‘পাঁচজনই ভাই, সবাই মিলে ভালো করতে চাই’
ঘরের মাঠে একটা সময় পেসারদের হাতে বল তুলে দিতেই দ্বিধায় ভুগতেন বাংলাদেশের অধিনায়করা। স্পিন শক্তির উপর ভরসা করেই আসত টুকটার সাফল্য। সেই দিন গত হয়েছে বেশ আগে। এখন দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাদেশের সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখছে পেস আক্রমণ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি সিরিজেও দেখা যাচ্ছে সেই ঝাঁজ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ার সেরা বল করা তাসকিন আহমেদ জানালেন, একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী না, দলের অন্য একে অন্যের সহায়ক হিসেবে নিজেদের নিংড়ে দিচ্ছেন তারা।
সোমবার বাংলাদেশের ২০৭ রানের পর বৃষ্টি আইনে ৮ ওভারে আয়ারল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল ১০৪ রান। প্রথম দুই ওভারে তারা ৩২ রান তুলে ফেলার পর খানিকটা ভয় ধরে গিয়েছিল। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে ম্যাচ একদম ঘুরিয়ে দেন হাসান মাহমুদ ও তাসকিন। ৫ রান দিয়ে ব্রেক থ্রো আনেন হাসান। নিজের প্রথম ওভারেই তিন উইকেট তুলে নেন তাসকিন।
২ ওভারে কেবল ১৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে আইরিশদের ৮১ রানে আটকে রাখেন পেস আক্রমণের নেতা তাসকিন। এর আগে সিলেটে শেষ ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের সবগুলো উইকেটই নিয়েছিলেন বাংলাদেশের তিন পেসার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন নজির বাংলাদেশের প্রথম। সেদিন ক্যারিয়ার সেরা বল করে ৫ উইকেট নেন হাসান।
তরুণ হাসান যেভাবে বল করছেন, তাতে কিছুটা অভিজ্ঞ তাসকিনরাও আরও ভালো করার চাপ অনুভব করেন কিনা। ম্যাচ শেষে এমন একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল তাকে। জবাবে তাসকিন জানান তারা মূলত একে অন্যের পরিপূরক, 'আরও ভালো করুক (হাসান), ১০ উইকেট করে নিক আমি চাই। কারণ আমি তো আগেই বললাম পাঁচজনই ভাই। সবাই যত ভালো করবে, প্রতিপক্ষ চাপ অনুভব করবে। কারণ ওরা কি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী কি না? না। আমিই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী। আমি চাইবো সবাই মিলে ভালো করতে। তাহলে বিশ্ব ক্রিকেটে একটা হুমকি যাবে যে বাংলাদেশের পেস বোলাররা গ্রো করতেছে। ও ১০ উইকেট নিলেও আমার কোনো ক্ষতি নাই বা আমার উন্নতি নাই। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আমি, আমার বেস্ট রেকর্ডটা ভেঙে আরও ভালো করতে চাই। দোয়া করি সবাই ভালো করুক।'
টেস্ট ও ওয়ানডেতে নিয়মিতই ভালো করছেন ইবাদত হোসেন। হাসানকে ঝলক দেখাতে দেখা যাচ্ছে সীমিত ওভারে। মোস্তাফিজুর রহমান একটা সময় দলের সেরা পেসার হিসেবে বিবেচিত হলেও বাকিদের এগিয়ে যাওয়ায় তিনিই কিছুটা যেন চ্যালেঞ্জে। শরিফুল ইসলাম ব্যাকআপ হিসেবে আছেন সুযোগের অপেক্ষায়। আর সব সংস্করণেই নিজেকে সেরা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন তাসকিন।
তাসকিন মনে করেন পরিবারের মতো মিলেমিশে থেকে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হতে চান তারা, সেজন্য এখনো বাকি পরের ধাপে যাওয়া, 'সবাই সবার দিক থেকে চিন্তা করছে। ইউনিট হিসেবে সবাই ওয়ার্ল্ড ক্লাস বোলার হলে, এই ইউনিটটাকে সামলাতে সবার অসুবিধা হবে। বড় দলে চার-পাঁচটা ভালো বোলার থাকে। আমরাও সেটাই চাচ্ছি। পেস বোলাররা ফ্যামিলির মতো, সবাই সবার ভালো চেয়ে কাজ হেল্প করতেছি।এখনও আমাদের নেক্সট লেভেলে যাওয়া বাকি।'
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এবার খেলা হচ্ছে ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে। এসব উইকেটের চ্যালেঞ্জও নিচ্ছেন পেসাররা। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভালো করার উপায় বের করছেন। নিজেদের উন্নতিতে ভালো উইকেটে খেলার বিকল্প দেখছেন না তাসকিন, 'ভালো উইকেটে পেস বোলারদের অ্যাকুরেসি ১০০-১০০ হতে হয়। যত ভালো উইকেটে প্রয়োগের মাত্রা বাড়াতে হবে।'
'যত বেশি ভালো উইকেটে খেলা হবে আমাদের জন্যই ভালো। স্পোর্টিং উইকেটে ব্যাটার-বোলারদের জন্য সুবিধা থাকবে। আল্লাহ রহমতে লাস্ট দুইটা সিরিজে ভালো উইকেট ছিল। আমরা বেটার ক্রিকেট খেলে জিতেছি। অনেকে মনে করতে পারে হোম কন্ডিশনে জিতেছি, না আমরা ভালো উইকেটে ক্রিকেট খেলে জিতেছি। তো এটা বাড়তি প্রেরণা। চাইবো, এই ধরনের উইকেটে খেলা হোক।'
Comments