জোতার জন্য ক্লাব বিশ্বকাপ জিততে চান, জানালেন চেলসির পর্তুগিজ তারকা

মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সদ্য প্রয়াত দিয়াগো জোতা কেবল সতীর্থ ছিলেন না, চেলসির উইঙ্গার পেদ্রো নেতোর কাছে ছিলেন ঘনিষ্ঠ স্বজন,ভীষণ কাছের বন্ধু। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার জীবনের বহু স্মৃতি। জাতীয় দল ও ক্লাব ফুটবলে একসঙ্গে খেলে জমা হওয়া সেইসব রঙিন স্মৃতি এখন যেন বেদনার নাম। তবে বন্ধুর প্রয়াণে জীবনের চলার গতি থামিয়ে নয়, বরং পথ চলতে চলতেই তাকে স্মরণ করতে চান নিজের মতন করে। নেতো তাই ক্লাব বিশ্বকাপ জিততে চান জোতার জন্যই।
গত ৩ জুলাই স্পেনে সড়ক দুর্ঘটনায় ভাই আন্দ্রে সিলভাসহ নিহত হন ২৮ বছর বয়েসী লিভারপুলের পর্তুগিজ তারকা জোতা। তার এমন বিদায়ের শোকের ভারে এখনো আক্রান্ত ফুটবল বিশ্ব। জোতার ২০ নম্বর জার্সিত চিরতরে অবসরে পাঠিয়েছে তার ক্লাব লিভারপুল। বন্ধু, সতীর্থরাও জোতাকে স্মরণ করতে নিচ্ছেন নানান উদ্যোগ।
রোববার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাতে পিএসজির বিপক্ষে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে নামবে চেলসি। তার আগে চেলসির ওয়েবসাইটে জোতার জন্য জিততে চাওয়ার কথা জানান নেতো, 'যখন আমি রোববার মাঠে নামব, এটা জেনে রাখুন যে আমি দিয়াগো জোতার জন্য এই প্রতিযোগিতা জিততে চাই।'
'ও সবসময় আমার সঙ্গে থাকবে। ওকে সবসময় স্মরণ করা হবে। আমার ভাবনায় এখনও ও আছে, ওর ভাই আন্দ্রে সিলভা এবং তাদের পরিবারও আছে। এটা খুব কঠিন একটা মুহূর্ত।'

বন্ধু প্রয়াণের খবরটা যুক্তরাষ্ট্রে বসেই পেয়েছেন নেতো। তখন ছিলো ক্লাব বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। একবার ভেবেছিলেন খেলবেন না, পরে কোচের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেন জোতাও হয়ত চাইতেন এমন পরিস্থিতিতে তিনি ফুটবলটা খেলুন, 'যখন আমি খবরটা শুনি, আমি কোচের সঙ্গে কথা বলি এবং সবাই খুব সহযোগিতাপরায়ণ ছিল। পালমেইরাসের বিপক্ষে আমাদের খেলা ছিল এবং আমার না খেলার কোনো মানেই হয়নি। দিয়াগোর যে ব্যক্তিত্ব ছিল, আরও কিছু যা সবসময় আমার সঙ্গে থাকবে, আমার মনে হয় ও চেয়েছিল আমরা খেলি।'
দুজনেই পর্তুগালের। জাতীয় দলে খেলার সুবাদে সম্পর্ক এমনিতেই ছিলো নিবিড়। তবে নেতো এবং জোতোর সম্পর্ক শুধু জাতীয়তার গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছিল। ২০১৯-২০ মৌসুমে তারা উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সে একসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ মৌসুম কাটিয়েছেন। সেই বছর উলভসের পর্তুগিজ গ্রপের মধ্যে ছিলেন রুবেন নেভেস, জোয়াও মৌতিনহো, রুবেন ভিনাগ্রে, রুই প্যাট্রিসিও এবং প্রয়াত জোতা, মাঠের ভেতরে ও বাইরে একটি দৃঢ় বন্ধন তৈরি করেছিলেন তারা। সেই গল্প জানালেন নেতো, 'দিয়াগো আমাদের পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের দলের অংশ ছিল (উলভসে) – আমরা বেশ কয়েকজন ছিলাম! রুবেন নেভেস, জোয়াও মৌতিনহো, রুবেন ভিনাগ্রে, রুই প্যাট্রিসিও, আমি এবং দিয়াগো। আমরা খুব ঘনিষ্ঠ ছিলাম এবং মাঠের বাইরে অনেক সময় কাটাতাম।'
সেই বন্ধুদের দলের সবাই সবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে আছে, শুধু নেই জোতা। তবে তাকে হৃদয়ে ধারণ করে রাখতে চান তারা, 'আমরা এখনও যোগাযোগে আছি, আর আমার যে স্মৃতিগুলো আছে, তা বাকি জীবন আমার সঙ্গে থাকবে। এজন্যই দিয়াগোকে ছাড়া থাকাটা এখন এত কঠিন।'
'ও ছিল একজন যোদ্ধা, এমন একজন যে সবসময় আপনার জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত থাকত। তবুও ওর মুখে সবসময় একটা বড় হাসি থাকত এবং ওর হাসি... এটা এমন একটা জিনিস যা আমি সবসময় মনে রাখব।'
রোববার বাংলাদেশ সময় দিবাগত ১টায় দুরন্ত ছন্দে থাকা পিএসজির মুখোমুখি হবে নেতোর চেলসি।
Comments