১৪৭ রানে অলআউট পাকিস্তান

লক্ষ্যটা হাতের নাগালে রাখতে মূল বাধা ছিলেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। এ দুই ব্যাটারের ব্যাটেই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ভারতকে হারাতে পেরেছিল পাকিস্তান। বাবরকে ফেরানো গেল শুরুতেই। রিজওয়ান অবশ্য এক প্রান্ত আগলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু মাঝের ওভারে বল হাতে নিয়ে রীতিমতো আগুন ঝরান হার্দিক পান্ডিয়া। সে আগুনে রিজওয়ান তো বটেই পুড়ল পাকিস্তানের মিডল অর্ডারও। ফলে কোনোমতে লড়াই করার পুঁজি পেয়েছে পাকিস্তান।

রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ১৯.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান তুলতে সমর্থ হয় পাকিস্তান। জিততে হলে ভারতকে করতে হবে ১৪৮ রান। 

এদিন শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাবর আজমের দল। সে অর্থে প্রতিরোধ গড়তে পারেননি কোনো ব্যাটারই। পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারিয়ে ৪৩ রান তোলে দলটি। পাওয়ার প্লে শেষ হলেও রানের গতি বাড়েনি তাদের। ১১ থেকে ১৫ ওভার পর্যন্ত ছয় ওভারে ৩৫ রান তুলতে পারে দলটি। এ সময় ৩টি উইকেট তুলে নেয় ভারতীয়রা। তাতেই বিপর্যয়ে পরে পাকিস্তান। 

ইনিংসের শুরুতে বাবর সাবলীল ব্যাটিং করলেও নড়বড়ে ছিলেন আরেক ওপেনার রিজওয়ান। তার বিপক্ষে প্রথম ওভারেই দুটি জোরালো আবেদন করেন বোলার ভুবনেশ্বর কুমার। প্রথম বার তো লঙ্কান আম্পায়ার রুচিরা পাল্লিয়াগুরুগে সাড়াও দিয়েছিলেন। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। দ্বিতীয়বারে কট বিহান্ডের আবেদনে রিভিউ নিয়েছিলেন রোহিত। তবে ব্যাটে না লাগায় এবারও বেঁচে যান রিজওয়ান।

অন্যদিকে শুরুটা দারুণ করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বাবর। ভুবনেশ্বরের দ্বিতীয় ওভারে একটি ভুলে সাজঘরমুখী হন অধিনায়ক। হুক করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে আকাশে বল তুলে দিয়ে আর্শদিপের সহজ ক্যাচে পরিণত হন তিনি। বাবর আউট হওয়ার পর ধীরে ধীরে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে হাত খুলে খেলতে শুরু করেন রিজওয়ান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে একটি ছক্কা-চারে রানের গতিকে সচল করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

কিন্তু সে ওভারেই ফিরে যান তিন নম্বরে নামা ফখর জামান। আবেশ খানের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষক দিনেশ কার্তিকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। যদিও বোলার ও কিপার কেউই আবেদন করেননি। এমনকি আম্পায়ারও আঙুল তোলেননি। তবে ব্যাটে লেগেছে বুঝতে পেরেই মাঠ ছাড়েন এ পাক ক্রিকেটার। তাতে কিছুটা চাপে পড়ে পাকিস্তান।

ফখরের বিদায়ের পর ইফতেখার আহমেদকে নিয়ে দলের হাল ধরেন রিজওয়ান। দেখে শুনে ব্যাট চালিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন তারা। ৪৫ রানের জুটিও গড়েন। যদিও রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি। চেষ্টা চালাতে গিয়ে হার্দিক পান্ডিয়ার বাউন্সারে কুপোকাত হন ইফতেখার। ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক কার্তিকের হাতে। ২২ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮ রান করেন ইফতেখার।

পরের ওভারে ফিরে এসে পাক শিবিরে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন পান্ডিয়া। এবার ফেরান সেট ব্যাটার রিজওয়ানকে। পান্ডিয়ার কিছুটা শর্ট বলে আপারকাট করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু থার্ডম্যানে দাঁড়ানো আবেশ খানের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ৪ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৪ রান করেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। সে ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে ফিরে যান খুশদিল শাহও। ফলে বড় চাপে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।

এরপর আর চাপ থেকে বের হতে পারেনি দলটি। তুলে নিতে পারেনি স্লগ ওভারের সুবিধাও। নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে তারা। তবে শেষ দিকে শাহনাওয়াজ দাহানি ও হারিস রউফের ব্যাটে দেড়শ ছুঁইছুঁই রান করতে পারে পাকিস্তান। ৬ বলে ২টি ছক্কায় ১৬ রানের ক্যামিও খেলেন শাহনাওয়াজ। ৭ বলে ২টি চারে ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন রউফ।

ভারতের পক্ষে ৪ ওভার বল করে ২৬ রানের খরচায় নেন ৪টি উইকেট নেন ভুবনেশ্বর। ৫ রানের বিনিময়ে ৩টি শিকার পান্ডিয়ার। ২টি উইকেট পান আর্শদিপ। 

Comments