বোলিং ও ব্যাটিংয়ের বিপরীতমুখী অবস্থানে শান্তরও বিপরীতমুখী প্রত্যাশা
চার ম্যাচে তিন জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। বিস্ময় জাগানিয়া হলেও সত্যি, এর আগে কখনোই এক আসরে তিনটি ম্যাচ জিততে পারেনি তারা। ব্যাটিংয়ে নিদারুণ ব্যর্থতা সত্ত্বেও গ্রুপ পর্বের বাধা পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়েছে বোলিংয়ে উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের জন্য।
সোমবার 'ডি' গ্রুপের শেষ ম্যাচে কিংস্টাউনে নেপালকে ২১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষকে তারা বেঁধে ফেলে স্রেফ ৮৫ রানেই। ফলে শঙ্কা উড়িয়ে সুপার এইটে খেলা নিশ্চিত করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন দল। তার আগে মঞ্চস্থ হয়েছে সেই পুরনো চিত্রনাট্য। ব্যাটারদের ভোগান্তির পর বোলাররা কাড়েন নজর।
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটিং ও বোলিংয়ের অবস্থান দুই বিপরীত মেরুতে। ম্যাচশেষে শান্ত বিপরীতমুখী প্রত্যাশা জানান এই দুই বিভাগ নিয়ে— এক বিভাগের পারফরম্যান্সের বর্তমান ধারা যেন চলতে থাকে, আরেক বিভাগের ক্ষেত্রে যেন ছেদ ঘটে। তবে তার মন্তব্যের উদ্দেশ্য অভিন্ন, 'আমরা যেভাবে এই রাউন্ডে খেলেছি সেটা নিয়ে খুব খুশি। বোলিংয়ে যেমন পারফরম্যান্স হচ্ছে, তা বজায় থাকবে আশা করি। তবে ব্যাটিংয়ে এমন পারফরম্যান্স চলতে থাকুক তা চাই না। আশা করি, পরের রাউন্ডে আমাদের ব্যাটিং পারফরম্যান্স ভালো হবে।'
স্কোরবোর্ডে সংগ্রহ অল্প হলেও তা নিয়েই জেতার আস্থা ছিল বাংলাদেশের দলনেতার, 'আমরা খুব বেশি রান করতে পারছি না। কিন্তু আমরা জানি, এরকম স্কোরও ডিফেন্ড করতে পারব, যদি আমরা শুরুর দিকে উইকেট তুলে নিই। বোলারদের সেই বার্তাই আমরা দিয়েছি। ফিল্ডাররাও মাঠে ভীষণ দুর্দান্ত ছিল।'
অসমান বাউন্স ও টার্নিং উইকেটে লক্ষ্য তাড়ায় নামা নেপালকে শুরুতেই ধসিয়ে দেন ম্যাচসেরা পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ২৬ রানে পড়ে যায় দলটির ৫ উইকেট। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে অবশ্য কিছুটা সময়ের জন্য রোমাঞ্চ ছড়ায় নেপাল। তবে বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসানের নৈপুণ্যে তাদের বাকি ৫ উইকেট বাংলাদেশ তুলে নেয় স্রেফ ৭ রানে।
পেসারদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতে গিয়ে তাদের ধারাবাহিক পরিশ্রমের দিকটি সামনে আনেন শান্ত, 'আমাদের সবকিছু আছে। সব গতিময় বোলার গত দুই-তিন বছর ধরে সত্যিই কঠোর পরিশ্রম করছে। সেকারণেই আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পেরেছি। এই সংস্করণে বোলিং ইউনিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, তারা তাদের ফর্ম ধরে রাখবে।'
নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে টানা জয়ে পাওয়া আত্মবিশ্বাস সুপার এইটে কাজে লাগাতে চান এই বাঁহাতি ব্যাটার, 'টি-টোয়েন্টিতে মোমেন্টাম সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পরবর্তী রাউন্ডের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে।'
সুপার এইটে আগে থেকে নির্ধারিত সিডিং অনুযায়ী গ্রুপ ওয়ানে পড়েছে বাংলাদেশ দল। সেখানে তাদের তিন প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী যথাক্রমে আগামী ২১, ২২ ও ২৫ জুন হবে টাইগারদের ম্যাচ তিনটি।
Comments