সাকিবের সময় আগেই শেষ হয়ে গেছে: শেওয়াগ

ব্যাট হাতে বিবর্ণ সাকিব এ পর্যন্ত ২০২৪ বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে রান করেছেন মোটে ১১। অস্ট্রেলিয়ায় কুড়ি ওভারের গত বৈশ্বিক আসরে এই বাঁহাতি ৫ ম্যাচে রান করেছিলেন ৪৪। এর আগের আসরে ৬ ম্যাচে প্রায় ২১ গড়ে ১১৩ রান পেয়েছিলেন সাকিব।
shakib al hasan and virender sehwag

কদিন আগে সাকিব আল হাসান পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার প্রত্যাশার কথা শুনিয়েছিলেন। বাংলাদেশের এই কিংবদন্তির পা যদি ২০২৬ বিশ্বকাপের মঞ্চে পড়ে, তখন ভারতের বীরেন্দর শেওয়াগ কী বলবেন কে জানে! চলমান বিশ্বকাপের পর তো বটেই, গত বিশ্বকাপের পরই তার অবসর নেওয়া উচিত ছিল, বলেছেন ভারতের সাবেক এই ওপেনার।

ব্যাট হাতে বিবর্ণ সাকিব এ পর্যন্ত ২০২৪ বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে রান করেছেন মোটে ১১। অস্ট্রেলিয়ায় কুড়ি ওভারের গত বৈশ্বিক আসরে এই বাঁহাতি ৫ ম্যাচে রান করেছিলেন ৪৪। এর আগের আসরে ৬ ম্যাচে প্রায় ২১ গড়ে ১১৩ রান পেয়েছিলেন সাকিব। এমন পরিসংখ্যানে ইঙ্গিত দিয়ে শেওয়াগ বলেন, 'আমার তো গত বিশ্বকাপেই মনে হয়েছে, তাকে আর টি-টোয়েন্টিতে খেলানো উচিত নয়। আপনি এত সিনিয়র ক্রিকেটার, অধিনায়কও ছিলেন, এরপর পরিসংখ্যানের এই অবস্থা, নিজেরই তো লজ্জা পাওয়া উচিত। নিজেরই বলা উচিত, আমি এই সংস্করণ থেকে অবসর নিচ্ছি।'

নিজের ক্যারিয়ারে এমন পরস্থিতির উদাহরণ দেখিয়ে শেওয়াগ আরও বলেন, 'আমি দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বিশ্বকাপ, যেটা শ্রীলঙ্কায় হয়েছিল (চতুর্থ বিশ্বকাপ, ২০১২ সালে)। সেসময় যখন ডেল স্টেইন, মরনে মরকেল, আফগানিস্তানে একটা পেসার ছিল, স্বাচ্ছন্দ্যে আমি যখন ওদের মারতে পারছিলাম না। আমি তো নির্বাচকদের বলে দিয়েছিলাম, আমাকে টি-টোয়েন্টিতেই যেন না রাখা হয়, আমি ওয়ানডে ও টেস্ট খেলব বলেছিলাম।'

'দিন শেষে নিজেই তো জানেন, আমার ব্যাটিং ভালো হচ্ছে না, বোলিং ভালো হচ্ছে না, দলের জন্য অবদানই রাখতে পারছি না। খেলে কী হবে? আমার হিসেবে তো ওর (অবসরের) সময় আগেই চলে গিয়েছে।'

শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত ২০১২ বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচে প্রায় ১১২ স্ট্রাইক রেটে ৫৪ রান করেছিলেন শেওয়াগ। এরপর ভারতের জার্সিতে টি-টোয়েন্টিতে দেখা যায়নি তাকে।

সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার আনরিক নরকিয়ার বলে পুল করতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটের হাতে ৩ রানে ধরা পড়েন সাকিব। তার আউটের ধরন মোটেও পছন্দ হয়নি শেওয়াগের, 'তাকে কেন দলে আনা হলো? যদি অভিজ্ঞতার জন্য হয়, তাহলে তা তিনি দেখাননি। এই উইকেটে কিছু সময় থাকো। এমন নয় তো যে তুমি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট কিংবা ম্যাথু হেইডেন যে খাটো লেংথের বল দেখলেই ঘুরে যাবে (পুল খেলতে)। তুমি বাংলাদেশের খেলোয়াড়। সে হিসাবে খেলো, হুক-পুল আপনার শট নয়। আপনার যা শট, সেসব তো খেলো, এবং উইকেটে থাকো অন্তত।'

টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বজুড়ে খেলা সাকিবের অভিজ্ঞতার কমতি নেই। ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার অভিজ্ঞ বলেই তার কাছে প্রত্যাশা থাকে বেশি। কিন্তু অভিজ্ঞতার প্রমাণ রাখতে পারছেন না বলেই সাকিবের অবসর নেওয়া জরুরি মনে হয় সাবেক ভারতীয় ওপেনারের, 'অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে কেন নিয়ে আসা হয়-কারণ, সে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে। দলের পরিবেশ ঠিক রাখে, অভিজ্ঞতা দিয়ে রান করবে, উইকেট নেবে, ডট বল দেবে। এমন কিছু নজরে পড়েনি সাকিবের বেলায় আমার মনে হয় না এই বিশ্বকাপের পর তার খেলা উচিত। কিংবা তাকে খেলানো উচিত।'

অভিজ্ঞদের রেখে ফলাফলে যেহেতু পরিবর্তন আসছে না, তরুণে ভরসা করে হারলেও সমস্যা দেখেন না ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ হাজারের বেশি রান করা শেওয়াগ। তিনি বলেন, 'কঠিন সিদ্ধান্ত নির্বাচকদের নেওয়া উচিত। তরুণদের সুযোগ দিতে হবে। আমার মনে হয়, যদি আপনি ফল না পান, তাহলে তরুণ দল দিয়েই হেরে যান না কেন। তো কী হবে? অন্তত ওদের অভিজ্ঞতা তো হবে। কিছু তো শিখবে, কিছু তো অবদান রাখবে।'

Comments