সুপার ওভারের রোমাঞ্চে নামিবিয়াকে জেতালেন ভিসা

David Wiese

রুবেন ট্রাম্পেলম্যান আর ডেভিড ভিসার তোপে স্রেফ ১০৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলো ওমান। ওই রান নিয়েই তারা জমিয়ে দেয় ম্যাচ। মেহরান খানের দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচ করে ফেলে টাই। তবে সুপার ওভারে আর পেরে উঠেনি তারা। ব্যাটে-বলে দারুণ ঝলক দেখিয়ে দলকে জেতান নামিবিয়ার সেরা তারকা ডেভিড ভিসা।

সোমবার বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে 'বি' গ্রুপের ম্যাচে ওয়ানকে সুপার ওভারে ১১ রানে হারায় নামিবিয়া। মূল ম্যাচে ১০৯ রান তাড়া করতে গিয়ে ১০৯ রানে আটকে যাওয়া আফ্রিকার দল বাজিমাত করে সুপার ওভারের রোমাঞ্চে।

সুপার ওভারে মেহরানকে না দিয়ে বিলাল খানকে বল দেন ওমান অধিনায়ক। নামিবিয়ার হয়ে ব্যাট করতে নামেন ভিসা আর গেরহার্ড এরাসমাস।  বিলালের প্রথম দুই বলে চার-ছয় মারেন ভিসা। তৃতীয় বলে দুই রান নেওয়ার পর চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইক পাওয়া এরাসমাস। নামিবিয়া অধিনায়ক শেষ দুই বলে বের করেন বাউন্ডারি। সুপার ওভারে ২১ রানের চুড়ায় উঠে নামিবিয়া।

বোলিং করতে এসে সুপার ওভারে ১০ রানের বেশি দেননি ভিসা, নেন ১ উইকেট। দারুণ জয়ে পয়েন্ট অর্জন করে নামিবিয়া। 

বোলিংয়ে ২১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নামিবিয়ার জেতার রাস্তা শুরুতে করে দেন ট্রাম্পেলম্যান, ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তাতে প্বার্শভূমিকা ভিসার। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ফ্র্যাইলিঙ্ক ৪৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে রাখেন অবদান। তবে আসল ফেইজে মূল নায়ক ভিসা। ছয়ে নেমে তার ৮ বলে ৯ রানের পর সুপার ওভারে করেন ৪ বলে ১৩।  বোলিংয়ে সুপার ওভারে ২১ রান ডিফেন্ড করতে গিয়ে দেন স্রেফ ১০ রান। অনুমিতভাবেই ম্যাচ সেরা তিনি।  

এই ম্যাচ সুপার ওভারে যাওয়ার আভাস ছিলো না মোটেও। শেষ দুই ওভারে দরকার ছিলো স্রেফ ১৪, শেষ ৬ বলে দরকার ৫ রান। হাতে ৬ উইকেট ক্রিজে তখন থিতু ইয়ান ফ্র্যাইলিঙ্ক। কিন্তু  মেহরানের  প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান সর্বোচ্চ রান (৪৮ বলে ৪৫) করা ফ্র্যাইলিঙ্ক। পরের বল থেকে আসেনি কোন রান। তৃতীয় বলে আরেক উইকেট, জেন গ্রিন স্কুপ করতে গিয়ে হন এলবিডব্লিউ। সহজ হিসাব তখন বেশ কঠিন। একটা সিঙ্গেল বের করতে পারেন মালান ক্রুগার।  ২ বলে ৪ রান চাই। ভিসা স্ট্রাইক পেয়ে পঞ্চম বলে নেন দুই রান। শেষ বলে ২ রান লাগত জিততে। পরাস্ত হন ভিসা, বল গ্লাভসে জমাতে পারেননি কিপারও। এমনকি রান আউটের সহজ সুযোগও হাতছাড়া করেন। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

সহজ রান তাড়ায় দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় নামিবিয়া। মাইকেল ফন লিনগেন বোল্ড হয়ে যান বিলাল খানের বলে। তবে এই ধাক্কা গায়ে লাগেনি। নিকো ডাভিন, ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ককের ব্যাটে অনায়াসে এগুতে থাকে নামিবিয়া। অবশ্য ওমানের ফিল্ডিংও করে তাদের সহায়তা।

৩১ বলে ২৪ করা ডাভিন আকিব ইলিয়াসের বলে ফিরলে ৪২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় আফ্রিকার দল। অধিনায়ক গেরহার্ড এরাসমাস ক্রিজে এসে সড়গড় হতে পারেননি। একবার জীবন পেয়েও আউট হন ১৬ বলে ১৩ করে।

সহজ জেতার রাস্তা থেকে আচমকাই খেই হারায় নামিবিয়া। জেজে স্মিট এসে চাহিদা মেটাতে পারেননি। ১২ বলে ৮ করে মেহরান খানের বলে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। শেষ দুই ওভারে ১৪ রানের প্রয়োজনে নেমে ভিসা। এক ছক্কায় তিনি ৮ বলে ৯ করলেও বাকিরা সঙ্গত করতে না পারায় ম্যাচ শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলো।

ওমান অবশ্য নিজেদের দায়ও দিতে পারে। কঠিন উইকেটে বোলাররা সুযোগ তৈরি করলেও ফিল্ডারদের কাছ থেকে মেলেনি সহায়তা। তিনটা ক্যাচ ছাড়েন তারা।

Ruben Trumpelmann

এর আগে টস জিতে বোলিং বেছে দারুণ শুরু পায় নামিবিয়া। সেটা এনে দেন ট্রাম্পেলম্যান। ইনিংসের প্রথম দুই বলেই দুই উইকেট। কাশ্যপ প্রজাপতি আর আকিব ইলিয়াসকে পর পর তুলে নেন ট্রাম্পেলম্যান। বাঁহাতি পেসারের বলে দুজনেই হন এলবিডব্লিউ। তৃতীয় ওভারে এই পেসার কাবু করেন নাসিম খুশিকেও । ১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে ওমান।

এই জোর ধাক্কা সামাল দিতে চেষ্টা চালান জিসান মাকসুদ। ৪ বাউন্ডারিতে পাওয়ার প্লেতে কিছু রান এনে তিনিও উধাও। এরপর ওমানের ইনিংস এগিয়েছে মূলত খালিদ কাইলের ব্যাটে।

ডানহাতি ব্যাটার আগ্রাসী হতে না পারলেও কিছু রান জড়ো করতে পেরেছেন। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেন আয়ান খান। ৩৯ বলে ৩৪ করা খালিদকে ফেরান ভিসা। শুরুতে দাপুটে বল করা ট্রাম্পেলম্যান ডেথ ওভারে এসেও পান উইকেট। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে তার শিকার ৪ উইকেট।  কোনমতে তিন অঙ্ক পার হয়েই তাই থেমে যায় ওমানিরা। তখন কে ভেবেছিলো ওই রান নিয়েই অমন দারুণ লড়াই করবে তারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এত কম রান ডিফেন্ড করার নজির নেই, এবার হয়েও হয়েও রেকর্ডটা হলো না।

Comments

The Daily Star  | English
ACC finds Nagad corruption evidence

ACC raids Nagad HQ over hiring controversy

"During the drive, the ACC team found initial evidence of irregularities in the recruitment process"

28m ago