এশিয়া কাপ ২০২৩

গিলের সেঞ্চুরি ম্লান করে বাংলাদেশের দারুণ জয়

এশিয়া কাপ থেকে বিবর্ণ পারফম্যান্সে ছিটকে যাওয়ার পর সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছিল বাংলাদেশ দল। না পারার যন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে শেষ ম্যাচটায় অন্তত কিছু করতে চেয়েছিলেন সবাই। ভারতকে হারিয়ে সেই সেই ক্ষতেই প্রলেপ দিল সাকিব আল হাসানের দল। শুভমান গিলের সেঞ্চুরি ম্লান করে বাংলাদেশ তুলে নিল দারুণ জয়।

শুক্রবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে এবারের আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছে ৬ রানে। আগে ব্যাট করে ২৬৫ রান করেছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। জবাবে গিলের সেঞ্চুরির পরও ২৫৯ রানে থেমে যায় টুর্নামেন্টে এর আগে কোন ম্যাচ না হারা ভারত।

দলের জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখেন অধিনায়ক সাকিব। ব্যাট হাতে ৮০ রান করার পর বোলিংয়ে ৪৩ রানে নেন ১ উইকেট। বোলিংয়ে সুরটা গড়ে দেওয়া আরেক সাকিবের। অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিব ৩২ রানে নেন দুই উইকেট। শুরুতে তিনি বেঁধে দেন সুর।

দশে নেমে ব্যাট হাতেও ৮ বলে ১৪ রান করেন তিনি। নাসুম ও শেখ মেহেদীর কথা বলতে হয় আলাদাভাবে। নয়ে নেমে ৪৫ বলে ৪৪ করার পর নাসুম রান আটকে দেওয়ার কাজ করেছেন। শেখ মেহেদী ২৩ বলে ২৯ রান করার পর ৫০ রানে ২ উইকেট নিয়ে অবদান তার।

শেষ দুই ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১৭ রান। হাতে ৩ উইকেট। আকসার প্যাটেল আর শার্দুল ঠাকুর থাকায় ম্যাচ ছিল সমান পাল্লায়। কিছুটা যেন ভারতের দিকেই ঝুঁকে। ওই ওভারে মোস্তাফিজ বদলে দিলেন সমীকরণ, তার প্রথম বলেই ফ্লিক করে ক্যাচ দিলেন শার্দুল। আকসার স্ট্রাইক পেয়ে চার মারলেও খানিক পর তুলে দিলেন ক্যাচ। ৩৪ বলে ৪২ করে তিনি আউট হতেই ম্যাচ পুরোপুরি চলে আসে বাংলাদেশের মুঠোয়। ৫০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে মোস্তফিজ দেখান হারিয়ে ফেলা ধার। 

পরে শেষ ওভারে ১২ রানের কঠিন সমীকরণ আর মেলাতে পারেননি দুই টেল এন্ডার মোহাম্মদ শামি আর প্রসিদ কৃষ্ণ। 

অথচ এই ম্যাচে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল ভুলে যাওয়ার মতো। দিনের আলোয় প্রেমাদাসার উইকেট ব্যাট করার জন্য থাকে বেশ ভালো। সেখানে নেমে শুরুতেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। ছন্দ হারিয়ে টুর্নামেন্টে তৃতীয়বার হতাশ করেন লিটন দাশ। তিন চারে থামেন তরুণ তানজিদ হাসান তামিম। এনামুল হক বিজয় ফেরার ম্যাচে ব্যর্থ। 

পাঁচে নেমে ধুঁকে ধুঁকে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজও। ৫৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরিস্থিতি থেকে দলকে টেনে তুলেন সাকিব আর হৃদয়। দুজনের শতরানের জুটিতে খেলায় ফেরে বাংলাদেশ। 

২৮ রানে জীবন পেয়ে সাকিব ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে শার্দুল ঠাকুরের বলে স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন ৮০ রান করে। হৃদয় চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে হতাশ করেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। ফিফটি করা হৃদয় ফিরলে ১৯৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল টাইগাররা। 

আশা হারানো দলকে দুর্দান্তভাবে লড়াইয়ে ফেরান নাসুম। ব্যাট হাতে তিনি যে কতটা পটু ভারতীয়রা হয়ত বুঝতেও পারেনি। শেখ মেহেদীকে নিয়ে ৩৬ বলে ৪৫ রানের মহা মূল্যবান জুটি খেলায় ফেরান দলকে। নাসুম ৪৪ করে ফেরার পর মেহেদী টেনে নেন। তানজিমের সঙ্গে ১৬ বলে ৩৬ রানের আরেক জুটি আনেন তিনি। একটা সময় মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ থেমে যাবে ২৩০ রানের আশেপাশে। সেখানে ২৬০ পেরিয়ে যাওয়ার পর আশা হয়ে যায় চওড়া। 

২৬৬ রান তাড়ায় নামা ভারতকে প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন তানজিম। নিজের দ্বিতীয় বলেই রোহিত শর্মাকে তুলে নেন তিনি। পরের ওভারে তিলক বর্মা তার বল ছেড়ে দিয়ে হন বোল্ড। 

১৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া ভারতকে টেনে তুলার ভার নেন গিল। লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ৫৭ রানের জুটি গড়ার পর একাই টানছিলেন। ইশান কিশান আর সূর্যকুমার যাদব মিডল অর্ডারে হতাশ করলে বিপদ আরও বাড়ে। এরপর কয়েকটি জুটি এলেও কোনটিই পঞ্চাশ পার হতে দেয়নি বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি তুলে তবু একাই ম্যাচ বের করে নিচ্ছিলেন গিল। 

১২১ রানে তিনি আউট হওয়ার সময়ও আরও ৫৭ রান দরকার ছিল দলের। বল হাতে কিছু করতে না পারা আকসার ব্যাট হাতে জারি রাখেন দলের সম্ভাবনা। ৩৪ বলে ৪২ রান করে ৪৯তম ওভারে তিনি ফেরার পর আর বাংলাদেশের জেতা ছিল সময়ের ব্যাপার। 

Comments

The Daily Star  | English

Matarbari project director sold numerous project supplies

Planning Adviser Prof Wahiduddin Mahmud today said the Matarbari project director had sold numerous project supplies before fleeing following the ouster of the Awami League government on August 5.

1y ago