কেন জোতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যাননি রোনালদো?

লিভারপুল ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোতা ও তার ছোট ভাই আন্দ্রে সিলভার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর অনুপস্থিতি ঘিরে পর্তুগালে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। তবে তাতে বেজায় খেপেছেন রোনালদোর বোন কাতিয়া আভেইর। সামাজিকমাধ্যমে বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
গন্ডোমারে আয়োজিত সেই শেষকৃত্যে আল-নাসর তারকা উপস্থিত না থাকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, টেলিভিশন এবং বিশ্লেষকদের কাছ থেকে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। অনেকেই বলেছেন, অন্তত জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে রোনালদোর উপস্থিত থাকা উচিত ছিল।
তবে রোনালদোর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে তার এই সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তারা জানান, ২০০৫ সালে নিজের বাবা জোসে দিনিস আভেইরোর মৃত্যু পরবর্তী ট্রমার কারণে রোনালদো বহু বছর ধরেই কোনো শেষকৃত্যে অংশ নেন না। একই সঙ্গে, তার উপস্থিতি যেন মূল শোকানুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু না হয়ে দাঁড়ায়, সেটাও তিনি নিশ্চিত করতে চান।
পর্তুগিজ সংবাদমাধ্যম রেকর্ড জানিয়েছে, মিডিয়ার ফোকাস এবং জনসমাগমের কারণে শোকাবহ পরিবেশ বিঘ্নিত হবে এই চিন্তা থেকে ইচ্ছাকৃতভাবেই এই অনুষ্ঠানে যাননি রোনালদো। শোক নয়, যেন তার উপস্থিতি নিয়ে আলোচনাই প্রধান বিষয় হয়ে না দাঁড়ায়, সেই বিবেচনাতেই নিজেকে আড়ালে রাখেন তিনি।
তবে রোনালদোর এই অনুপস্থিতিকে ঘিরে যে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে, তার কড়া জবাব দিয়েছেন তার বোন কাতিয়া আভেইর। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, 'আমাদের সবারই পরিবার আছে। এটা লজ্জাজনক, একেবারেই দৃষ্টিকটুভাবে টেলিভিশন, বিশ্লেষক এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা অনুপস্থিতিকে বারবার সামনে আনা হচ্ছে, অথচ একই সময় দুই ভাইকে হারানো এক বিধ্বস্ত পরিবারকে সম্মান দেখানোর নাম নেই। এটা দেখে আমি লজ্জিত।'
'শোক, পরিবার আর প্রকৃত সহানুভূতির মানে তখনই বোঝা যায়, যখন কেউ তা নিজের জীবনে অনুভব করে। আমার বাবার মৃত্যুর সময় শুধু শোকই নয়, আমাদের সামলাতে হয়েছিল অসংখ্য ক্যামেরা আর কৌতূহলী জনতার ভিড়, যেখানেই যেতাম,' যোগ করেন কাতিয়া।
তবে শেষকৃত্যে সরাসরি উপস্থিত না থাকলেও সামাজিক মাধ্যমে আবেগঘন বার্তা দিয়ে রোনালদো লিখেছেন, 'এটা কোনোভাবেই বিশ্বাস করার মতো নয়। এই তো সেদিনই আমরা জাতীয় দলে একসাথে ছিলাম, সেদিনই তো তোমার বিয়ে হলো। তোমার পরিবার, স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা। আমি তাদের জন্য পৃথিবীর সমস্ত শক্তি কামনা করি। আমি জানি, তুমি সবসময় তাদের সঙ্গেই থাকবে। শান্তিতে বিশ্রাম নাও, দিয়োগো ও আন্দ্রে। আমরা সবাই তোমাদের খুব মিস করব।'
তবে পর্তুগাল জাতীয় দলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের মধ্যে ব্রুনো ফার্নান্দেজ, বার্নার্দো সিলভা, রুবেন দিয়াস, রুবেন নেভেস ছিলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত। লিভারপুলের সাবেক সতীর্থ ভার্জিল ফন ডাইকও ছিলেন সেখানে। রুবেন নেভেস তো ম্যাচ খেলে এসেই কফিন বহনের দায়িত্ব নেন, যা আরও বেশি আবেগঘন করে তোলে বিদায়ের মুহূর্তটি।
Comments