যে চিন্তায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও পুরো শক্তির টেস্ট দল 

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এখনো পর্যন্ত স্রেফ তিনটি টেস্ট খেলেছে আয়ারল্যান্ড। সর্বশেষ ম্যাচটি প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। শক্তি-সামর্থ্য আর অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে থাকা এমন দলের বিপক্ষে থাকে পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ। নিয়মিত একাদশের বাইরে কাউকে কাউকে বাজিয়ে দেখার ব্যাপারও থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ সেই পথে হাঁটছে না
Litton Das, Shoriful Islam & Ebadot Hossain
অনুশীলনে শরিফুল ইসলাম ও ইবাদত হোসেনের সঙ্গে ফুরফুরে মেজাজে লিটন দাস ছবি: ফিরোজ আহমেদ/ স্টার

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এখনো পর্যন্ত স্রেফ তিনটি টেস্ট খেলেছে আয়ারল্যান্ড। সর্বশেষ ম্যাচটি প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। শক্তি-সামর্থ্য আর অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে থাকা এমন দলের বিপক্ষে থাকে পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ। নিয়মিত একাদশের বাইরে কাউকে কাউকে বাজিয়ে দেখার ব্যাপারও থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ সেই পথে হাঁটছে না। বরং আইপিএলের জন্য ছেড়ে না দিয়ে সাকিব আল হাসান, লিটন দাসকেও রেখেছে দলে। নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক জানালেন, ছোট প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বড় জয় পেতে এমন পথে হাঁটছেন তারা। 

অনেকটা সময় নিয়ে শনিবার ঘোষণা করা হয় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের ১৪ জনের দল। তাতে নানান গুঞ্জন উড়িয়ে থাকেন সাকিব ও লিটন। তারা দুজনেই আবার অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ক। 

শক্তির বিচারে টেস্টে আয়ারল্যান্ডকেই একদম তলানিতে রাখা যায়। বাংলাদেশের কন্ডিশনে টেস্টে বড় দলগুলোও পড়ে কঠিন চ্যালেঞ্জে, আইরিশদের সেদিক থেকে তেমন লড়াই জমানোর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তাছাড়া এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেরও অংশ নয়। 

তবু কেন একদম পুরো শক্তির দল দিতে হলো? রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এমন প্রশ্নের জবাবে নিজেদের ভাবনা জানান নির্বাচক রাজ্জাক,  'আমি তো চাই, আমার ব্যক্তিগত দিক থেকে বলছি একদম সেরা দলটাই খেলুক। যেহেতু এটা একটা টেস্ট ম্যাচ। টেস্টে আসলে আমার মনে হয় না, কোনো দলের বিপক্ষে কোনো সুযোগ নেওয়া উচিত। কারণ টেস্ট ম্যাচ জিতে রাখাই ভালো। আর আমরা এখনও ওরকম পরিস্থিতি যাইনি যে, ৪-৫ জন ক্রিকেটার না থাকলেও কোনো সমস্যা হবে না। আমার মনে হয়, ওই পর্যায়ে যেতে আমাদের এখনও সময় লাগবে।'

২৩ বছর আগে ২০০০ সালে টেস্টে পথচলা শুরু বাংলাদেশের। নিজেদের শুরুর সময়ে বড় দলগুলোর সেরা তারকাদের বিপক্ষেই খেলার সুযোগ পেত বাংলাদেশ। রাজ্জাক সেই স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন এবার,  'টেস্ট ম্যাচ একটা ভিন্ন জিনিস। আমরা একদম প্রথম দিকে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে টেস্ট খেলতে গেলে কিন্তু ওদের মূল দলটাই খেলত। ভারত কিন্তু টেস্ট খেলতে মূল দলটাই আসে। এটা হয়তো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ নয়। তবে টেস্ট জিতে রাখা একটা ভিন্ন বিষয়। এটা থেকে কেউ আসলে নিজেদের বঞ্চিত করতে চায় না।' 

বাংলাদেশে এবার খেলতে শেষ টি-টোয়েন্টি জেতা ছাড়া কোন লড়াই জমাতে পারেনি আইরশিরা। ওয়ানডে সিরিজে একদমই পাত্তা পায়নি তারা। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতেও হয়েছে একই দশা। শেষ ম্যাচ জিতে এসেছে কেবল সান্ত্বনার জয়। তবে তাতে টেস্টে ভালো করা নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। 

রাজ্জাক অবশ্য আইরিশদের ছোট করে দেখতে নারাজ। বরং কাউন্টি খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় কাজটা এত সহজ হবে বলে ভাবছেন না,  'অনেক সময় এমন হয় যে, খুব বেশি পার্থক্য থাকে। আয়ারল্যান্ডের প্রচুর ক্রিকেটার আছে যারা কাউন্টি খেলে। ওদেরকে ওইভাবে দেখার কোনো কারণ নেই। এখানে আমাদের সঙ্গে ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি সিরিজ দেখে যদি মনে হয় যে ওরা খুব ভালো একটা দল নয়। এটা কিন্তু ভুল হবে। ওরা যা খেলছে এর চেয়ে অনেক ভালো দল। হয়তো কোনো কারণে শুরুতে মানিয়ে নিতে পারেনি। কিন্তু ওদের যা পারফরম্যান্স দেখা গেছে এর চেয়ে অনেক অনেক ভালো দল। ওদের মনে হয় প্রায় ৯০ শতাংশ ক্রিকেটারই কাউন্টি ক্রিকেট খেলে। আমরা যারা ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত, তাদের সবারই কিন্তু কাউন্টির মান সম্পর্কে ধারণা আছে। ওরা সেখানে পারফর্মও করে।'

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কেবল জেতা নয়, দাপট দেখিয়ে জিততে চায় বাংলাদেশ। রাজ্জাক জানান, দুই দলের শক্তির পার্থক্য জানাতে চান তারা, 'আমার সোজা হিসাব, আমি চাই জিততে। খুব ভালোভাবে টেস্ট ম্যাচটা জিততে চাই। একটা সময় কিন্তু ছিল শুরুর দিকে বিশেষ করে আমরা যখন টেস্ট খেলেছি, তখন যে অবস্থা ছিল, আমাদের সঙ্গে খেলত এবং সমানে দাপট দেখিয়ে ম্যাচ জিতত। যাতে করে বোঝানো যায় যে, আমাদেরও ওই উন্নতিটা হচ্ছে। নতুন যারা আসছে তাদের সঙ্গে আমাদেরও পার্থক্যটা এরকম।'
 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

10h ago