ফাইনালে দক্ষতা ও কৌশল দেখাতে মুখিয়ে জিনাত

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার পর এবার নিজের দেশের মাটিতে রিংয়ে নামলেন নিউইয়র্কপ্রবাসী বক্সার জিনাত ফেরদৌস। মঙ্গলবার শুরু হওয়া জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের বক্সিংপ্রেমীদের সামনে প্রথমবারের মতো নিজের দক্ষতা ও কৌশল দেখানোর সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এবং সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নিজের ওজন শ্রেণির ফাইনালে জায়গাও করে নিয়েছেন ৩১ বছর বয়সী এই বক্সার।

২০২৩ সালে হাংজু এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল জিনাতের। তারপর আন্তর্জাতিক মঞ্চে একাধিক টুর্নামেন্টে লড়েছেন। তবে দেশেই এতদিন কোনো প্রতিযোগিতায় নামা হয়নি তার। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটেছে ঢাকার মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে আয়োজিত এবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে।

সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ আছিয়া খাতুনকে অনায়াসে হারিয়ে ৫২ কেজি ওজন শ্রেণির ফাইনালে উঠেছেন জিনাত। আজকের ফাইনালে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আফরা খন্দকার, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারের বড় বোন।

প্রথম ম্যাচ শেষে রোমাঞ্চিত জিনাত বলেন, 'রিংয়ে নামার পর অনেক সমর্থক "জিন্দাবাদ" বলতে শুরু করেন। ধারণা করি তারা মনে করেন আমি বাংলাদেশের পক্ষে লড়ছি, সেই ভালোবাসা অনুভব করেই আমার উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল। রিং এ বসেই আমি মজা পেলাম।'

'দুটি বছর ধরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের হয়ে লড়ার পর প্রথমবার দেশে গিয়ে খেলতে পেরে দারুণ আন্তরিক অনুভূতি হচ্ছে। নিজের ভূমিতে, সমর্থকদের সামনে খেলার যে "ফিল-গুড" ফ্যাক্টর, সেটা সত্যিই অনন্য,' যোগ করেন জিনাত।

প্রতিপক্ষ নিয়ে জিনাতের পর্যবেক্ষণ, 'প্রতিটি বক্সারের আলাদা স্টাইল আছে, স্টাইলই ফাইট গড়ে তোলে। আছিয়া কিছুটা ভিন্ন লেগেছে, প্রতিরক্ষামূলক কৌশল আলোড়ন তুলেছিল। যদি সে আরও টেকনিক্যাল হতো, লড়াই হয়তো অন্যরকম হতো, কিন্তু আমি কখনোই তাকে খাট করে দেখছি না। জয় তো জয়ই।'

ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা জানাতে গিয়ে বলেন, 'ফাইনাল লড়াই উপভোগ করতে চাই। উত্তেজিত, কৌশল আর দক্ষতা উভয়ই সবাইকে দেখাতে চাই।'

জিনাতের বক্সিং শুরু ২০২১ সালে, স্বামীর অনুপ্রেরণায় ২৭ বছর বয়সে। তারপর সাতটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে জিতেছেন পাঁচটি পদক। বর্তমানে গুগলে কর্মরত এই বক্সার দেশকে আন্তর্জাতিক আসরে সোনা এনে দিতে চান।

'সাত টুর্নামেন্টে পাঁচটি পদক—এবার লক্ষ্য, প্রতিটি প্রতিযোগিতায় পদক জিতবো। সামনে সাউথ এশিয়ান গেমসে মঞ্চে নামার সময় স্বর্ণপদক জয়ী প্রথম বাংলাদেশি বক্সার হতে চাই, মেয়ে–ছেলে উভয় বিভাগেই,' বলেন জিনাত।

জিন্নাতের পৈতৃক বাড়ি নবাবগঞ্জে আর মায়ের বাড়ি পাবনায়। তবে পরিবারের সঙ্গে নিউইয়র্কে চলে যান ১৯৮৭ সালেই। সেখানেই সপ্তাহে ছয় দিন অনুশীলন করেন, চার দিন দৌড়, পাঁচ দিন বক্সিং, তিন দিন স্ট্রেংথ ট্রেনিং।

বাংলাদেশে বক্সিংয়ের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে আশাবাদী জিন্নাত বলেন, 'ভবিষ্যতে অনেক কিছুই উন্নত করা সম্ভব। তবে এটা ভালো শুরু হয়েছে, অনেক তরুণ বক্সার এখন জড়িত হচ্ছে। আমেরিকায় জিমগুলো এসি, অনেক যন্ত্রপাতি ও কোচ থাকে। স্পন্সর থাকলে এখানেও পরিবেশ উন্নয়ন সম্ভব।'

Comments

The Daily Star  | English

BB keeps policy rate unchanged 

BB said the 10 percent policy rate would remain in place for the July-December period

1h ago