে। এই প্রতিবেদন লেখার সময়, তাদের সংগ্রহ ৩৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭০ রান। ক্রিজে আছেন কাইয়া ৯৭ বলে ৭৪ ও রাজা ৬৩ বলে ৬৩ রানে। তাদের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটির রান ১০৮। ১৭ ওভারে হাতে ৭ উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের জয়ের জন্য দরকার আরও ১৩৪ রান। শুরুর সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারায় উল্টো চাপে পড়েছে বাংলাদেশ।
ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক রেজিস চাকাভাকে বোল্ড করেন মোস্তাফিজ। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারি জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্রস ব্যাটে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইনসাইড এজ হয়ে বল মাটিতে একবার ড্রপ খেয়ে ভেঙে দেয় স্টাম্প। ৬ বল খেলা চাকাভার রান ২।
শরিফুলের প্রথম বলেই স্কয়ার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকান আরেক ওপেনার তারিসাই মুসাকান্দা। তিন বল পরই শোধ তোলেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার। তবে সেখানে মুসাকান্দার দায়ই বেশি। নির্বিষ বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে কভারে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে সহজ ক্যাচ দেন তিনি। ৫ বলে ৪ রান করে আউট হন তিনি।
দুই ওপেনার নির্বিষ বলে উইকেট হারানোর পর কাইয়া ও মাধেভেরের ব্যাটে চাপ সরাতে থাকে জিম্বাবুয়ে। তাদের জুটিও জমে গিয়েছিল। কিন্তু ১৪তম ওভারে গড়বড় হয়ে যায়। মিড উইকেটে প্রথম চেষ্টায় বল আটকাতে ব্যর্থ হন বদলি ফিল্ডার তাইজুল ইসলাম। সেই সুযোগে সিঙ্গেলকে ডাবলে রূপান্তর করতে মনস্থির করেন দুই ব্যাটার। কিন্তু সামলে নিয়ে তাইজুল দ্রুত থ্রো করেন নন-স্ট্রাইক প্রান্তে। ক্রিজের মাঝে চলে যাওয়া মাধেভেরে ফেরার আগেই উইকেট ভেঙে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফলে ভাঙে ৫৬ রানের জুটি।
এরপর জুটি বেঁধে বাংলাদেশকে পাল্টা জবাব দিচ্ছেন কাইয়া ও রাজা। ২৭তম ওভারে অবশ্য রাজাকে ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল। কিন্তু তাসকিন আহমেদের বলে শর্ট কভারে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন তাইজুল।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পূরণ করতে কাইয়ার লাগে ৬৬ বল। সিরিজে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা রাজা হাফসেঞ্চুরিতে পৌঁছান মোস্তাফিজের স্লোয়ারে লং-অফ দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে। তার লাগে ৫৭ বল। উইকেটে যাওয়ার পর থেকে বাহারি সব শটে বাংলাদেশের বোলারদের ব্যতিব্যস্ত রেখেছেন তিনি। জুটিতে তিনি আছেন অগ্রণী ভূমিকায়। কাইয়াও ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করেছেন।
রাজার পর কাইয়াও পান জীবন। ৩৩তম ওভারে তার দেওয়া ফিরতি ক্যাচ হাতে জমাতে ব্যর্থ হন শরিফুল। উল্টো বল পায়ে লাগায় ব্যথা পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। তখন কাইয়া ব্যাট করছিলেন ৭৪ রানে।
এর আগে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৮ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আরেক ওপেনার লিটন দাসের সঙ্গে তার ১১৯ রানের উদ্বোধনী জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় টাইগাররা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে তারা তোলে ২ উইকেটে ৩০৩ রান।
৮৮ বলে ৬২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তামিম। আহত অবসরে যাওয়া লিটন মাঠ ছাড়েন ৮৯ বলে ৮১ রানে। তিন বছর পর ওয়ানডেতে ফিরে এনামুল হক বিজয় খেলেন ৬২ বলে ৭৩ রানের আগ্রাসী ইনিংস। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম অপরাজিত থাকেন ৪৯ বলে ৫২ রানে। আরেক অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শেষদিকে নেমে ১২ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন।
Comments